২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, সোমবার, ১:১২

বায়ুদূষণের প্রধান কারণ নির্মাণ সামগ্রী ও ঢাকা শহরের চারপাশের ইটভাটা

মুহাম্মাদ আখতারুজ্জামান : বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় খারাপ অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। চলতি মাসের প্রায় প্রত্যেক দিনই এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) ঢাকার স্কোর ছিল ২০২, যার অর্থ হচ্ছে এ শহরের বাতাসের মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর।’ একিউআই মান ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়, যার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে নগরবাসী। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। বিশ্বব্যাংক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হিসেবে শহরের চারপাশে অবস্থিত ইটভাটাকে চিহ্নিত করেছে। এ ছাড়া নির্মাণ সামগ্রী, ফিটনেসবিহীন যানবাহন থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া ও বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশকে প্রতিনিয়ত দূষিত করছে।

প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়। জনবহুল ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বাতাস নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। মূলত নির্মাণ কাজের নিয়ন্ত্রণহীন ধুলা, যানবাহনের ধোঁয়া, ইটভাটা প্রভৃতি কারণে রাজধানীতে দূষণের মাত্রা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশ্বব্যাংক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হিসেবে এ শহরের চারপাশে অবস্থিত ইটভাটাকে চিহ্নিত করেছে।

ঢাকার বায়ুর মান গতকাল রোববার সকাল থেকে অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় রয়েছে। বায়ুর মান পর্যালোচনাকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের তথ্যে এই চিত্র উঠে এসেছে। এয়ার ভিজ্যুয়ালের তথ্য অনুযায়ী, রোববার আটটার দিকে ঢাকায় বায়ুর মানের সূচক ছিল ২১৮। সকাল ৬টার দিকে তা ছিল ২২০। আর গত শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে এই সূচক ছিল ২৫১। এয়ার ভিজ্যুয়ালের সূচকে বায়ুর মান ৫০ থাকলে তা স্বাস্থ্যকর বলে ধরা হয়। এই সূচকে ১৫১ থেকে ২০০ অস্বাস্থ্যকর হিসেবে গণ্য। ২০১ থেকে ৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর। আর ৩০০-এর বেশি হলে তা বিপজ্জনক। ৩০১ থেকে ৫০০ বা তারও বেশি হলে বাতাসের মান ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হয়। এ অবস্থায় নগরবাসী স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ জরুরি অবস্থার মুখোমুখি হতে পারে। বায়ুর মান গবেষকেরা বলছেন, তাপমাত্রা কমে গেলে বায়ুর মান খারাপ হয়। বিশেষ করে ভোরে বা রাতের দিকে বাতাসে দূষিত বস্তুকণার পরিমাণ বেড়ে যায়। ঢাকার বায়ুদূষণের উৎস অবশ্য সব সময় একই থাকে। তবে বায়ুদূষণের তারতম্য কমবেশি হয় বাতাসে বায়ুর চাপ, প্রবাহ ও তাপমাত্রার ভিত্তিতে। বায়ুর চাপ বেশি, অন্যদিকে প্রবাহ ও তাপমাত্রা কম হলে দূষণ বাড়ে।

এ বিষয়ে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) পরিচালক অধ্যাপক আহম্দ কামরুজ্জামান মজুমদার জানান, ঢাকার বায়ুদূষণ কোনোভাবেই আমরা এড়াতে পারছি না। তার প্রধান কারণ বায়ুদূষণের উৎসগুলো কখনোই পোক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ বা হস্তক্ষেপে টেকসই উদ্যোগ নেওয়া হয় না। বরং বায়ুদূষণের আবহাওয়াজনিত কারণের ওপর দোষ চাপানো হয়। উৎসকে নিয়ন্ত্রণ করলেই বায়ুদূষণ কমে যাবে।

গবেষকেরা বলছেন, ঢাকার বায়ুর অবস্থা খারাপ। গত শনিবার রাতে বায়ুর মান ৩০০-এর বেশি উঠে যায় বেশ কয়েকবার। বায়ুতে ক্ষুদ্র কণার পরিমাণ বেশি ছিল। এগুলো দ্রুত বায়ুস্তরের ওপরে ওঠে। গতকাল ঢাকার বাতাসে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার বিস্তৃত একটি ধুলার স্তর ছিল। এটি রাতেও সরেনি। ফলে বায়ুর মান খারাপ হয়। মাত্রাতিরিক্ত মানুষের বসবাসের নগরী ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বাতাসে দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। বর্ষাকালে কিছুটা উন্নতি হতে দেখা গেলেও গ্রীষ্ম ও শীতকালে শহরটিতে বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়।

