৫ জানুয়ারি ২০২১, মঙ্গলবার, ১১:৩৭

করোনার টিকা অনিশ্চিত

রফতানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা

করোনার ভ্যাকসিন বা টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ল বাংলাদেশ। ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটকে আগামী কয়েক মাসের জন্য ভারত সরকার রফতানি বন্ধের নির্দেশ দেয়ায় এই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে তিন কোটি ডোজ করোনার টিকা পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। এ লক্ষ্যে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটের সাথে গত ৫ নভেম্বর সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও বেক্সিমকো ফার্মা। ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন পাবে কি নাÑ এ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলো। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক অবশ্য এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘তাদের সাথে আন্তর্জাতিক চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তিকে অনার (সম্মান) করার একটা বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমরা সেটির ওপর আস্থা রাখি। তবে ফেব্রুয়ারির মধ্যে করোনার টিকা পাওয়া যাবে কি না তার নিশ্চয়তা দিতে পারেননি তিনি। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো: আব্দুল মান্নান জানান, আমাদের সাথে তাদের চুক্তি হয়েছে জি টু জি (সরকারের সাথে সরকারের)। ভারতের নিষেধাজ্ঞাটা কমার্শিয়াল এক্টিভিটিজের ওপর। সুতরাং করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন রফতানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব আমাদের ক্ষেত্রে পড়বে না। আগামী মাসের (ফেব্রুয়ারি) মধ্যেই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। প্রায় একই ধরনের কথা বলেছে ভ্যাকসিন সরবরাহের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা জানিয়েছেন, সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। তিনি বলেন, ‘আশা করছি আমাদের অ্যাগ্রিমেন্টে যেভাবে বলা আছে, সে অনুযায়ী ভ্যাকসিন পাবো।’

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপিসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর হচ্ছেÑ কয়েক মাসের জন্য অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিন রফতানিতে ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা বলেন, কয়েক মাসের জন্য ভ্যাকসিন রফতানির অনুমতি দেবে না ভারত। ভারতীয়রা যাতে যথাযথভাবে ভ্যাকসিন পায় সে জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ দিকে গতকাল সোমবার সিরাম ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াঙ্ক সেন জানান, টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা পুরোপুরি সঠিক নয়। সিরাম ইনস্টিটিউট এখন অন্য দেশে টিকা রফতানির অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, যা পেতে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। তবে রফতানি শুরুর আগেই তারা ভারত সরকারকে ১০ কোটি ডোজ টিকা দিতে সম্মত হয়েছে।

ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে গতকাল সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে জরুরি বৈঠকে বসেন সংশ্লিষ্টরা। বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ বিষয়টি নিয়ে সকাল থেকে কাজ করছি। নিষেধাজ্ঞার কথা জানতে পেরেছি। পুরোপুরি খবর আমরা এখনো অবহিত নই। ইতোমধ্যে বেক্সিমকো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে ভারতে আমাদের মিশনের সাথে আলোচনা করেছে। আমাদের মিশন ভারতের ফরেন মিনিস্ট্রির সাথেও আলোচনা করেছে।’ মন্ত্রী বলেন, তাদের সাথে আন্তর্জাতিক চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তিকে অনার করার একটা বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমরা সেটির ওপর আস্থা রাখি। চুক্তি অনুযায়ী তাদের অর্ধেক টাকা পাঠানো হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন ১২০ মিলিয়ন ডলার তাদের দেয়া হচ্ছে।’

এর আগে মন্ত্রী বলেছিলেন জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমরা সিরামের টিকা পাবো, এখন কবে পাওয়া যেতে পারেÑ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। নিশ্চিত হলে বলতে পারব। এ সমস্যাটি নতুন করে তৈরি হয়েছে। গত রোববার পর্যন্তও আমরা নিশ্চিত ছিলাম টিকা পাবো। গতকাল শুনলাম ভারত সরকার টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।’

‘এককভাবে ভারতের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হওয়ার খেসারত আমরা দিচ্ছি কি না’Ñ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারপরও আমরা বিশ্বাস রাখতে চাই। এ ছাড়াও অন্যান্য দেশের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সাথেও আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। কাজেই ভ্যাকসিন নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।’ ভারতের কাছ থেকে টিকা পাওয়া না গেলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা আছে কি নাÑ এ বিষয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন দেশের সাথে আলোচনা করেছি। সেই বিষয়গুলো তো হাতে আছেই। যেমন চায়নিজ ভ্যাকসিন, রাশিয়ান ভ্যাকসিন, এগুলো আমাদের হাতে আছে। এগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে আছে। এখনো তাদের ট্রায়াল শেষ হয়নি। তাদের ট্রায়াল শেষ হলে আমরা অ্যাগ্রিমেন্টে যাবো।’

