২৪ মার্চ ২০১৭, শুক্রবার, ৮:২২

যুক্তরাজ্যজুড়ে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান ॥ বাড়ি বাড়ি তল্লাশি

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হামলার পর গত বুধবার রাত থেকে দেশজুড়ে ব্যাপক অভিযান ও ধরপাকড় শুরু করেছে যুক্তরাজ্য পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট। বিভিন্ন এলাকার বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এরইমধ্যে ছয়টি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার করার কথা নিশ্চিত করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। সন্দেহভাজন ব্যক্তির পূর্ব ইতিহাস খতিয়ে দেখতে আনুষ্ঠানিক তদন্তও চলছে। এদিকে গত বুধবারের ঘটনার দায় গতকাল বৃহস্পতিবার স্বীকার করলো আইএস।


এর আগে যুক্তরাজ্যের এক্সপ্রেস পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের বাইরে রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসী হামলা উদযান করছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।


বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, নিহত চারজনের মধ্যে হামলাকারী রয়েছেন। পুলিশের গুলীতে তিনি নিহত হন।
যুক্তরাজ্যের পুলিশ ঘটনাটিকে সন্ত্রাসী হামলা বলে বিবেচনা করছে। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে বিমানবন্দর ও মেট্রো স্টেশনে একযোগে তিনটি সন্ত্রাসী হামলার এক বছর পূর্তির দিনেই লন্ডনে এ ঘটনা ঘটলো। ব্রাসেলসের হামলায় নিহত হয়েছিলেন ৩২ জন।


যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের বাইরের এই সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশ কর্মকর্তা, হামলাকারীসহ চার ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন।


ঘটনাটিকে ‘মুসলিম জঙ্গিবাদ’ সংশ্লিষ্ট হামলা হিসেবে ধারণা করে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন। পুলিশের ধারণা, আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে হামলাকারী একাই এ কাজ করে থাকতে পারেন।


গত বুধবার মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত উপ-কমিশনার মার্ক রাউলি জানান, পার্লামেন্ট ভবনে হামলা চালাতে ওঁৎ পেতে থাকা এক হামলাকারীর ছুরিকাঘাতে ওই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এরপর গত বুধবার বিভিন্ন বাড়িতে বাড়িতে অভিযান শুরু হয়। রাউলি আরও জানান, নিহতদের মধ্যে বিদেশি নাগরিকও রয়েছে। তাদের পরিবারের কাছে খবর পৌঁছে দিতে পররাষ্ট্র দফতর থেকে অন্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানিয়েছেন রাউলি।


কমিশনার রাউলি আরও বলেন, হামলাকারী একাই হামলা চালিয়েছে। সে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ’ ছিল। তবে লন্ডনে বৃহস্পতিবার এ ঘটনার কোনও রেশ থাকবে না বলে উল্লেখ করেছেন রাউলি।


উল্লেখ্য, টেমস নদীর ওপর ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ। এর দক্ষিণ প্রান্ত গিয়ে যুক্ত হয়েছে পার্লামেন্ট এলাকায়। অপর প্রান্তে নানা দর্শনীয় স্থাপনা। বুধবার সেই ওয়েস্টমিনস্টার সেতুর ওপর দিয়ে পার্লামেন্টের দিকে আসার পথে সজোরে গাড়ি চালিয়ে তা পথচারীদের ওপর উঠিয়ে দেন হামলাকারী। সেসময় বেশ কয়েকজন হতাহত হন। পরে গাড়িটি পার্লামেন্টের নিরাপত্তাবেষ্টনীতে গিয়ে আঘাত হানে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, হামলাকারী ৮ ইঞ্চি ছুরি নিয়ে পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন। নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দিলে এক পুলিশ সদস্যের ওপর ছুরিকাঘাত করেন তিনি। তখন পুলিশ হামলাকারীকে গুলি করে তাকে রুখে দেয়। গুলিতে নিহত হয় হামলাকারী।


গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযানের ব্যাপারে কথা বলেন রাউলি। তিনি জানান, লন্ডন, বার্মিংহামসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন এলাকার বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ছয়টি বাড়িতে অভিযান চালানোর খবর নিশ্চিত করেছেন তিনি। তবে আগেরদিন পুলিশের পক্ষ থেকে নিহতের যে সংখ্যা জানানো হয়েছিল তা সংশোধন করে নতুন সংখ্যা জানিয়েছেন রাউলি। তিনি জানান, হামলাকারীসহ নিহতের সংখ্যা ৫ জন নয় বরং ৪ জন। পরে ওই আহত পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন।


এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি রেডিওর এক অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন জানান, ‘কিছু দিক থেকে এ হামলাকে ইসলামী সংন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করে’ তদন্ত চলছে। হামলাকারীর পূর্ব ইতিহাস জানার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ‘রাতভর তারা এগুলো নিয়ে তদন্ত করেছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তির পূর্ব ইতিহাস, কিভাবে তিনি গাড়িটি পেলেন, আগেরদিন কিংবা দুইদিন আগে গাড়িটি কোথায় ছিল, কে কা কারা তাকে সহযোগিতা করেছে কিংবা সহযোগিতা করেনি এগুলো নিয়ে তদন্ত হচ্ছে।’


হামলার সময় ঘটনাস্থলের দৃশ্য কেমন ছিল?


