১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, সোমবার, ১১:৪৪

কল্যাণ রাষ্ট্র হতে আর কত সময়?

দেখা অদেখা

কোনো রাজনৈতিক দল বা কর্তৃপক্ষ যখন দেশে ক্ষমতা গ্রহণ করে, তখন তাদের ওপর এই প্রজাতন্ত্রকে কল্যাণকর একটি জনপদ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব সাংবিধানিকভাবেই বর্তায়। নানা বিবেচনায় বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি। আমাদের সংবিধানের মূল চেতনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নাগরিকদের পাঁচটি মৌলিক প্রয়োজন পূরণ করা। সেই সার্বজনীন পাঁচটি চাহিদা হলোÑ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য। সরকারের মন্ত্রীরা দায়িত্ব গ্রহণকালে তাদেরকে সংবিধানের এই নির্দেশাবলি সমুন্নত করার শপথ নিতে হয়।

যদি প্রশ্ন করা হয়, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর অতিক্রম করার প্রাক্কালে সংবিধানের এই পবিত্র চেতনার কতটুকু বাস্তবায়ন করা হয়েছে, তবে এ যাবৎকালে যারা বা যেসব দল রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেছে নিঃসন্দেহে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারবেন না। অথচ তারা ক্ষমতায় যাওয়ার ও থাকার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েন। গত ৫০ বছরে রাষ্ট্র কতটুকু অগ্রসর হয়েছে এমন প্রশ্নের যেমন তাদের কাছে কোনো উত্তর নেই পক্ষান্তরে এই দীর্ঘ সময়ে দুর্নীতির কতটা প্রসার ঘটেছে তা নিয়েও কারো পক্ষে বলার কিছু থাকবে না। অথচ এটা সর্বজন স্বীকৃত যে, দেশের কল্যাণ আর দুর্নীতি পরস্পর এতটা সাংঘর্ষিক যে তা নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। যখন যারাই ক্ষমতায় থাকুক না কেন কেউই এই তর্কে জড়াতে কোনোভাবেই রাজি হবেন না। আজ পর্যন্ত কোনো দলের পক্ষেই এই সাংঘর্ষিক অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসার কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি।

কোনো সরকারের দায়িত্ব থেকে সরে আসার সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে ডজন ডজন দুর্নীতির মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলার কতক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য করা হলেও এর বড় অংশই বাস্তবভিত্তিক এবং তাতে বস্তুনিষ্ঠতা রয়েছে। এখনো দুর্নীতির বেশুমার অভিযোগ প্রতিনিয়ত উঠছে। রাজনীতির লক্ষ্য হচ্ছে জনসেবায় নিবেদিত হওয়া, মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করা। আমাদের দুর্ভাগ্য, এটা আজকে কেবলই নীতিবাক্যে পরিণত হয়ে আছে। রাজনীতি এখন মূলত রাজনীতিকদের আখের গোছানোর নিমিত্তমাত্র।

