১ মার্চ ২০২১, সোমবার, ১:৩৫

রাজধানীতে মশা বেড়েছে চারগুণ

তোফাজ্জল হোসাইন কামাল : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস জানিয়েছেন আগামী দু‘সপ্তাহ পর মশা আরও বেশি নিয়ন্ত্রণে আসবে। তাঁর দাবি, মশা মারার কীটনাশক পরিবর্তন করা হচ্ছে। দু‘সপ্তাহ পর থেকে নতুন কীটনাশক ব্যবহার করা হবে। গত বুধবার রাজধানীর টিটিপাড়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মাঠ পরিদর্শনের সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের মশার উৎপাত-উপদ্রব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দক্ষিণের মেয়র এসব কথা বলেন। মেয়রের এ বক্তব্যের পর কেটে গেছে ৫দিন। মেয়রের এ বক্তব্যের আগেও মশা ছিল, এখনও আছে। বরং মশার উৎপাতের তীব্রতা বেড়েছে।

আর উত্তর সিটি কর্পোরেশন(ডিএনসিসি) গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশেষ মশক নিধন অভিযান শুরু করে, যা গতকাল রোবববারই শেষ হয়েছে। সংস্থাটি জানায়,২১ ফেব্রুয়ারি ও শুক্রবার ব্যতীত মোট সাত দিন এই বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। এই সাত দিনের বিশেষ অভিযানে ৪৪ হাজার ৯৬৮টি সড়ক, নর্দমা, জলাশয়, স্থাপনা ইত্যাদি পরিদর্শন করা হয়। এর মধ্যে ২১০টিতে মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং ৩০ হাজার ১২৯টিতে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। মশার লার্ভা ও বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া এবং অন্যান্য অপরাধে ৮৯টি মামলায় মোট ১০ লাখ ৮২ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

রাজধানীর মশা নিয়ে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে কর্তৃপক্ষের এমন বক্তব্য ও তথ্যই জানান দিচ্ছে রাজধানীবাসী মশার কবলে।
ঢাকায় গত বছরের এই সময়ের তুলনায় বর্তমানে মশার ঘনত্ব বেড়েছে চার গুণ। আর মশা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয়া না হলে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত মশার ঘনত্ব বেড়ে চরমে পৌঁছাবে। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এমন তথ্য জানানো হয়েছে। গবেষণাটি পরিচালনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, প্রতি মাসেই যাতে মশার ঘনত্ব কেমন হচ্ছে তা তুলনা করার জন্য এই গবেষণাটি পরিচালনা করছেন তিনি। এর অংশ হিসেবে জানুয়ারির শেষের দিকে তিনি দেখতে পান যে, মশার ঘনত্ব অন্য সময়ে যা থাকে তার চেয়ে চারগুণ বেশি বেড়েছে। "গত বছরের এপ্রিল থেকে শুরু করা হলে জানুয়ারিতে অন্যান্য মাসের তুলনায় চারগুণ মশার ঘনত্ব পেয়েছি, বিশেষ করে লার্ভার ডেনসিটি।"

মশার ঘনত্ব কেমন বাড়ছে সেটা জানতে ঢাকার উত্তরা, খিলগাও, শনির-আখড়া, শাঁখারিবাজার, মোহাম্মদপুর ও পরীবাগসহ ছয়টি এলাকার নমুনা নিয়ে গবেষণা চলছে। ড. বাশার বলেন,"ছয়টা জায়গাতে গড় ঘনত্ব প্রতি ডিপে (মশার ঘনত্ব বের করার পরিমাপক) আমরা মশা পেয়েছি ৬০টিরও বেশি। যেখানে আমরা অন্যান্য সময় পাই ১৫-২০টি।"

মশা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সিটি করপোরেশনের অবহেলা ও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসকেই দায়ী করছেন কীটতত্ববিদরা। তারা বলছেন, বছরজুড়ে যেখানে মশা নিধন পরিচালনা করার কথা সেখানে ডেঙ্গু কমতে থাকার পর দুই সিটি করপোরেশনে কোনও কাজই হয়নি। মশার ওষুধ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন খোদ কাউন্সিলররাই।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এডিস মশার উপদ্রব না থাকলেও গত কয়েক মাস ধরে রাজধানীতে মারাত্মক হারে বেড়েছে কিউল্যক্স মশা। চিকুনগুনিয়া ও ম্যালেরিয়াসহ মশাবাহিত রোগ ছড়াতে যারা বেশ ভালো ভূমিকা রাখে।

