সরকার ভোজ্যতেলের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার দু’দিন পরও দাম কমেনি, কমেনি চালের দামও। বরং চিকন চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার থেকে তোলা ছবি -সংগ্রাম
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, শনিবার, ১২:২৫

কমছেনা চাল-তেলের দাম

একের পর এক নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই যাচ্ছে। তেল নিয়ে এখনো চলছে তেলেসমাতি। কোন অবস্থাতেই সয়াবিন তেলের দাম কমছে না। সরকারের বেঁধে দেয়া দামও কোন কাজে আসছে না। সেই সাথে চালের দামও কমার কোন সম্ভাবনা নেই। অপরদিকে নতুন করে বেড়েছে সব ধরনের মুরগির দাম। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, চিকন সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। সয়াবিন তেলের দামও গত সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে লিটারে ২ টাকা করে। শুধু তাই নয়, সরকার ভোজ্যতেলের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার দু’দিন পার হয়ে গেলেও বাজারে এর কোনও প্রভাব দেখা যায়নি।

গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। আর এক মাসে বেড়েছে ৩০ টাকা। মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত এক মাসে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে অন্তত ৩০ টাকা। এক মাস আগে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১২০ টাকা কেজি। বর্তমানে সেই মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকা কেজিতে। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র হিসেবে গত এক মাসে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১১ শতাংশ। সোনালিকা জাতের মুরগির দাম উঠেছে কেজিপ্রতি ২৬০ টাকায়। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম প্রতি ডজন ৯০ টাকা।

গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে সরু বা চিকন চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১-২ টাকা। গত সপ্তাহে যে চাল ৬২ টাকা ছিল, শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকা দরে। সরবরাহ জনিত কারণে সরু বা চিকন চালের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।

একইভাবে অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে ভোজ্য তেলের দাম। তেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে। গত এক মাস ধরে পণ্যটির দাম বেড়েই চলেছে। টিসিবি বলছে, গত এক বছরে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। এর মধ্যে খোলা পামওয়েলের দাম বেড়েছে ৪২ শতাংশ। আর খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। পামওয়েল সুপারের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। আর ৫ লিটার বোতলের সয়াবিনের দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ এবং এক লিটার বোতলের দাম বেড়েছে ২৮ শতাংশ।

গত মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশ বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভায় খুচরা বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম ১৩৫ টাকা, খোলা সয়াবিন ১১৫ টাকা ও পাম সুপার ১০৪ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বোতলজাত সয়াবিনের পাঁচ লিটারের এক বোতলের দাম ধরা হয় ৬৩০ টাকা।
টিসিবি’র হিসাবে, খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার এখন ১১৬-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাম তেল বিক্রি হয় ১০৫-১০৭ টাকা লিটার।
রাজধানীর কাঁচাবাজারে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মতো টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এছাড়া মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা, বেগুনের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, গাজরের কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ফুলকপি-বাঁধাকপি ও লাউয়ের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের মতো ফুলকপি-বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস।

এছাড়া পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের পাশাপাশি বেগুন, শিম, গাজর, শালগম, লাল শাক, পালন শাক, লাউ শাকসহ অন্যান্য সবজি গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ এখন ২৬-৩২ টাকা। বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা। দাম অপরিবর্তীত রয়েছে ডিম, গরু ও খাসির গোশতে। বাজারে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়, হাঁসের ডিম ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, দেশি মুরগির ডিমের ডজন ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আগের মতো এ সপ্তাহেও গরুর গোশত ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর খাসির গোশত ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে মাছের দামেও তেমন পরিবর্তন হয়নি। রাজধানীর বাজারগুলোতে আকার ভেদে শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে, রুই ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙাস ৯০ থেকে ১৫০ টাকা, কাতলা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কৈ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, মলা মাছ ২৩০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

https://dailysangram.com/post/444355