সমাজের গভীরে প্রথিত দুর্নীতির প্রসঙ্গ এখন আর কেবল দেশের ভেতরেই আলোচনায় সীমাবদ্ধ নেই। আন্তর্জাতিকভাবে আমরা একটি শীর্ষ পর্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তকমা পেয়ে গেছি। অতি সম্প্রতি দেশের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, বিশ্বের শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ২০২০ সালের শেষে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম। সর্বনি¤œ থেকে গণনা অনুযায়ী ২০১৯ সালের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থানের দুই ধাপ অবনতি হয়েছে। বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) প্রকাশিত দুর্নীতির ধারণাসূচক (সিপিআই) ২০২০-এ এই তথ্য প্রকাশ হয়েছে। বৃহৎ পর্যায়ে আলোচনা আপাতত মুলতবি রেখে যদি ব্যক্তিবিশেষের কথা বলা হয়, তবে পি কে হালদারের দৃষ্টান্ত থেকে বোঝা যাবে, দুর্নীতি সমাজের কত গভীরে শিকড় গেড়েছে। এখন এ নিয়ে সর্বত্র হইচই পড়ে গেছে বটে। কিন্তু এই দুর্নীতির সূচনা এক দিনে হয়নি। বহু সময় ধরে হাজার হাজার কোটি টাকা সরানো হয়েছে। যে সরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এসব দেখার এবং প্রতিবিধান করার প্রাসঙ্গিকভাবে প্রশ্ন আসে এসব প্রতিষ্ঠান এতকাল কী করেছে? সেই সাথে এমন ধারণা সৃষ্টি হতে পারে যে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিনা কারণে ঘুমিয়ে থাকেননি। কোনো-না-কোনোভাবে এই অপকর্মের সাথে তাদের স্বার্থ জড়িত ছিল। এখন অবশ্য আর জড়িত থাকার বিষয়টি সন্দেহের মধ্যে নেই প্রমাণিত হয়ে পড়েছে। এসব দুর্বৃত্ত এতকাল লোকচক্ষুর আড়ালে থাকলেও এখন তাদের কর্মকাণ্ড সংবাদপত্রে সবিস্তার প্রকাশিত হচ্ছে।

সবার নিশ্চয়ই মনে আছে, কিছুকাল আগে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতা জুয়ার আসর বসিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অথচ এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে বলার মতো তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। দুর্নীতির সাথে ক্ষমতাসীনরা জড়িত না থাকলেও এটা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না যে, তাদের পার্শ্বচররা দুর্নীতিতে ডুবে থাকার পরও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে না। প্রতিদিন খবরের কাগজের পাতায় এমন সব দুর্নীতির কাহিনী প্রকাশিত হচ্ছে যার সাথে তৃণমূল পর্যায়ের ক্ষমতাসীনদের সহচররা জড়িত। এতে অবশ্যই তাদের ভাবমর্যাদা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারের অনেক ভালো কাজকেও এসব কাহিনী ঢেকে ফেলছে। এমন কথা দুর্নীতি দমনে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বলা হয়ে থাকে যে, দুর্নীতির ব্যাপারে তারা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছেন। কিন্তু এসব আশ্বাসের ওপর আস্থা রাখা যায় কিভাবে, যখন দেখা যায় দুর্নীতির কেবল প্রসারই ঘটছে? আর ঘটছে সরকারি সংস্থার সামনেই।

অর্থসংক্রান্ত দুর্নীতির এই হালের পাশাপাশি দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও অনিয়ম-অব্যবস্থা ক্রমেই বেড়ে চলেছে; বিশেষ করে দেশে গণতন্ত্রের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু আজ এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি সব আস্থা হারিয়েছে। গত কিছু দিন থেকে তাদের কার্যক্রম নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের কিছু সদস্য নির্বাচন কমিশনের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। নির্বাচন কমিশনের প্রধান ব্যক্তির বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত হয়ে পড়ার তথ্য-উপাত্ত রাষ্ট্রপতিকে বিশিষ্ট নাগরিকরা অবহিত করেছেন। এটা গোটা দেশের জন্যই লজ্জার ব্যাপার। সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের পর এটাই উদাহরণ হওয়া উচিত ছিল যে, তিনি স্বেচ্ছায় পদ থেকে সরে যাবেন। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া সমীচীন নয়। সরকার তাকে পদচ্যুত করতে পারে না বটে কিন্তু নৈতিকতার প্রশ্নটি এখানে মুখ্য। এই দায় থেকে পাশ কাটানো ঠিক নয়। নির্বাচন কমিশন দেশে গণতন্ত্র শক্তিশালী করার ব্যাপারে ভূমিকা রাখবে এটাই সবার কাম্য। কিন্তু এই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কমিশন চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ। নির্বাচনে এখন যত অনিয়ম ঘটছে তাতে এটাই সাব্যস্ত হয় যে, প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য ব্যক্তি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং যার নৈতিকতার মান একেবারেই শূন্যের কোঠায় তার পক্ষে কোনোভাবেই আদর্শ স্থাপন সম্ভব নয়। তাই দেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হয়ে পড়েছে।