সম্প্রতি মশা বেড়ে যাওয়ায় সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমের ওপর সন্দেহ বাড়ছে নাগরিকদের। তাদের দাবি, যে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে তা কোনও কাজ করে না। মশার ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে কাউন্সিলররাও নগর ভবনকে জানিয়েছেন।

এদিকে মশা নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বিভিন্ন প্রোগ্রাম পরিচালনা করলেও দক্ষিণ সিটিতে তা একেবারেই দেখা যাচ্ছে না। উপরন্তু সংস্থাটি তার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মশক নিধন কর্মীর সংখ্যা কমিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কথাও বলতে রাজি নয় সংস্থাটির স্বাস্থ্য বিভাগ।
নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিসেম্বর থেকে মার্চ কিউলেক্স মশার প্রজনন মৌসুম। প্রতি বছরের এ সময় মশার আধিক্য দেখা যায়।

মশা নিয়ে অভিযোগ করেছেন খোদ করপোরেশনের কাউন্সিলর ও মশক নিধনে নিয়োজিত ব্যক্তিরাও। ডিএসসিসির ৬৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী মো. ইবরাহীম সংস্থার মেয়রকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি বলেন, তার ওয়ার্ডের জন্য সিটি করপোরেশনের বরাদ্দকৃত মশার ওষুধ প্রতিদিন ছিটানো হচ্ছে। কিন্তু সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

ডিএসসিসির স্বাস্থ্যবিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিন অনেক কাউন্সিলরের ফোন পাই। সবারই অভিযোগ- ওষুধ কাজ করে না। তারা ওষুধ পরীক্ষার দাবি করেছেন।

খিলগাঁওয়ের রিকশাচালক সোলায়মান মিয়া বলেন, আগে গ্যারেজে রিকশা রেখে রিকশাতেই ঘুমিয়ে যেতাম। এখন রাস্তায় দুই মিনিট দাঁড়ালেই মশা জেঁকে ধরে।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ৬ লাখ ৪০ হাজার লিটার অ্যাডাল্টিসাইডিং ওষুধের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে ডিএসসিসি। তাতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ১২ কোটি ৪১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু প্রতিটি কোম্পানি ‘অতিরিক্ত’ দর দেয়ায় তা বারবার রি-টেন্ডার করে ডিএসসিসি। প্রায় চার দফায় টেন্ডার দিয়ে গতবছরের অক্টোবরের দিকে ওষুধ ফরমুলেশনের কাজ করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে সংস্থাটি। এই দীর্ঘ সময় সংস্থার কাছে ওষুধই ছিল না। অলস সময় কাটিয়েছিল মশককর্মীরা।

মশক নিধনে যেখানে প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে ৪০ জন কর্মী রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের, সেখানে ১৩-১৮ কর্মী রয়েছে সিটি করপোরেশনে। এদের মধ্য থেকে আবার ১০-১২ জনকে রেখে বাকিদের সচিব দফতরে বদলি করা হয়েছে। ডেঙ্গুর এই মৌসুমে কর্মী কমানোকে চরম অবহেলা হিসেবে দেখছেন কীটতত্ত্ববিদ ও নাগরিকরা।

জানতে চাইলে দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ‘মশার ওষুধ আমরা পরীক্ষা করি না। কাজটা করে আইইডিসিআর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের প্লান্ট প্রটেকশন। তারা যে ওষুধ সার্টিফায়েড করে আমরা সেটাই ব্যবহার করি।'
উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘মশা বেড়েছে সত্য। বিগত সময়ে আমরা কয়েকবার চিরুনি অভিযান করেছি। এখনও বিশেষ অভিযান চলছে।’