গত বছরের নভেম্বরে টানা ৬ দিন বায়ুর মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়, এ সময়ে আনহেলদি ফর সেনসেটিভ গ্রুপস’ ক্যাটাগরির দূষণ। অর্থাৎ এ দূষণ বা শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিকর। এই মাত্রার দূষণে শিশু, বৃদ্ধ ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগে ভোগা ব্যক্তিদের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বলা হয়, বিশেষ করে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগে ভোগা ব্যক্তিরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। বৃদ্ধ, শিশু, শ্বাস-প্রশ্বাসে রোগে ভোগা ব্যক্তিসহ সবাইকে বাড়ির বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানী ঢাকায় এমনিতেই বায়ুদূষণের মাত্রা বেশি; তদুপরি শীতকালে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বায়ুদূষণ আরও বেশি হয়। বায়ুদূষণের কারণে আমরা কতটা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছি তা হয়তো অনেকে সেভাবে ভেবে দেখি না। অথচ বাস্তবতা হল, বিপজ্জনক মাত্রায় বায়ুদূষণের কারণে মানুষ নানারকম রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, এমনকি ফুসফুস ক্যানসারসহ বিভিন্ন ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এ ছাড়া নিঃশ্বাসের সঙ্গে ক্ষতিকর ধাতব পদার্থ শরীরে প্রবেশ করায় স্নায়ুজনিত অসুখ, মস্তিস্কের রোগ ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে। আরও উদ্বেগজনক হল, বায়ুদূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শিশুরা। আমাদের জন্য আরও একটি খারাপ তথ্য রয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীর দূষিত বায়ুর শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান প্রথমদিকে।
বায়ুতে যেসব ক্ষতিকর উপাদান আছে, তার মধ্যে মানবদেহের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর উপাদান হচ্ছে পিএম ২.৫। বর্তমানে রাজধানী ঢাকার বায়ুতে এর মাত্রা বেড়েই চলেছে। ফলে এ শহর সাধারণ মানুষের বসবাসের জন্য সত্যিই কঠিন হয়ে পড়ছে। এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে দেশে বছরে ১ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়।

সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকার বাতাসে দূষণ বৃদ্ধি পায় অন্তত চার গুণ। করোনা আমাদের একদিক থেকে কিছুটা উপকার করেছে। আগে বায়ুদূষণ থেকে রক্ষার জন্য কেউ সেভাবে মাস্ক ব্যবহার করত না। করোনা সংক্রমণ রোধে এখন অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছে।
বায়ুদূষণের জন্য কোনো নির্দিষ্ট একটি কারণ দায়ী নয়। ঢাকার বাতাসে ভারি ধাতুর উপস্থিতির অন্যতম প্রধান কারণ ঢাকার আশপাশে অপরিকল্পিত ইটের ভাটাগুলো। জনবসতির কাছাকাছি ইটভাটা না থাকার আইন থাকলেও বাস্তবতা হল তা মানা হচ্ছে না। বর্তমানে ঢাকার চারপাশে হাজার খানেক ইটভাটা রয়েছে। এক জরিপে প্রকাশ, ঢাকার বাতাসে অসহনীয় মাত্রায় ধাতুর উপস্থিতির জন্য অপরিকল্পিত ইটের ভাটা ৫৮ শতাংশ দায়ী। এ ছাড়া রয়েছে আরও কিছু কারণ। এর একটি হল শহরজুড়ে প্রায় সারা বছর কারণে-অকারণে খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণকাজ।

সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা ও সমন্বয়হীনতাই এ জন্য বহুলাংশে দায়ী। এ ছাড়া ফিটনেসবিহীন যানবাহন থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া ও বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশকে প্রতিনিয়ত দূষিত করছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানবসৃষ্ট এসব সমস্যা থেকে উত্তরণে সর্বাগ্রে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োগ ও সচেতনতা। রাজধানীর বাতাসকে বিষমুক্ত করতে আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব নির্মাণ ও স্থাপনাসহ অন্যান্য বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। যেহেতু বায়ুদূষণের জন্য প্রধানত মানুষ দায়ী, তাই এর প্রতিকারও রয়েছে মানুষের হাতেই। সঠিক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিলে সহজেই বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