তা ছাড়া উন্নয়নের যে ভাবনা সরকার করছে, তাতে কোভিডসহ আরো বহু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। তার ওপর যদি দুর্নীতি যোগ হয় তবে সেটি হবে মহাদুর্যোগের। বাংলাদেশের এমন সামর্থ্য নেই যে ষোলো কোটি মানুষের এই দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিজস্ব সম্পদ দিয়ে করা যাবে। এ জন্য সামর্থ্যবান উন্নত দেশগুলোর সাহায্য-সহযোগিতা লাভ করতে হবে। কিন্তু দেশে অনিয়ম ও দুর্নীতি যে ধারায় চলছে তার রাশ টানতে না পারলে কোন মুখে অপরের কাছে সাহায্য চাওয়া যাবে। আজকে পৃথিবীর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতির যুগে সবার হাঁড়ির খবর মুহূর্তেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশ যে দুর্নীতির মানদণ্ডে ক্রমাগত পিছিয়ে পড়বে সেটি সর্বত্র রাষ্ট্র হয়ে গেছে। উদানীং আরো এমন কিছু বিষয় ছড়িয়ে পড়েছে, যা বাংলাদেশের অবস্থানকে আরো ভঙ্গুর করে তুলেছে।

কোভিড গোটা বিশ্বকে নানাভাবে বিপদগ্রস্ত করেছে। বিশেষ করে অর্থনীতির ক্ষেত্রে এর প্রতিক্রিয়া এতটা মারাত্মক যে প্রতিটি দেশই তার আঘাতে বিপর্যস্ত। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে কোভিডের আঘাত সব কিছু তছনছ করে দিয়েছে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় এমন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে যে, বাংলাদেশের শতকরা ৪২ শতাংশ মানুষ গরিব হয়ে পড়েছে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে দেশে দারিদ্র্যের হার দ্বিগুণ হয়ে গেছে। যেখানে ২০১৮ দেশে দারিদ্র্যের হার ২১.৬ শতাংশ ছিল। সেই সাথে হতদরিদ্রের সংখ্যাও হয়েছে ব্যাপক। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ দেশের বাইরে থেকে পাঠানো অর্থে সচ্ছল জীবনযাপন করত। তথ্যসূত্রে প্রকাশ, এখন দেশে কোভিডের কারণে ৮২ শতাংশ পরিবার বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাচ্ছে অনেক কম। জাতীয় অর্থনীতিতে এই রেমিট্যান্স বিরাট অবদান রেখে চলছিল। কিন্তু তাতে ধস নেমেছে।
কোভিডের প্রভাবে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ২০২০ সালে শূন্য দশমিক পাঁচ ভাগ হয়েছে বলে জাতিসঙ্ঘ মনে করে। জাতিসঙ্ঘের অর্থনীতি ও সামাজিক বিষয় নিয়ে কাজ করা বিভাগের প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকার এই হার ৭ শতাংশের উপর বলে দাবি করে। এই হার নি¤œ ও ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আমরা বিতর্কে যেতে চাই না। তবে যেসব বিষয়ের পরিমাপ থেকে এই হার নির্ধারণ করা হয় সেগুলোর যে দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় তাতে অবশ্যই সরকারের তথ্যের ওপর আস্থা রাখা কঠিন।