নগরীতে মশার উপদ্রব প্রসঙ্গে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, “মশার ওষুধ বা কীটনাশকের মান যেন ঠিক থাকে সেজন্য আমরা বার বার পরীক্ষা করাই। বেশি দিন ধরে যদি একই কীটনাশক বার বার ব্যবহৃত হয়, তাহলে সেটি মশার জন্য সহনশীল হয়ে যায়। সেজন্য আমরা কীটনাশক পরিবর্তন করে দিচ্ছি। আগামী দুই সপ্তাহ পর থেকে নতুন কীটনাশক ব্যবহার করা হবে। আশা করছি, দুই সপ্তাহ পর থেকে মশা আরও বেশি নিয়ন্ত্রণে আসবে।”

অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “শীত মৌসুমে যেহেতু পানির প্রবাহ কমে যায়, তাই কিউলেক্স মশা বৃদ্ধি পায় এ সময়। আমরা নিয়মিতভাবে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি। আশা করছি, আগামীতে মশা কমে যাবে।”

‘মশা বসুন্ধরার সম্পদ’
বসুন্ধরা এলাকায় থাকেন নিহার সুলতানা। মশার উপদ্রব কেমন এমন প্রশ্নের উত্তরে কিছুটা ঠাট্টা করেই তিনি বলেন, মশাকে বসুন্ধরার সম্পদ বলা হয়। তিনি বলেন, বসুন্ধরা এলাকায় বরাবরই মশার উৎপাত বেশি। তবে ইদানীং মশার পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। "বারান্দায় গেলে আমি ঢোকার আগেই এক ঝাঁক মশা ঢুকে পড়ে। ঘর ভাড়া আমি দিলেও আমার বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকে মশারা। তিনি জানান, ১০-১৫ দিন পর পর মশার ওষুধ দেয়ার আওয়াজ পাওয়া গেলেও বাস্তবে আসলে তা থেকে কোন লাভ হয় না। মশা কমে না।

মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার বাসিন্দা রোমানা আফরোজ। তিনি জানান, সম্প্রতি মশার উপদ্রব প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে তার এলাকায়। মশার ভয়ে বিকেল থেকেই দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়।"সন্ধ্যার পরেও যদি রাতে নয়টা-দশটার দিকে জানালা-দরজা একটু খুলি, মশা সারা ঘরে ভরে যায়।"তিনি জানান, বেশ কয়েক মাস ধরে ওই এলাকায় দেয়া হয়নি মশা মারার কোন ওষুধও।

মশার উপদ্রবের ঠিক একই চিত্রের কথা তুলে ধরেন বাসাবোর কদমতলা এলাকার নাজমা আক্তার। তিনি বলেন, তার বাড়ির পাশে একটি খাল রয়েছে। সেটি পরিষ্কার আর সংস্কারের কাজ চললেও মশা এখনো কমেনি। মশার উপদ্রবের কারণে দিনের বেলাতেও মশারি টাঙিয়ে রাখতে হয়। "কয়েল দিলেও কোন কাজ হচ্ছে না। মশারি লাগায় রাখতে হচ্ছে। আমার বাসায় ছোট বাচ্চা আছে তো, এর জন্যই বেশি প্রবলেম হচ্ছে।"

মশা কেন বেড়েছে?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কবিরুল বাশার বলেন, এই সময়ে যে মশা দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে ৯৯% হচ্ছে কিউলেক্স মশা। যেটি আসলে এডিস মশা নয়। তিনি জানান, এই মশা সাধারণত পঁচা পানিতে হয়। নর্দমা, ড্রেন, ডোবা, বিল ঝিলে পানি এখন পঁচে গেছে। পঁচা পানিতে জন্মায় কিউলেক্স মশা। সেই সাথে বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে এবং পানি বহমান না থাকার কারণে কিউলেক্স মশার জন্মানোর হার বেড়ে যায়।

শীতের শেষে তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে প্রকৃতিতে যে মশার ডিম থাকে সেগুলো একযোগে ফুটে যায়। যার কারণে ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে মশার ঘনত্ব বেড়ে যায়। কিউলেক্স মশার কামড়ে অনেক সময় গোদ রোগ হয়। যেটাকে ফাইলেরিয়াসিস বা এলিফ্যান্টিয়াসিসও বলা হয়। এটি হলে হাত পা ফুলে বড় হয়ে যায়।

