১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১১:১০

ঢাকার চারপাশে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে

অপরিকল্পিতভাবে চলছে জমির ব্যবহার। যেখানে সেখানে হচ্ছে বাড়ি। নির্মাণ করা হচ্ছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার দোকানসহ বিভিন্ন রকমের স্থাপনা। হচ্ছে অপরিকল্পিত নগরায়ন। রাজধানী ঢাকার শহরের চারপাশের এলাকায় অপরিকল্পিত আবাসন প্রকল্প, শিল্পায়ন এবং নগরায়নের ফলে ক্রমেই কমছে কৃষি জমির পরিমাণ। সাথে কমছে খাল, নদী, জলাধারাসহ ছোট বড় অসংখ্য পুকুর-ডোবা। নির্মাণ করা হচ্ছে রাস্তা, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজার ও দোকানসহ বিভিন্ন রকমের স্থাপনা। যার ফলে রাজধানী ঢাকায় জলাবদ্ধতা ও ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ। আগামী ১০ বছর পর ঢাকার আশপাশে কৃষি জমি বা কোনো জলাশয় থাকবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। রাজধানীর গ্রাম হিসেবে এক সময় পরিচিত ছিল ডেমরা কোনাপাড়া, সারুলিয়া, শনিরআখড়া, মাণ্ডা, মুগদা, পূর্ব রাজারবাগ, মিরপুরসহ বেশকিছু এলাকা। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে এখন এসব এলাকায় গড়ে উঠেছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন আবাসিক এলাকা। ফলে ঢাকা হারিয়েছে কৃষি জমি। এদিকে জলাধার, বন, পাহাড় রক্ষায় আইন ও নীতিমালা থাকলেও সরকারের মনিটরিংয়ের অভাবে এর তোয়াক্কা করছেন না কেউ। দ্রুত ভূমি রক্ষায় সমন্বিত নীতিমালা গ্রহণ না করলে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা কেরানীগঞ্জে এক সময় কৃষিপ্রধান অর্থনীতি থাকলেও এখন পুরো এলাকার অর্থনীতি শিল্পপ্রধান হিসেবে পরিণত হয়েছে। এসব এলাকায় গেল ২০ বছরে জমির দাম বেড়েছে ৫০ গুণের বেশি। ঢাকার আশপাশের সবগুলো জেলার ভূমির চিত্র ঠিক একই রকমের। যাত্রাবাড়ী-ডেমরা-আশুলিয়াসহ আশাপাশের এলাকায় রয়েছে বিলাল বিশাল জলাশয়সহ কৃষিজমি। সরেজমিন বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কৃষিজমি বিক্রি হচ্ছে ব্যাপক হারে। দূর দূরান্ত থেকে মাটি দিয়ে নির্বিচারে ভরাট করা হচ্ছে জলাভূমিসহ জমি। দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে জমির চেহারা। অনেক জমি কেনার পর বাউন্ডারি করে রাখা হয়েছে। যেকোন সময় এসব জমি চলে যাবে অন্য খাতে।

