১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, সোমবার, ১১:৪৪

সংঘাত সহিংসতায় শেষ হলো ৫৫ পৌর নির্বাচন

গোলাগুলী, বোমা বিস্ফোরণ, সংঘাত, হতাহত, ভোট বর্জন, ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা, এজেন্ট বের করে দেয়া, ইভিএম নষ্টে ভোট বন্ধ, প্রার্থী আটকসহ নানা অভিযোগের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে চতুর্থ ধাপে ৩৪টি জেলার ৫৫টি পৌরসভার ভোটগ্রহণ। এবারের ভোটে সহিংসতায় ১ জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্নস্থানে সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। এছাড়াও এসব সংঘর্ষ ও অনিয়ম চলাকালে প্রার্থীসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

গতকাল রোববার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে। ভোটগ্রহণ শেষে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গণনা চলছিল। ৫৫টি পৌরসভায় মেয়র পদে লড়েছেন ২১৭ জন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ২ হাজার ৭০ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৬১৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হয়।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে আবদুল মাবুদ (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল মান্নানের ছোট ভাই। বিভিন্ন কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত ঘটনায় আরো ১২ জন আহত হয়। ২ কাউন্সিলর প্রার্থী আটক ও ১ কাউন্সিলর প্রার্থী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নরসিংদী পৌরসভা নির্বাচনে ককটেল বিস্ফোরণ, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, ব্যালট পেপারে সীল মারাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে পৌরসভা এলাকার ৪টি কেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত করে বাকী কেন্দ্রগুলোর নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোট দিতে বাধা, প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়ার অভিযোগে রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভায় বিএনপি’র দলীয় (ধানের শীষের) প্রার্থী আবু নঈম মুহম্মাদ শামসুর রহমান ওরফে মিন্টু ভোট বর্জন করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ ও সহিংসতার সংবাদ পাওয়া গেছে।

ইসি সচিব হুমায়ূন কবির বলেন, নরসিংদীর চারটি ভোটকেন্দ্রে কিছু অনিয়মের কারণে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সেখানে ভোট বন্ধ করে দেন। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে একটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেয়া হয়। শরীয়তপুরের ডামুড্যায় দুটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করা হয়। অর্থাৎ সাতটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ হয়। বাকি ৫০৩টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চট্টগ্রামের পটিয়ায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে গোলাগুলীতে একজন নিহত হয়। এ বিষয়ে হুমায়ূন কবীর বলেন, ঠিকই বলেছেন। পটিয়াতে ভোট কেন্দ্রের বাইরে প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে একজন মারা গেছেন। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য দুঃখজনক। এটি ঘটুক আমরা কেউ প্রত্যাশা করি না। প্রার্থীদের মধ্যে যে মারামারি হয়েছে সেটা ভোটকেন্দ্রের বাইরে হয়েছে। এটি কেন্দ্রের ভেতরে ভোটগ্রহণে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলেনি। ভোটগ্রহণ হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া পৌরসভার নির্বাচন গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সংঘর্ষ, হামলা, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পটিয়া একজন নিহত হয়। ১২ জন আহত হয়।