কয়েল বা স্প্রে-তেও মশা যাচ্ছে না কেন?
অনেকেই অভিযোগ করে থাকেন যে, মশা মারতে বা তাড়াতে এর আগে কয়েল এবং অ্যারোসল স্প্রে ব্যবহার করা হলে তা কাজ করতো। তবে ইদানীং কয়েল বা স্প্রে ব্যবহার করলেও মশা তাড়ানো যাচ্ছে না।

এমন প্রশ্নের উত্তরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ড. কবিরুল বাশার বলেন, নির্দিষ্ট কোন একটি কীটনাশক একটানা পাঁচ বছরের বেশি ব্যবহার করা হলে মশা সেই কীটনাশকের বিপক্ষে সহনশীলতা তৈরি করে। "এটি একটি জেনেটিক মেকানিজম।" এই প্রক্রিয়ায় ওই কীটনাশকের প্রতি সহনশীল হওয়ায় সেটি আর কাজ করে না। আর এজন্যই মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতি পাঁচ বছর পর পর কীটনাশক পরিবর্তন করা দরকার। তার বিরুদ্ধে মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে কী করতে হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. বাশার বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে র‌্যাপিড অ্যাকশনের মতো পদক্ষেপ নিতে হবে। এর আওতায় সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি জায়গায় যেখানে পানি রয়েছে সেখানে একযোগে লার্ভা নিধনের ওষুধ দেয়া ছিটিয়ে দিতে হবে। সেই সাথে জনগণের সহায়তা বিল-ঝিল-ডোবা-নর্দমা পরিষ্কার করতে হবে। কারণ এসব স্থানেই মশা বেশি জন্মায়। আর প্রাপ্তবয়স্ক মশা দমনে ফগিং করতে হবে। এই অভিযান শুরু করার পর তিন দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। যাতে মশা আবার ডিম পাড়ার সুযোগ না পায়। মশার বংশ বিস্তার রোধে চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে।

এছাড়া স্থায়ীভাবে মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে সারা বছরব্যাপী সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে বলে মনে করেন তিনি। যার মধ্যে প্রথমেই পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা করতে হবে। অর্থাৎ আশপাশের পরিবেশ বা জলাশয় পরিষ্কার ও দূষণমুক্ত রাখতে হবে।

দ্বিতীয়টি হচ্ছে জৈবিক নিয়ন্ত্রণ। এক্ষেত্রে যেসব প্রাণী প্রাকৃতিকগতভাবেই মশা খেয়ে থাকে সেগুলো যেমন গাপ্পি ফিস, ব্যাং, ড্রাগন ফ্লাই-এগুলো ব্যবহার করতে হবে। এগুলোকে প্রকৃতিতে ছাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

তৃতীয়টি হচ্ছে কীটনাশক। দুই ধরণের কীটনাশক রয়েছে যাদের মধ্যে এক ধরণের কীটনাশক লার্ভা ধ্বংস করে এবং অন্যটি পূর্ণ বয়স্ক মশা মেরে ফেলতে ব্যবহার করা হয়।

আর চতুর্থটি হচ্ছে, মশা নিধন কর্মযজ্ঞে জনগণকে সম্পৃক্ত করা। শুধু কোন একটি কর্তৃপক্ষ বা সিটি কর্পোরেশনের একার পদক্ষেপে মশা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি। এর জন্য জনগণের সচেতনতা এবং অংশগ্রহণ দরকার।

‘সাঁড়াশি অভিযান ’
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান বলেন, তাদের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে দুটি জরিপ করা হয়েছে যেখানে আসলে মশা বেড়ে যাওয়ার চিত্রটি ধরা পড়েনি। তবে তার পরও মশা নিয়ন্ত্রণে সম্ভাব্য সব ধরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এরইমধ্যে কিউলেক্স মশা দমনে ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশেষ সাঁড়াশি অভিযান শুরু করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এই অভিযান চলে গতকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই অভিযানের পর মশা কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি। নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানায় এই সংস্থাটি।

https://dailysangram.com/post/445239