এদিকে অপরিকল্পিতভাবে বসতবাড়ি নির্মাণ, কলকারখানা, রাস্তাঘাট, ইটভাটা তৈরিসহ আবাদি জমি নষ্টের দায়ে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে জমি সুরক্ষা আইনের খসড়া তৈরি করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। কৃষিবিদরা বলছেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অপরিকল্পিতভাবে আবাসন, শিল্প কারখানা, রাস্তাঘাট, পুকুর খননসহ নানা কারণে প্রতি বছরই কমছে আবাদি জমির পরিমাণ। ভূমিদস্যুদের কাছে এসব আইন ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা অসহায়! নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্পায়ন জমি কমার মূল কারণ। দ্রুত ভূমি রক্ষায় সমন্বিত নীতিমালা গ্রহণ না করলে সামনে ভয়াবহ বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। আগামী ১০ বছরের মধ্যে বিলুপ্তি পেতে পারে ঢাকার আশেপাশের সব কৃষি জমি। তখন চরম পরিবেশ ও সুষম খাদ্য সঙ্কটেরমুখে পড়বে রাজধানীবাসী।
এদিকে বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চলের নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার রাজধানীর পার্শ্ববর্তী হওয়ায় যত্রতত্র গড়ে উঠছে আবাসন প্রকল্পসহ শিল্পপ্রতিষ্ঠান। প্রকল্পে কৃষি জমি গ্রাস করায় এ এলাকায় দ্রুত কমছে আবাদযোগ্য জমি। নতুন আবাসন এলাকাগুলো আবাসনের উপযোগী করে তোলার জন্য মাটি ভরাট করতে হয়। পরবর্তী সময়ে এ জমিগুলো আর চাষাবাদের যোগ্য থাকে না। সরজমিন দেখা গেছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশের কৃষি জমি শিল্পায়নের মধ্য দিয়ে অকৃষিতে পরিণত হয়েছে। তা ছাড়া ঢাকা-গাজীপুর-নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী-মুন্সীগঞ্জ-মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলোতে দ্রুত কৃষি জমি কমছে।

নগরায়নের কারণে অপরিকল্পিতভাবে ঢাকার চারপাশে গড়ে উঠছে অসংখ্য ইটেরভাটা। রাজধানীর আশপাশে পরিকল্পনাহীনভাবে ইটভাটা গড়ে উঠার বিরূপ প্রভাব পড়েছে পরিবেশের ওপর। প্রভাব পড়ছে কৃষি জমির উপর। পরিবেশ অধিদফতরের হিসেবে দেশে ইটেরভাটা আছে ৪ হাজার ৫১০। আর ঢাকার শহরের চারপাশে আছে ৫শতাধিক। এগুলোয় প্রতিবছর পোড়ানো হয় অন্তত তিন হাজার ২৪০ কোটি ইট। তবে বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হিসেবে দেশে ছোটবড় মিলিয়ে ইটখোলার সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। খোলার প্রতিটিতে তৈরি হয় বছরে ৭৫ লাখ ইট। ইটপ্রতি মাটির পরিমাণ গড়ে তিন কেজি ধরলেও সাড়ে ১৩ কোটি টন মাটি লাগে, যে কারণে বছরে প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমি (দুইফুট গভীর পর্যন্ত মাটি কাটা হলেও) ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হয়।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হয়, দেশে মোট জমির পরিমাণ ১৪ দশমিক চার মিলিয়ন হেক্টর। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে এ জমি ভাগ করলে জনপ্রতি পাবেন ২৪ শতাংশ, চাষযোগ্য জমি পাওয়া যাবে ১৫ শতক। সবচেয়ে আশঙ্কার কথা হলো বছরে বাড়ছে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ। কমছে দুই লাখ একর কৃষিজমি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৯৮৬ সালে আবাদি যোগ্য জমি ছিল ৮১ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর। ২০০০ সালে তা কমে ৭১ লাখ ৯ হাজার হেক্টরে আসে। ২০০৩ সালে ৭০ লাখ ৮৭ হাজার হেক্টরে এসে দাঁড়ায়। গড়ে প্রতিবছর ৪০ হাজার একর আবাদি জমি হারাচ্ছে। এ ছাড়া ৮০ শতাংশ সরকারী খাসজমির ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।

প্রস্তাবিত কৃষি জমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে কৃষি জমিতে আবাসন, শিল্পকারখানা, ইটভাটা বা অন্য কোনো রকম অকৃষি স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। জমি যে ধরনেরই হোক না কেন, তা কৃষি জমি হিসেবেই ব্যবহার করতে হবে। কোনোভাবেই তা ব্যবহারে পরিবর্তন আনা যাবে না। আইনে বিচার ও দণ্ড হিসেবে বলা হয়েছে, আইন লঙ্ঘনকারী বা সহায়তাকারীর অনূর্ধ্ব দুই বছর কারাদণ্ড বা সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থ দণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবে। এ আইনের অধীনে অপরাধ আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও আপসযোগ্য হবে এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা সংশ্লিষ্ট রাজস্ব কর্মকর্তা বা বন ও মৎস্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মামলা করতে পারবেন।

বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে চাষযোগ্য জমি রয়েছে মাত্র ৮০ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর। এর এক-চতুর্থাংশই এখন হুমকির মুখে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে, বছরে বাড়ছে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ। দিনে ২২০ হেক্টরের বেশি কৃষি জমি অকৃষি খাতে যাচ্ছে। বছরে কমছে ৮২ হাজার হেক্টর জমি। যা মোট জমির এক ভাগ। বছরে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে এক হাজার হেক্টর জমি। ৮০ শতাংশ সরকারী খাস জমিতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। নির্মাণ কাজের কারণে বছরে বিলীন হচ্ছে তিন হাজার হেক্টর জমি। গেল ৩৭ বছরে শুধু ঘরবাড়ি নির্মাণ হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার একর জমিতে! গেল পাঁচ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতি ২০১০ এবং কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি জোনিং আইন-২০১০।

মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই) গবেষণা বলছে, বাংলাদেশে কৃষক পরিবারের সংখ্যা ১ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ১৮৩টি। তাদের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগই প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক। প্রতিবেদন অনুযায়ী বিভাগওয়ারি অকৃষি খাতে জমি চলে যাওয়ার প্রবণতা চট্টগ্রাম বিভাগে বেশি। এ বিভাগে প্রতিবছর ১৭ হাজার ৯৬৮ হেক্টর জমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। রাজশাহী বিভাগে ১৫ হাজার ৯৪৫ হেক্টর, ঢাকায় ১৫ হাজার ১৩১ হেক্টর, খুলনায় ১১ হাজার ৯৬ হেক্টর, রংপুরে ৮ হাজার ৭৮১ হেক্টর, বরিশালে ৬ হাজার ৬৬১ হেক্টর জমি প্রতিবছর অকৃষি জমিতে পরিণত হচ্ছে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশে আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ৭৬২ মিলিয়ন হেক্টর। গত ৪০ বছরের এ জমির পরিমাণ কমেছে ১ দশমিক ২৪২ মিলিয়ন হেক্টর। অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও নগরায়নের জন্য কৃষি জমি অকৃষি জমিতে পরিণত হচ্ছে। এভাবে কৃষি জমি কমতে থাকলে দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষের জীবন-জীবিকা চরম হুমকির সম্মুখীন হবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এএএম মাহাবুব-উন-নবী গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের দেশে ভূমি ব্যবহারের সমন্বিত পরিকল্পনা নেই। তাই রাষ্ট্র জমির পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারছে না, বা ব্যর্থ হচ্ছে। এজন্য দায় রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। একটা বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাহলো-দিন দিন জমির পরিমাণ কমছে। আমরা চরম সঙ্কটের দিকে এগিয়ে চলেছি। ভবিষ্যতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্চ হবে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা। তাই আর বসে থাকার সময় নেই। দেশের সব রকমের জমি ব্যবহারে এখনই সমন্বিত পরিকল্পনা বা নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, হাসপাতালসহ বিভিন্ন রকম স্থাপনা অনেকটা অপরিকল্পিতভাবেই করা হচ্ছে। এর ফলে প্রচুর পরিমাণ জমি নষ্ট হচ্ছে। গ্রামে জমি রক্ষার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে বাড়ি নির্মাণ না করে গ্রামগুলোকে ছোট ছোট শহরে পরিণত করতে হবে। বহুতল ভবনে একাধিক পরিবারের আবাসন ব্যবস্থা করা জরুরী। তাহলে কৃষিজমি অকৃষিখাতে চলে যাওয়ার প্রবণতা কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করেন এ নগর বিশেষজ্ঞ।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাতের এক গবেষণায় বলা হয়, ১৯৭২-২০০৯ সাল পর্যন্ত ২৬ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫৬ একর জমি অকৃষি খাতে চলে গেছে। এ খাতে চলে যাওয়া জমির মধ্যে ঘরবাড়ি নির্মাণ হয়েছে ৬৪ হাজার ৪৮৯ একর জমিতে। দোকান নির্মাণ হয়েছে ৬ হাজার ২৬২ একর জমিতে। কলকারখানা নির্মাণ হয়েছে ২২২ একর জমিতে। বিদ্যালয় দুই হাজার ৮২৭ একর, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৪৯৯ একর ও মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে এক হাজার ৯৯৯ একর জমিতে। সরকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের (এসআরডিআই) সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশের কৃষিজমি বিলুপ্তির প্রবণতা শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সাল পরবর্তী ১২ বছরে দেশে প্রতিবছর ৬৮ হাজার ৭৬০ হেক্টর আবাদি জমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে।