পটিয়া থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে আবদুল মাবুদ (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল মান্নানের ছোট ভাই। বিভিন্ন কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত ঘটনায় আরো ১২ জন আহত হয়। ২ কাউন্সিলর প্রার্থী আটক ও ১ কাউন্সিলর প্রার্থী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোববার দুপুরে পটিয়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গোবিন্দারখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়াও সকালে পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল খালেক মসজিদ থেকে ফজরের নামাজ শেষে শাহ্ আশরাফ আউলিয়ার মাজার জেয়ারত করে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় বলে তার ভাই নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, একদল সন্ত্রাসী তার ভাইকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে পটিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার সকাল থেকে ৮ নং ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর প্রার্থী সরওয়ার কামাল ও আবদুল মান্নানের সমর্থকদের মধ্যে ভোট দেওয়া নেওয়া নিয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুপুর সাড়ে ১২ টা নাগাদ দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও গোলাগুলী শুরু হলে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল মান্নানের ছোট ভাই আব্দুল মাবুদ (৪৫) নিহত হন। এরপর কেন্দ্রের পাশ্বর্বতি আনসার ভিডিপি ক্লাব ও একটি দোকানে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধরা। এ ঘটনায় এ ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর প্রার্থী যথাক্রমে আবদুল মান্নান ও সরোয়ার কামাল রাজিবকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল মান্নানের কন্যা লাভলী আকতার বলেন, আমার চাচা আবদুল মাবুদ ভোট কেন্দ্রে গেলে তাকে ছুরিকাঘাতে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। এ সময় তাকে পটিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিভিন্ন কেন্দ্রে আহতরা হলেন জালাল উদ্দিন (২৫), আশেক (২৪), নান্টু দাশ (২৫), আবদুল খালেক (৪০), মো: ইউনুছ (১৬), আবুল কাশেম (২৫), রাজিব (২১), মো: হাসান (২৩), হাসিনা আকতার(৩৫), ফেরদৌস বেগম (৪৮), মমতাজ বেগম (৩২)। এছাড়াও দুপুর দেড়টায় বাহুলী কেন্দ্রে ও আড়াইটায় পাইকপাড়া কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীদের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।সকাল ৮ টায় পটিয়া পৌরসভা নির্বাচন ১৮ টি কেন্দ্রে একযোগে শুরু হয়। এতে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক পুরুষ ও মহিলা ভোটার লাইন ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।বেলা ২ টায় এ নির্বাচনে জাপার মনোনিত প্রার্থী শামসুল আলম মাষ্টার নির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন এবং পুনঃনির্বাচনের দাবি করেন। এছাড়াও বিএনপি প্রার্থী নুরুল ইসলাম এবং ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থী আলী হোসাইনও নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচনে তারা সমান সুবিধা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ আনলেও শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে ছিলেন।পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গোবিন্দারখীল কেন্দ্রের বাইরে ১ জন নিহত ও বিভিন্ন কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত ঘটনায় কয়েক জন আহত হন।

এদিকে চন্দনাইশ থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, চন্দনাইশ পৌরসভা নির্বাচনে দুই কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।রোববার সকাল ৯টার দিকে গাছবাড়িয়া এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। চন্দনাইশ পৌরসভা নির্বাচনে গাছবাড়িয়ার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী মামুনুল ইসলাম চৌধুরী, মুহাম্মদ সেকান্দার হোছাইন সোহেল, মো. খোরশেদ আলম সবুজ, মো. মোসলেম মিয়া, মো. আমিনুল হুদা চৌধুরী এবং মো. লোকমান হাকিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।এখানকার দুই ভোটকেন্দ্র দখল নিতে মো. খোরশেদ আলম সবুজ ও মো. লোকমান হাকিমের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় দুটি ককটেল বিস্ফোরণ হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, ভোট শুরুর পর দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। পুলিশ যাওয়ার পর তারা সটকে পড়ে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

এদিকে সাতকানিয়ায় নির্বাচনী প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশেক হাসান। রোববার ভোর রাত ৩টার দিকে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল মান্নানের বাড়ি থেকে ফেরার পথে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আশেক হাসানের ভাই আকিব হাসান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কাজ করায় আমার ভাইয়ের ওপর স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় জাবের, আকরাম, পারভেজ, সাহাব উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন জড়িত। জানা গেছে, আশেক হাসানকে প্রথমে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সাতকানিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রোববার সকালে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।পুলিশ বলছে, দুর্বৃত্তরা তার পেটে, পিঠে ও কোমরে ছুরিকাঘাত করেছে। এ বিষয়ে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আশেক হাসান নামে একজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। অভিযোগ করলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

নরসিংদী সংবাদদাতা : চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত নরসিংদী পৌরসভা নির্বাচনে ককটেল বিস্ফোরণ, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, ব্যালট পেপারে সীল মারাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে পৌরসভা এলাকার ৪টি কেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত করে বাকী কেন্দ্রগুলোর নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থগিত কেন্দ্রগুলো হলো ৮ নং ওয়ার্ডের ইউএমসি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর নাগরিয়াকান্দী মহিলা কেন্দ্র, পুরুষ কেন্দ্র ও ইউএমসি পুরাতন কলোনি, ব্রাহ্মনপাড়া অংশ নিয়ে গঠিত পুরুষ ও মহিলাকেন্দ্র এবং ৪ নং ওয়ার্ডের বৌয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। এসকল কেন্দ্র সমূহে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ১৩৭। সকাল ৮টা থেকে ভোটারগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয় এবং তারা সুন্দর পরিবেশে ভোট দেয়া শুরু করে। তবে সকাল সাড়ে ৮টায় আট নং ওয়ার্ডের ইউএমসি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩টি কেন্দ্রে ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরণ, হামলা, ভাংচুর, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও প্রকাশ্যে সীল মারার কারণে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। অপর দিকে ১ নং ওয়ার্ডের বাসাইল কেন্দ্রে সরকারী দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপকভাবে ব্যালট পেপারে প্রকাশ্যে সীল মারার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের লোকজন বিদ্রোহী প্রার্থী মোবাইল প্রতীকের সমর্থকদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়।

