২৯ জানুয়ারি ২০২১, শুক্রবার, ১১:০৯

বোতলজাত সয়াবিনের দাম আরো বাড়ল

ভোজ্য তেলের দাম নিয়ে ভোক্তার অস্বস্তি বাড়ছেই। চলতি সপ্তাহে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম আরেক দফা বেড়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দামও আগের সপ্তাহে কিছুটা কমলেও এ সপ্তাহে আবার বেড়েছে। ফলে তেলের বাজার নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন ভোক্তারা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী মার্চের আগে ভোজ্য তেলের দাম কমাতে হলে সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স সুবিধা দিতে হবে। অন্যথায় মার্চ-এপ্রিলে নতুন মৌসুম শুরুর অপেক্ষায় থাকতে হবে। এদিকে আমদানি করে চালের দাম কমানোর যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছিল, তা ভেস্তে যেতে বসেছে। চালের দাম কমছে না। উল্টো বিক্রেতারা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে আরো বাড়তে পারে। এ ছাড়া ডাল, চিনিসহ অন্যান্য পণ্যের দামও কিছুটা বেড়েছে। তবে সবজির দামে এখনো স্বস্তি রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মালিবাগ, মুগদা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা গেট কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা যায়, কম্পনিভেদে বোতলজাত সয়াবিন তেলের মূল্য লিটারে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে। বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের এক লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলে খুচরা মূল্য লেখা রয়েছে ১৩০ টাকা। অবশ্য বিক্রেতারা তা ১২৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। রূপচাদা ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য লেখা ১৩৫ টাকা, ক্রেতাভেদে ১৩০ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ ধরে তাঁরা এই দামের তেল পাচ্ছেন। আগে এক লিটারে দাম পাঁচ টাকা কম ছিল। বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের দামও প্রতি কেজি ১২৪ থেকে ১২৬ টাকা। গত সপ্তাহে কিছুটা কমে ১২০ টাকা পর্যন্ত ছিল। সে হিসাবে বর্তমানে খোলা ও বোতলজাত তেলের দাম প্রায় সমান। পাম সুপার বিক্রি হচ্ছে ১১২ থেকে ১১৪ টাকা কেজি।

চালের দাম কমাতে ১০ লাখ টনের আমদানি অনুমতি দেওয়া হয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে। আমদানির চাল বাজারে মিলছেও কম বেশ। কিন্তু এতে দামে তেমন প্রভাব পড়েনি। বাজারে মিনিকেটের মতো সরু চাল আগের মতোই ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৭০ টাকা কেজি। মোটা চাল স্বর্ণা, পাইজাম, গুটি, চায়না ইরি ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা কেজির দরে।

মালিবাগ বাজারে পণ্য কিনতে আসা আব্দুল্লাহ নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘চাল, ডাল, তেল আমাদের জরুরি নিত্যপণ্য। এগুলোর দাম অস্বাভাবিক বেশি। ফলে বাজারে এলে সবজির স্বস্তি আর থাকছে না। সরকারের কোনো উদ্যোগও দেখছি না এসব বিষয়ে।’

চলতি সপ্তাহে মসুর ডালের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে। মোটা দানার ডাল এখন ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি। ছোট দানার ডালের দাম রাখছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি। চিনি বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দাম ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি।

ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি কম হওয়ায় দেশি পেঁয়াজের দাম স্থির হয়ে আছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। মিয়ানমার ও ভারতীয় আদা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় পাওয়া গেলেও চীনা আদা কিনতে হচ্ছে ১৪০ টাকার ওপরে। রসুনের দাম আগের মতোই ৮০ থেকে ১০০ টাকায় রয়েছে।

তবে সবজিতে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে এখনো। মানিকনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা আলমগীর বলেন, শীতের সরবরাহ এখনো রয়েছে। তাই সব ধরনের সবজিই ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে আছে। আগামী এক-দেড় মাস সবজি নিয়ে তেমন চিন্তা থাকবে না।

বাজারে আলুর কেজি ২০ টাকাতেই স্থির হয়েছে। কাঁচা মরিচ বাজারভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এ ছাড়া টমেটোর দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় উঠেছে।

ফুলকপি ও বাঁধাকপি আকারভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা, শসা ও ক্ষীরাই ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি। এ ছাড়া লাউয়ের দাম আকারভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পিস।

ডিমের দাম চলতি সপ্তাহে কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ১০০ টাকায় ১৩ পিস পাওয়া গেলেও এখন ১৪ থেকে ১৫ পিস পাওয়া যাচ্ছে। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম গত সপ্তাহের মতোই ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা রয়েছে।

গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা। মাছের মধ্যে ইলিশ কিনতে কেজিপ্রতি ব্যয় হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। চিংড়ি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। ছোট চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি।

https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2021/01/29/999762