বুয়েটের ওয়াটার এ্যান্ড ফ্ল্যাড ম্যানেজমেন্টের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, পলি জমায় নদ-নদীর প্রবাহে সমস্যা হচ্ছে। ফলে প্রতিবছর নদী ভাঙ্গনে এক হাজার হেক্টর ভূমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ঘরছাড়া হচ্ছে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ। এমনটি চলতে থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩৫৭৫ বর্গকিলোমিটার ভূমি নদীগর্ভে বিলীন হবে, যার অর্ধেকেরও বেশি থাকবে কৃষিজমি। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসের (সিইজিআইএস) হিসাব অনুসারে, ২০১০ সালে ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমি ভাঙনের শিকার হয়। ২০০৯ ও ২০০৭ সালে এ সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২ হাজার ১৭৮ ও ২ হাজার ৭৬৬ হেক্টর।

বিশিষ্ট নগরপরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বৃহৎ জনবসতির দেশ হিসেবে সবার আগে বাংলাদেশে ভূমি ব্যবহারের জন্য নীতিমালা থাকা উচিত ছিল। হল্যান্ড, তাইওয়ান, ইসরাইল সব পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পরিকল্পনা অনুযায়ী ভূমির ব্যবহার করা হচ্ছে। সেসব দেশে এক ইঞ্জি জমিও পরিকল্পনার বাইরে ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। দেশে সাড়ে তিন কোটি একর জমির মধ্যে দুই কোটি একরের কিছু বেশি কৃষিজমি রয়েছে। এসব জমি দ্রুত বিভিন্ন খাতে রূপান্তরিত হচ্ছে। প্রথমত কৃষিজমি হ্রাস বন্ধ করতে হবে পাশাপাশি জমি ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ জরুরী বলেও পরামর্শ দেন তিনি।

বিশিষ্ট এ নগরপরিকল্পনাবিদ বলেন, আমাদের দেশে জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতিমালা থাকলে আজকে এসব বিষয়ে কথা উঠত না। কৃষিজমি রক্ষা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আমি মনেকরি জমির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সবার আগে জাতীয় ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা ও নীতিমালা জরুরী। তিনি বলেন, আমাদের দেশে কৃষিজমি হরদম অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। মহাসড়কের পাশে থাকা কৃষিজমিতে গড়ে উঠছে হাটবাজারসহ মিল ফ্যাক্টরি। সে সঙ্গে হোটেল, সিএনজি ও পেট্রোলপাম্পও হচ্ছে কৃষিজমিতে। বাড়ছে বাড়ি নির্মাণের ব্যাপকতা। সার্বিক বিবেচনায় জমির সুষ্ঠু ব্যবহার ও কৃষিজমি রক্ষায় এখনই সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন।

https://dailysangram.com/post/443428