১০ জানুয়ারি ২০২১, রবিবার, ১২:৫৭

ঘাটতি পূরণে ঋণ নেয়া হবে ৯৩ হাজার কোটি টাকা

২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকেই ঋণ নেয়া হবে ৯৩ হাজার কোটি টাকা। এটা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৯ হাজার কোটি টাকা বেশি। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে এ খাতে ঋণ নেয়ার লক্ষ্য রয়েছে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাজেট ঘাটতি পূরণে আগামী অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট এক লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা (প্রাক্কলিত নতুন জিডিপি’র ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ) নিট ঋণ নেয়া হবে। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৯৩ হাজার কোটি টাকা (প্রাক্কলিত নতুন জিডিপি’র ২ দশমিক ৬ শতাংশ) নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করার পরও বাকি অর্থ নেয়া হবে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে। এ খাত থেকে ঋণ নেয়ার প্রাথমিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। এর আগের বছরে যা ছিল ২৯ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে তা সংশোধন করে ১১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

এ দিকে আগামী অর্থবছরে বৈদেশিক উৎস থেকে নিট ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৪ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা (প্রাক্কলিত নতুন জিডিপি’র ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ)। প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নিট ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নিট ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। অন্য দিকে বৈদেশিক উৎস থেকে নিট ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৭৬ হাজার চার কোটি টাকা।

জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি, জিডিপি’র ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। আগামী বাজেটে এটি জিডিপি’র ৫ দশমিক ৮ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে। নতুন বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ প্রাক্কলন করা হয়েছে দুই লাখ সাত হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে নতুন বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ১৭ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা বাড়ছে।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে এবার কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখা হবে। এগুলো হচ্ছেÑ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঘাটতি অর্থায়ন যৌক্তিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ রাখা এবং আর্থিক খাতে চলমান সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে অর্জিত দক্ষতার মাধ্যমে সরকারের অন্যান্য কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন। অন্য দিকে বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে সহজ শর্তে ঋণ প্রাপ্তির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে। পাশাপাশি প্রকল্প সহায়তার অর্থ ব্যবহার বাড়ানোর চলমান প্রচেষ্টার ফলে পাইপ-লাইনে থাকা প্রকল্প সহায়তার ব্যবহার বাড়বে বলে মনে করছে অর্থ বিভাগ।

বিগত কয়েক বছরের বাজেট ঘাটতি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ ছিল এক লাখ ৪১ হাজার ২১২ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। মূল বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ ছিল এক লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেটের বিপরীতে ঘাটতির পরিমাণ ছিল এক লাখ ১২ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল তিন লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। ঘাটতি ছিল ৬৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল দুই লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা। সে বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৬৫ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/554766