এ পর্যায়ে ফোনে কথা বলছিলেন মন্ত্রীর পাশে বসা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো: আব্দুল মান্নান। মন্ত্রীর কথা শেষ হতেই সচিব মন্ত্রীকে ধীরে ধীরে বলেন, স্যার একটা ভালো মেসেজ দেবো? ইন্ডিয়ান হাইকমিশন থেকে সেটি বলেছে। মন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে সচিব বলেন, আপনাদের জন্য একটি সুসংবাদ আছে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

স্বাস্থ্যসেবা সচিব বলেন, ‘আমি এখনই ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারকে ফোন করলাম। তিনি জানিয়েছেন, আমরা যে চুক্তি করেছি, এটা ফিন্যান্সিয়াল কতগুলো ট্রানজেকশন, কিভাবে টাকাটা যাবে, কিভাবে ব্যাংক গ্যারান্টি দেবে! কাজটি হয়েছে জি টু জি বা সরকার টু সরকার। যে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার কথা ভারত সরকার বলেছে শুধু কমার্শিয়াল অ্যাকটিভিটিজের ওপর, আমাদেরগুলোর ওপর নয়। কারণ আমাদেরটা সরকার টু সরকার।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা হয়েছে। তিন কোটি ভ্যাকসিনের কথা কিন্তু উনিও (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, মানে গভর্নমেন্ট জানে। আরেকটি পয়েন্ট, আমরা যখন অ্যাগ্রিমেন্ট করি ভারতের হাইকমিশনার নিজে এখানে উপস্থিত ছিলেন। কাজেই আমাদের বিষয়টি হচ্ছে জি-টু-জি বা সরকার টু সরকার। যে নিষেধাজ্ঞা ভারত সরকার দিয়েছে, সেটি হলো ইন্টারনাল কমার্শিয়াল অ্যাকটিভিটিজ হবে না, এটা বলেছে।’

‘এত দিন সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া নিজের দেশে সরকারের কোনো অনুমোদন পায়নি, গতকাল তারা পেয়েছে। এখন তারা ডব্লিউএইচও’র কাছে আবেদন করবে। ডব্লিউএইচও’র কাছে আবেদন করলে তিন সপ্তাহের মধ্যে অনুমোদন পেয়ে যাবে। যদি ডব্লিউএইচও’র অনুমোদন তারা নিয়ে আসতে পারে তাহলে আমাদের বলা হয়েছিল ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাবো, তাহলে ফেব্রুয়ারি আসতে তো এখনো তিন-চার সপ্তাহ বাকি। কাজেই ডিলে (বিলম্ব) হওয়ার কোনো অবকাশ নেই।’

আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আশঙ্কা করার মতো, দুশ্চিন্তা করার মতো এখনো কিছু হয়নি বলে আমি মনে করছি, স্যারও (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) তাই মনে করছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আজকেই সব ধরনের ফর্মালিটিজ শেষ করেছি। যাদের কাছ থেকে ব্যাংক গ্যারান্টি পেয়েছি তাদের ট্রেনিং দেবো। আজই (গতকাল) অর্থ পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে আশা করছি, স্যার ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন। এটি হয়ে যাবে।’
সচিব বলেন, ‘এ ছাড়া যেকোনো ওষুধ আমদানি, বিক্রি, মজুদ ও মানুষের শরীরে প্রয়োগ করতে গেলে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমোদন নিতে হয়। এটিরও অনুমোদন দিয়েছি। তাদের কাছ থেকে একটি চিঠি আসবে, চিঠি পাওয়ার পর অনুমোদন দিয়ে দেয়া হবে।’

ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাহলে কিভাবে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবেÑ জানতে চাইলে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা বলেন, ‘ওদের (সিরাম ইনস্টিটিউট) কাছে ইতোমধ্যে ৭০টি দেশ থেকে ভ্যাকসিনের জন্য রিকোয়েস্ট রয়েছে। কিন্তু তারা দেশকে প্রায়োরিটি দিতে চাচ্ছে। অনেক দেশের অনেক বেশি অর্ডার রয়েছে। কোভ্যাক্সেরও রয়েছে অর্ডার। কিন্তু সে তুলনায় আমাদের অর্ডার অনেক কম। তারা বানাবে দুই বিলিয়নের মতো। আমাদের দরকার ৩০ মিলিয়ন। সে হিসাবে এটা তাদের কাছে কিছুই না।’