কোভিড যে ক্ষত দেশে রেখে গেছে তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উদ্যোগ হয়তো এই মুহূর্তে শুরু করা সম্ভব হবে না। কেননা এখনো এই মহামারী নানা দেশে বিভিন্ন মাত্রায় বিরাজ করছে। এ দিকে অক্সফামের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতি ধনী দেশগুলোর পক্ষে কোভিডের সৃষ্ট মন্দা থেকে উত্তরণে ৯ মাসের মতো সময় লাগবে। আর অতি দরিদ্র দেশগুলোর এই মন্দা থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগবে ১০ বছরের মতো। বাংলাদেশ অতি ধনী দেশও নয় আবার অতি গরিবও নয়। তাই আমাদের জন্য এই সঙ্কট মোকাবেলা করে পূর্বাবস্থায় ফিরে আসতে আনুমানিক চার পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা যেতে পারে। তবে শর্ত হচ্ছে, এ জন্য দুর্নীতি অনিয়ম অব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তা ছাড়া সুষ্ঠু পরিবেশ-পরিকল্পনা এবং নেতৃত্বের দক্ষতা এ ক্ষেত্রে বড় একটি ফ্যাক্টর। বাংলাদেশের মানুষের পরিশ্রমপ্রিয়তা, দক্ষতা, প্রযুক্তিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে আমাদের পরিকল্পনাবিদ রাজনৈতিক নেতৃত্বের সব ব্যাপারে কর্মকৌশলতা দেখাতে হবে। একটা অত্যন্ত জরুরি বিষয় হলো বাংলাদেশের বিপুল জনশক্তি। তাকে সম্পদে পরিণত করার তেমন কোনো উদ্যোগ কখনোই লক্ষ করা যায়নি। তাই দেশের বিপুল জনশক্তি যাদের হাতে কোনো কাজ নেই তাদের দ্রুত কর্মযজ্ঞে সংযুক্ত করা গেলে জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। এতসব সমস্যার পরও দেশের একটি বিষয় এখনো ইতিবাচক, সেটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। কিন্তু এটাকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য অনেক কিছু ক্ষমতাসীনদের বিবেচনায় নিতে হবে আর দেশে সুশাসনের প্রতিষ্ঠা এবং বর্তমান গণতন্ত্রের ভঙ্গুর দশা থেকে উত্তরণের পদক্ষেপ নিতে হবে। উন্নয়ন ও গণতন্ত্র পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত থাকলে দেশে জবাবদিহিতার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যেমন স্থায়ী হবে তেমনি অনিয়ম-দুর্নীতির অবসান ঘটাতে সহায়ক হবে।

এ দিকে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এমন সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশ এখন আর স্বল্প উন্নত দেশ নয়। এ থেকে উত্তরণ ঘটেছে। দেশের অর্থনীতি, দ্রব্যমূল্য, দারিদ্র্য বৃদ্ধির যেসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে তাতে সরকারি তথ্য নিয়ে উৎফুল্ল হওয়ার কিছু আছে বলে মনে হয় না। সে যাই হোক, এখানে আরো একটি বিষয় উল্লেখ করা খুবই প্রাসঙ্গিক হবে যে, কোভিডের আগে এমন ঢাকঢোল পেটানো হয়েছিল যে, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে অচিরেই বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা হবে। কিন্তু এখন আর এ সম্পর্কে কোনো উচ্চবাচ্য নেই। কোভিডের জন্য হয়তো এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে সব স্বাভাবিক হওয়ার পর আর ৪-৫ বছর সময় লাগবে।

শেষ কথা হচ্ছে উন্নয়ন কোনো একমাত্রিক বিষয় নয়। এর সূচক রয়েছে আর সেটি হচ্ছে সরকারের স্বচ্ছতা, দুর্নীতির অবসান ঘটানো আর দেশে স্থিতিশীলতা তথা উন্নয়নের অনুকূল পরিবেশ ও গণতন্ত্রের সুষ্ঠু বিকাশ। গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটলে দেশে জবাবদিহিতার সৃষ্টি হবে। উন্নয়নে জবাবদিহিতার কোনো বিকল্প নেই।

ndigantababor@gmail.com

https://www.dailynayadiganta.com/post-editorial/562930/