২২ জানুয়ারি ২০২১, শুক্রবার, ২:২৫

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় ফি নেয়ার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ শিক্ষার্থীদের

আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার অর্থসংক্রান্ত উপকমিটি। এখন নতুন করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি পরীক্ষায় ফি নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভর্তি ফি নেয়ার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। ভর্তিসংক্রান্ত অর্থ উপকমিটির প্রধান অবশ্য বলছেন, ফি নেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও এটা হবে শুধু নামে মাত্র। টাকার অঙ্কে এই ফি হবে খুবই কম।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সমন্বিত বা গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় কোনো প্রকার ফি নেয়া হবে না এমন সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউজিসির একজন সদস্য জানিয়েছিলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার ফি নেয়া হবে না। অর্থাৎ বিনাপয়সায় ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। যেহেতু শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের ভোগান্তি কমাতেই গুচ্ছ পদ্ধেিত পরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে সেখানে কোনো প্রকার ফি কাউকেই দিতে হবে না। কিন্তু সম্প্রতি গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তিসংক্রান্ত অর্থ উপকমিটির সভায় নতুন করে ফি নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সূত্র মতে, গত ১৯ জানুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সভাকক্ষে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য (সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি) গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি কমিটির ‘অর্থ উপকমিটি’র প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ভর্তি ইচ্ছুক সব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই একটি নির্দিষ্ট ফি আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ দিকে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় ফি নেয়ার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। এই প্রতিবেদককে অনেক শিক্ষার্থী জানান, প্রথমে বলা হয়েছিল এই পরীক্ষায় কোনো প্রকার ফি নেয়া হবে না। কিন্তু এখন গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষা নিয়েই দিনে দিনেই নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। একদিকে যেমন সব ক’টি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো গুচ্ছে একীভূত হতে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না তেমনি নতুন করে ফি আদায়ের ঘোষণায়ও ক্ষোভ দানা বাঁধছে। রায়হান নামে এক শিক্ষার্থী নয়া দিগন্তকে জানান, প্রকৃত অর্থে সব ক’টি বিশ্ববিদ্যালয় যদি গুচ্ছ পদ্ধতির একীভূত না হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের কষ্ট বা দুর্ভোগ কমবে না। কেননা দেখা যাবে ভর্তি ইচ্ছুক একজন শিক্ষার্থীকে আগের মতো সারা দেশে দৌড়ানো না লাগলেও একাধিক পরীক্ষায় তাকে অংশ নিতে হলে কমবেশি এখানে সেখানে যেতেই হবে। আর এতে মেয়ে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ আরো বাড়বে।

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার অর্থ বিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ কামালউদ্দীন আহমদ জানান, ভর্তি পরীক্ষার ফি নেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও এটা হবে নামে মাত্র। টাকার অঙ্কে যা খুবই কম পরিমাণের। তিনি আরো জানান, করোনা পরিস্থিতি এবং দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম পরীক্ষার ফি ধার্য করে সাশ্রয়ী খরচে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, শুরুর দিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে ভর্তি পরীক্ষার ফির বিষয়ে একটি মতামত দিয়েছিলাম। যেখানে আমি বলেছিলাম, নতুন কিছু করতে গেলে অনেক কিছুই আমাদের ভাবতে হবে। যেমনÑ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতি বছরই একটি বাজেট ইউজিসি থেকে পেয়ে থাকে। কাজেই গুচ্ছ বা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে সবার মধ্যেই একটি নতুন ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে হলে প্রয়োজনে ভর্তি ফি না নিয়েই এটা করা যায়। তবে এটা ছিল নিতান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত। এখন ভর্তিসংক্রান্ত অর্থ উপকমিটি যদি ফি নির্ধারণ করে দেয় তবে এটা করতে পারে। তবে এই ফি অবশ্যই হতে হবে পরিমাণে কম বা নামে মাত্র ফি।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/557461