এ দিকে ভারতের ভ্যাকসিন রফতানির নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্যাভির মতো সংস্থাগুলোও আগামী মার্চ-এপ্রিলের আগে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবে না। সিরাম ইনস্টিটিউট বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সংস্থা বলে এই কোম্পানির কাছ থেকেই জাতিসঙ্ঘের উল্লেখিত সংস্থা করোনার ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি করে রেখেছে।

এ দিকে গতকাল বিকেলে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের এমডি নাজমুল হাসান পাপন এমপি সংবাদ সম্মেলনে সিরামের সাথে সম্পাদিত চুক্তিটিকে বাণিজ্যিক চুক্তি বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, এটা সরকারের সাথে সরকারের (জি টু জি) চুক্তি নয়। নাজমুল হাসান জানিয়েছেন, যে নিউজটার কথা বলা হচ্ছে তা আমিও শুনেছি। আমরা এখনো এটি নিয়ে এত চিন্তিত নই। কারণ আমাদের চুক্তি হয়ে গেছে। চুক্তিতে পরিষ্কার বলা আছে, আমাদের দেশে ভ্যাকসিনের অনুমোদন হয়ে গেলে এরপর এক মাসের মধ্যে সিরাম ভ্যাকসিন দেবে। এটা একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি।’ তিনি জানান, ‘এ বিষয়টা নিয়ে গতকালও সিরামের সাথে কথা হয়েছে। তারা এমন কোনো ইঙ্গিত দেয়নি যে, যাতে মনে হতে পারে আমাদের দেশে ভ্যাকসিন আসতে দেরি হবে। সরকার নিয়ম-কানুন মেনে অনুমোদন দিয়ে দিলে আগামী এক মাসের মধ্যে ভ্যাকসিন চলে আসবে।’ নাজমুল করোনা ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে তাদের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বলেন, ‘ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন পরিবহনের জন্য সাতটি গাড়ি কেনা হয়ে গেছে। এর বাইরে বিশেষ ধরনের কুলবক্স আনা হবে। ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় কোল্ডস্টোরেজ তৈরি করা হয়েছে। তিনি আবারো জোর দিয়ে বলেন, এটা একটি বাণিজ্যিক চুক্তি, সরকারের সাথে সরকারের চুক্তি নয়। আমরা কেবল সরকারকে সহায়তা করতে চেষ্টা করছি।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের বেক্সিমকো ও ভারতের সিরামের মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন আমদানির বিষয়ে চুক্তি হয় নভেম্বরে। তার আগে আগস্টে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশ সফরে আসেন। ওই সফরেই সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পাওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়। ওই সফরের পরই মূলত সিরাম-বেক্সিমকো সমঝোতা গতি পায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তবে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন প্রাপ্তির এ বিষয়টা ভারতের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ে গেলে অন্তত পাঁচ-ছয় মাসের আগে ভ্যাকসিন পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা না-ও থাকতে পারে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কার্যকারিতা কিছুটা কম হলেও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বব্যাপী একধরনের আশাবাদ তৈরি হয়েছে। কারণ এটির দাম কিছুটা কম এবং সরবরাহ করা যায় সহজে। এ টিকা পেতে উন্নয়নশীল দেশগুলো সিরাম ইনস্টিটিউটের ওপর নির্ভর করছিল। সিরামের সক্ষমতা রয়েছে বিপুল টিকা উৎপাদনের। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা এরই মধ্যে পাঁচ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করেছে। আচমকা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞার কারণে সিরাম এখন ভ্যাকসিন রফতানি করতে পারছে না। অথচ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন হলেও কোনো দেশই এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে এরই মধ্যে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তাই ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে অনৈতিক বলছেন বিশ্লেষকরা। এ ছাড়া বাড়ির পাশের বাংলাদেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ না হলে ভারতে করোনা নিয়ন্ত্রণ কতটা সম্ভব হবে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভ্যাকসিন এখন একধরনের মৌলিক প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে। সিরাম ইনস্টিটিউটের সাথে চুক্তির কারণেই বাংলাদেশ অন্য কোনো দেশের সাথে চুক্তি করেনি। এখন এ চুক্তির যদি বরখেলাপ করা হয় তা শুধু হতাশাজনক নয়, অমানবিকও বটে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/553626