মাধবদী পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ধাষের শীষ প্রতীকের আনোয়ার হোসেন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মো: মনির হোসেন মামীম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছেন।

মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা: মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এক সময়ের বিখ্যাত নদী বন্দর ১৯৯৫ সালে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মিরকাদিম পৌরসভা রূপান্তরিত হওয়া এ পৌরসভা অনেক গুরুত্ব বহন করে ৯ টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৩৭৬৫৬ জন এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১৯১০৯ জন মহিলা ভোটার সংখ্যা ১৮৪৬৪ জন ৩য় ধাপে ১৪ই ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচনে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায় প্রতি ওয়ার্ডে ১ জন করে ৯ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। যারা সার্বক্ষণিক কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। পর্যপ্ত পরিমাণ আইন শৃঙ্খলাবাহিনী নিয়োগ দেয়া হয়েছে এছাড়া ১৭ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১০৪ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ২০৮ জন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ নির্বাচনে মোট ৫২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এর মধ্যে মেয়র পদে ৪ জন সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১১ জন কেন্দ্রে ঘুরে দেখা যায় সকাল থেকে দুয়েকটা বুথ ছাড়া ধানের শীষের এজেন্ট দেখা যায়নি। পড়ে বিএনপি প্রর্থী বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে তুলে ভোট বর্জন করেন। প্রাপ্ত ফলাফল নৌকা প্রতীকে আলহাজ্ব আব্দুস সালাম ২০৫৫৯ ভোট পেয়ে বিজয় অর্জন করেন তার নিকটতম প্রতিদন্দি ধানের শীষ প্রতীক মোঃ মিজানুর রহমান পান ৮৬৮

বাগমারা (রাজশাহী) সংবাদদাতা : ভোট দিতে বাধা, প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ডুকতে না দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীর বাগমারারর তাহেরপুর পৌরসভায় বিএনপি’র দলীয় (ধানের শীষের) প্রার্থী আবু নঈম মুহম্মাদ শামসুর রহমান ওরফে মিন্টু ভোট বর্জন করেছেন। চতুর্থধাপ পৌরসভার নির্বাচনে তাহেরপুর পৌরসভায় গতকাল রোববার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকার অভিযোগে তুলে বিএনপি’র দলীয় (ধানের শীষের) প্রার্থী আবু নঈম মুহম্মাদ শামসুর রহমান ওরফে মিন্ট তাহেরপুর বাজারে নিজ বাসভবনে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভোট বর্জন করে পুনরায় সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট গ্রহণের দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আবু নাঈম সামসুর রহমান বলেন, পৌরসভার ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭টি কেন্দ্র থেকে তাঁর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। সাতটি কেন্দ্র দখল করা ছাড়াও নৌকার প্রতীকে প্রকাশ্যে সিল মেরে নেয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এছাড়া নৌকায় সিল মারতে ভোটারদের বাধ্য করা হচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেছেন।

এদিকে দুপুর পর এতা পরে তিনি কেন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগেই বর্জন করা হয়েছে। কিন্তু পরে তা সাংবাদিকদের মাধ্যমে বর্জন ঘোষণা দিয়েছেন। অপরদিকে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা, কেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্ট বের করে দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচনীর দায়িত্বে থাকা কাউকে কোনো অভিযোগ করেছেন কি না এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এখন লিখিত ভাবে জানানো হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী আবু নঈম মোহা: শামসুর রহমান মিন্টু, বিএনপি’র নেতা কায়জার রহমান মোতাসিন বিল্লাহ, আবদুল আলিম প্রমুখ।

যোগাযোগ করা হলে, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, বিএনপি বা অন্য প্রার্থীর পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

তবে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের সমর্থিত (নৌকার) প্রার্থী অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এটাকে হাস্যকর বলে দাবি করেছেন। নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বিএনপির প্রার্থীর ভোট বর্জন ও অভিযোগ হাস্যকর ছাড়া কিছুই নয় বলে দাবি করেন। মিন্টু মিথ্যাভাবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটকে বিতর্কিত করার জন্যই তারা নাটক সাজিয়েছেন। নিজের ভরাডুবি নিশ্চিত জেনেই শেষ সময়ে ভোট বর্জন করলেন বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

https://dailysangram.com/post/443923