৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, সোমবার, ১১:১১

টিকা পুশ করলেন এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান

ফেসবুকে ছবি ভাইরাল

কুমারখালী উপজেলায় নার্সদের বদলে স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও উপজেলা চেয়ারম্যান টিকা পুশ করায় হইচই পড়ে গেছে। রোববার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রশিক্ষিত নার্স পাশে থাকলেও চারজনের শরীরে করোনাভাইরাসের টিকা পুশ করেন কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নন খান। তাদের টিকা পুশ করার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট কয়েকজন জানান, প্রশিক্ষিত নার্সের বদলে জনপ্রতিনিধিদের টিকা দেওয়ার বিষয় খুব ভয়ানক। সিভিল সার্জন অফিসের কয়েকজন জানান, দক্ষ নার্স ও চিকিৎসক ছাড়া কেউ টিকা পুশ করা ঠিক নয়।

বেলা ১১টার দিকে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্রে সিনিয়র নার্স তাসলিমা আক্তারকে নিজ হাতে করোনা টিকা পুশ করে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সেলিম আলতাফ জর্জ। এরপর তিনজনের শরীরে টিকা পুশ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান খান। এ সময় নার্স ও চিকিৎসকরা তাদের সহায়তা করেন। টিকা দেওয়ার এ ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ৫৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে তাদের টিকা পুশ করতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এটা কোনোভাবেই জনপ্রতিনিধিরা করতে পারেন না। করোনার টিকার জন্য নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারাই টিকা দেবেন। অন্য কারও টিকা দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। এটা হয়ে থাকলে ঠিক হয়নি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যে তিনজনের শরীরে করোনা টিকা পুশ করেছেন তারা হলেন-কুমারখালী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মী মোখলেছুর রহমান ও স্থানীয় সাংবাদিক কেএমআর শাহীন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, ভয় ভয় লাগছিল। অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলাম। পরে শুনেছি উপজেলা চেয়ারম্যান টিকা পুশ করেছেন। চেয়ারম্যান না দিয়ে নার্স দিলেই ভালো হতো। তবে আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ভালো আছি। মখলেছুর রহমান বলেন, জীবনের প্রথম ইঞ্জেকশন নিয়েছি। কে ইঞ্জেকশন দিয়েছেন বুঝতে পারিনি। তবে পরে ভিডিওতে দেখলাম উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জেকশন দিচ্ছেন। তবে আমি সুস্থ আছি, কোনো সমস্যা নেই। সাংবাদিক শাহিন বলেন, আমাকে ইঞ্জেকশন নার্স দিয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান শুধু সিরিঞ্জ ধরে ছিলেন। এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আকুল উদ্দিন বলেন, সিরিঞ্জ হাতে তারা (জনপ্রতিনিধি) ধরে ছিলেন। তারা টিকা পুশ করেননি। ফটো তোলার জন্য ধরেছিলেন। তিনি বলেন, ঘটনার সময় তিনি কক্ষের বাইরে ছিলেন। এ ব্যাপারে বিব্রত বলেও জানান তিনি। তবে এ ঘটনার পর সবখানে সমালোচনা শুরু হয়। জানতে চেয়ে আবদুল মান্নান খানের মোবাইল ফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। অপরদিকে ফোন রিসিভ করেননি এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/391407