৯ জানুয়ারি ২০২১, শনিবার, ১:১৮

২০২০ সালে ৪৭৩৫ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৪৩১ জন

গত বছর দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৭৩৫টি। নিহত ৫৪৩১ জন এবং আহত ৭৩৭৯ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৮৭১, শিশু ৬৪৯। ১৩৭৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৪৬৩ জন। দুর্ঘটনায় ১৫১২ জন পথচারী নিহত হয়েছে। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৬৮৩ জন। বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। বছরব্যাপী ১১৯টি নৌদুর্ঘটনায় ২৭২ জন নিহত, ১৩৭ জন আহত এবং নিখোঁজ ৬২ জন। ১০৮টি রেলপথ দুর্ঘটনায় নিহত ২২৮ এবং আহত ৫৪ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনায় আক্রান্ত যানবাহনের সংখ্যা ৭১৬৮টি। (বাস ৭১৩, ট্রাক ৯৭১, কাভার্ডভ্যান ১৬২, পিকআপ ২৩৯, লরি ৫৪, ট্রলি ৮৭, ট্রাক্টর ৯৫, মাইক্রোবাস ১১২, প্রাইভেটকার ১৩৫, এ্যাম্বুলেন্স ১৮, জিপ ৮, মোটরসাইকেল ১৫১২, বাই-সাইকেল ৬৩, থ্রি-হুইলার-(ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-মিশুক-টেম্পো-লেগুনা) ১৪৬৩, নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু-পাখিভ্যান-চান্দের গাড়ি-মাহিন্দ্র-বোরাক ১২৭৮, টমটম, প্যাডেল রিকশা-প্যাডেল রিকশাভ্যান ১৮১, সেনা বাহিনীর ট্রাক ২, র্যাবের জিপ ১, বিজিবি পিকআপ ১, পুলিশের পিকআপ ১, আনসারের জিপ ও পিকআপ ২, তেলবাহী ট্যাঙ্কার ৪, দুধবাহী ট্যাঙ্কার ১, গ্যাসবাহী গাড়ি ২, বিদ্যুতের খুঁটিবাহী লরি ১, কন্টেইনার ট্রাক ১, ষোল চাকার লং ভেহিক্যাল ১, কনস্ট্রাকশন মিকচার মেশিন গাড়ি ১, রোড রোলার ১, ভ্যাম্পার বাস ৪, ড্রাম ট্রাক ৭, হ্যান্ড ট্রাক্টর ২, হ্যান্ড ট্রলি ৩, হ্যালোবাইক ১, লাটাহাম্বার ৪, পাওয়ার টিলার ১৩, ধান মাড়াইয়ের মেশিন গাড়ি ৫, ইট ভাঙার গাড়ি ১টি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে ০.৮৯ শতাংশ, প্রাণহানি বেড়েছে ৪.২২ শতাংশ এবং আহতের মাত্রা বেড়েছে ৩.৮৮ শতাংশ। ২০২০ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ১৫.৮৯ শতাংশ এবং প্রাণহানি বেড়েছে ৫৪.৮১ শতাংশ। পথচারী নিহতের হার কমেছে ২৫.৪০ শতাংশ।

গত বছর করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ২ মাস দেশে গণপরিবহন বন্ধ ছিল, মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রিত ছিলÑ তার পরেও দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ না থাকলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ব্যবধান আরো বেশি হতো বলে আমাদের ধারণা। মহাসড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। দ্রুত গতির যানবাহনের সাথে ছোট ও স্বল্পগতির যানবাহনের সংঘর্ষের কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে। চালকের বেপরোয়া গতি, অদক্ষতা ও শারীরিক অসুস্থতা এ জন্য দায়ী। সড়কে চলার সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা, গান শোনা, বেখেয়ালিভাবে যত্রতত্র রাস্তা পারাপার এবং যানবাহনের বেপরোয়া গতির কারণে ব্যাপক সংখ্যক পথচারী নিহত হয়েছে। পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার ব্যাপক অভাব রয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর উভয়প্রান্ত দুর্ঘটনার হটস্পট হয়ে উঠেছে। দেশের রেলক্রসিংগুলো এখন মরণফাঁদ। দেশব্যাপী ২৪৯৭টি রেলক্রসিংয়ের মধ্যে ১০৮৫টিই অবৈধ ও অরক্ষিত। ৮১ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে গেটকিপার নেই। গত বছর এ সব অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের সাথে সড়ক পরিবহনের সংঘর্ষে অনেকগুলো ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/554574/