গত জানুয়ারি মাসে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৮ জানুয়ারি বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় রাজধানীতে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক ওই আবেদন করে এইচআরপিবি।

সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ এবং দূষণ কার্যক্রম রোধে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলার অবৈধ ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া রাজধানীর রাস্তা ও ফুটপাতে ধুলাবালি, ময়লা ও বর্জ্য অপসারণ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত বলেছেন, পরিবেশসচিবের নেতৃত্বে কমিটিতে দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বি আরটিএ), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানিসহ (ডেসকো) সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং প্রয়োজন হলে একজন বিশেষজ্ঞ রাখা যাবে।

এ বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, রাজধানী ঢাকায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বায়ুদূষণের মাত্রা। অসহনীয় মাত্রার এ দূষণের ফলে বাড়ছে বাসিন্দাদের রোগবালাই। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং পরিবেশ রক্ষায় সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। মূলত নির্মাণ কাজ থেকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়ানো ধুলা এবং গাড়ি ও ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে রাজধানীর বায়ুদূষণের মাত্রা গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছেছে। পরিবেশমন্ত্রীও বিষয়টি স্বীকার করেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বায়ুদূষণকে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সংকট হিসেবে দেখা উচিত।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ৫৮ ভাগ বায়ুদূষণ হয় ইটভাটার জন্য। বর্তমানে (প্রচলিত) ইটভাটা বন্ধের জন্য পরিকল্পনা ও আইন পাস করা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব ইট বানানোর জন্য কাজ করছি। তিনি জানান, ভাটায় ইট পুড়ানো ২০২৫ সালের মধ্যে বন্ধ এবং সরকারি প্রকল্পের আওতায় ভবন নির্মাণে ঢালাই ইট ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। মন্ত্রী বলেন, সব ইটভাটায় আপাতত পোড়া ইটের সাথে ১০ শতাংশ ব্লক বা ঢালাই ইট তৈরির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ১০০ ভাগ ব্লক ইট তৈরি করতে হবে। ধীরে ধীরে বেসরকারি প্রকল্পেও এ ধরনের ইটের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে।

তিনি জানান, দেশে বায়ুদূষণের উৎস নিয়ে গত বছরের মার্চে একটি গবেষণা প্রকাশ করে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্ব ব্যাংক। তাতে দেখা যায় যে বায়ুদূষণের প্রধান তিনটি উৎস হচ্ছে ইটভাটা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া ও নির্মাণ কাজ। নির্মাণ কাজের সামগ্রী ঢেকে না রাখায় ধুলার কণা রাজধানীর বায়ুদূষণ সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে শাহাব উদ্দিন এ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সব সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রাজধানী ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে ১৩ জানুয়ারি ৯ দফা নির্দেশনা দেয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক এমএ মতিন বলেন, ঢাকায় উন্নয়নমূলক কাজের খোঁড়াখুঁড়ি, ভবন নির্মাণ, ঢাকার আশপাশের ইটভাটা, ঢাকার শিল্প কারখানা ও গাড়ির কালো ধোঁয়ার ফলে বেশি বায়ুদূষণ হচ্ছে। এটি রোধে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না। খোঁড়াখুঁড়ির ধুলাবালি গাড়ির মাধ্যমে বেশি উড়ছে। অনিয়ন্ত্রিত অতিরিক্ত গাড়ির ফলে বেশি বায়ুদূষণ হচ্ছে। বিদেশে কোনো উন্নয়নমূলক বা ভবন নির্মাণের কাজ করলে ঢেকে রাখে। তাতে বায়ুদূষণ কম হয়। সেই সাথে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে কমিয়ে আনলে দূষণ কমবে। ঢাকার শিল্প কারখানা সরানো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো পরিবেশবান্ধব করতে হবে। তার মতে, সরকার চাইলে বা আইন প্রয়োগ করলে বায়ুদূষণ রোধ সম্ভব। না হলে এটি আরও বাড়বে।

https://dailysangram.com/post/444577