২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, শনিবার, ৯:২৮

চালে স্বস্তি নেই পেঁয়াজ মুরগির দাম বাড়তি

নিত্যপণ্যের বাজারে সব সময় অস্থিরতা লেগেই থাকছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চালের দাম বেড়েই চলছে। চালের দামে এখনো স্বস্তি আসেনি। নতুন করে গত এক সপ্তাহে চালের দাম আরও বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে নাজিরশাইল ও মিনিকেট দুই ধরনের চিকন চালের দামই বেড়েছে। যে চালের দাম ছিল ৬৪ টাকা কেজি, গতকাল সেই চাল ৬৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় চিকন চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২ টাকা। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, করলা এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির। তবে ডিম ও সবজির দাম কিছুটা কমতির দিকে। অপরদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে বৃদ্ধি পাওয়া ভোজ্যতেল, গরু, খাসির গোশতসহ অন্যান্য পণ্যের দাম।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে যে চালের দাম ছিল ৫৮ টাকা কেজি, গতকাল সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হলে তবেই চালের দাম কমবে। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র হিসাবে গত বছরের এই সময়ে যে চাল ৫০ টাকা কেজিতে পাওয়া যেত এখন সেই চালের কেজি ৬০ টাকা। টিসিবি’র তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে চিকন চালের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে মাঝারি চালের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ এবং মোটা চালের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মোটা চালের দাম এখন ৪৮-৫০ টাকা কেজি। মাঝারি ধরনের চালের দাম ৫৮-৬০ টাকা কেজি এবং চিকন চালের দাম প্রতিকেজি ৬৫-৬৬ টাকা। এদিকে শুধু চাল নয়, গোশতের দামও রয়েছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রেতাদের ভোগাচ্ছে ব্রয়লার মুরগির দামও। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর এক মাসের ব্যবধানে বাজারভেদে বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

রাজধানীর কয়েকটি বাজারের তথ্য বলছে, খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকার মধ্যে। আর মাসখানেক আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১২৫-১৩০ টাকা।

গতকাল রাজধানীর কাঁচা বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, শালগম বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, গাজর ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, বেগুন ২০ থেকে ৩০ টাকায়, করলা ৮০ টাকায়, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, পাঁকা টমেটো ২০ টাকায়, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, ফুলকপি ২০ থেকে ২৫ টাকায়, বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। মিষ্টি কুমরার কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, আলু বিক্রি হচ্ছে ১৮ টাকা কেজি, পেঁয়াজের দাম পাঁচ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজি দরে। হালিতে পাঁচ টাকা কমে কলা বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। খিরা ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, শসা ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভেন্ডি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। মটরশুঁটির কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। ১০ টাকা দাম কমে লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। এছাড়া আদার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, রসুনের কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা।

বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকায়। প্রতি কেজি বি আর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়, মিনিকেট ৬৫ টাকায়, নাজির ৬৫ থেকে ৬৮ টাকায়, স্বর্ণা চাল ৪৬ থেকে ৪৭ টাকায়, পোলাওয়ের চাল ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। খোলা ভোজ্যতেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়।

পাঁচ টাকা দাম কমে মুরগির এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন ১৫০ টাকা। ২০ টাকা কমে দেশি মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। পাকিস্তানি মুরগির ডিমের ডজন ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজিতে ৫০ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে সোনালি (কক) মুরগি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। তবে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির গোশত, মসলাসহ অন্যান্য পণ্যের দাম। বাজারে প্রতি কেজি খাসির গোশত ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, বকরির গোশত ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, গরুর গোশত ৫৫০ টাকায়, মহিষের গোশত ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়, মাগুর মাছ ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, মৃগেল ১১০ থেকে ১৫০ টাকায়, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়, ইলিশ প্রতি কেজি (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে হাজার টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, কাতল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকায়, ফোলি মাছ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, পোয়া মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়, পাবদা মাছ ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায়, টেংরা মাছ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, টাটকিনি মাছ ১০০ টাকায়, তেলাপিয়া ১৪০ টাকায়, সিলভার কার্প ১০০ থেকে ১৪০ টাকায়, দেশি কৈ মাছ ১৫০ থেকে ৭০০ টাকা, কাঁচকি ও মলা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, আইড় মাছ ৫০০ টাকায়, রিডা মাছ ২২০ টাকায় ও কোরাল ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়, গুড়া বেলে ১২০ টাকায়, রূপ চাঁদা মাছ কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

https://dailysangram.com/post/445059