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেখানে ছিল খুবই আতংকজনক এবং বিশৃঙ্খল এক পরিস্থিতি।


রিচার্ড টাইস নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিনি ওয়েস্টমিনস্টার টিউব স্টেশন থেকে বেরিয়ে আসছিলেন পৌনে তিনটার দিকে। তখন পুলিশ তাকে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখেন ব্রিজের ওপর অনেক লোক আহত হয়ে পড়ে আছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। রিচার্ড টাইস জানতে পারেন, ফুটপাথে লোকজনের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেয়া হয়েছিল। ব্রিজের দক্ষিণ দিক থেকে উত্তর প্রান্ত পর্যন্ত এভাবে লোকজনকে চাপা দিতে দিতে গাড়িটি এগিয়েছে।
“আমি গুনে দেখেছি পুরো ব্রিজে আটজন লোক পড়ে ছিল। অন্তত আটজন।”


এ ঘটনায় কারা আহত বা নিহত হয়েছেন?


নিহত পুলিশ অফিসারের নাম কীথ পামার। বয়স ৪৮। তিনি ছিলেন পুলিশের পার্লামেন্টারি এবং ডিপ্লোমেটিক প্রটেকশন কমান্ডের সদস্য। তিনি পনের বছর ধরে পুলিশের চাকরিতে ছিলেন।


নিহত একজন পথচারীর নাম আয়শা ফ্রেড। তিনি ডিএলডি কলেজ, লন্ডনে কাজ করতেন। হামলাকারি ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ দিয়ে যখন গাড়ি তুলে দিয়েছিল লোকজনের ওপর তখন তিনি আহত হন।


নিহত আরেকজনের ৫০ বছর বয়সী একজন পুরুষ। সাতজন আহত মানুষের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। আরো ২৯ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।


আহতদের মধ্যে আছে তিনজন পুলিশ অফিসার। তারা একটি অনুষ্ঠান থেকে পায়ে হেঁটে ফিরছিলেন ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের ওপর দিয়ে।


একদল ফরাসী স্কুল ছাত্রও ওই সময় ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের ওপর ছিলেন। এদের তিনজন আহত হয়েছেন।
ল্যাংকাশায়ারের এজ হিল বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন ছাত্রও এই ঘটনায় আহত হন। আহত হয়েছেন পাঁচজন দক্ষিণ কোরিয় পর্যটক।


হামলাকারী কে? তার পরিচয় কি জানা গেছে?


প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে জানিয়েছেন, হামলাকারীর জন্ম ব্রিটেনেই এবং একবার ব্রিটেনের নিরাপত্তা বাহিনী তার ব্যাপারে তদন্তও করেছে জঙ্গীদের সঙ্গে যোগাযোগের কারণে। তবে পুলিশ এখনো তার নাম প্রকাশ করেননি।


পুলিশ বলছে, তারা হামলাকারী কে, তা জানেন। এখন তারা হামলাকারীর অন্য সহযোগী কারা ছিল তাদের ধরার চেষ্টা করছেন। পুলিশ সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে হামলকারী কে তা জানার চেষ্টা না করার জন্য।


পুলিশ বলছে, হামলাকারী আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ বা ইসলাপন্থীদের সন্ত্রাসবাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল বলে তারা অনুমান করছে।


হামলাকারী কি উদ্দেশ্যে হামলা করেছে, কিভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে এবং তার সহযোগী কারা ছিল, পুলিশের তদন্তে এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।


পুলিশ সদস্যের জীবন বাঁচাতে যা করলেন ব্রিটিশ মন্ত্রী


ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রী টবিয়াস এলউড। লন্ডনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হামলার দিনটি সামনে আনলো তার অন্য পরিচয়। হামলার ঘটনায় দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নিয়ে জাতীয় ‘বীর’-এর মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন তিনি।


বুধবার ওয়েস্টমিনস্টার সেতুর ওপর দিয়ে পার্লামেন্টের দিকে আসার পথে সজোরে গাড়ি চালিয়ে তা পথচারীদের ওপর উঠিয়ে দেন হামলাকারী। এক পর্যায়ে গিয়ে গাড়িটি পার্লামেন্টের নিরাপত্তাবেষ্টনীতে গিয়ে আঘাত হানে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, হামলাকারী ৮ ইঞ্চি ছুরি নিয়ে পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন। নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দিলে এক পুলিশ সদস্যের ওপর উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন তিনি।


ছুরিকাঘাত সেই পুলিশ অফিসারকে নিজের জীবন বিপন্ন করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন মন্ত্রী টবিয়াস এলউড। এ ঘটনার ছবি প্রকাশিত হয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। এতে মানুষ তাকে বীরের মর্যাদা দিতে শুরু করে।


ছবিতে দেখা যাচ্ছে হামলার পরপরই কেইথ পালমারকে বাঁচাতে এগিয়ে যান টবিয়াস এলউড। এই সময় সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও কনজারভেটিভ পার্টির এই সংসদ সদস্যের চোখে মুখে রক্ত ও বিষন্নতার ছাপ লক্ষ্য করা যায়।


অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে পিসি কেইথ পালমারকে বাঁচানো যায়নি। তবে একজন এমপির সর্বশক্তি দিয়ে মানবতার এই অভিপ্রকাশ প্রশংসিত হচ্ছে নানা মহলে। দেশটির গণমাধ্যম মন্ত্রী টবিয়াস এলউডকে হিরো বলে সম্বোধন করছে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে শুশ্রƒষার দেয়ার পাশাপাশি আশপাশ ঘিরে ফেলা পুলিশ সদস্যদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে দেখা যায় মন্ত্রী টবিয়াস এলউডকে।


জীবন বাঁচাতে টেমস নদীতে ঝাঁপ দিলেন এক নারী


রোজকার মতোই লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের ওপর দিয়ে হাঁটাচলা করছিলেন পথচারীরা। কিন্তু গত বুধবার দিনটি অন্যদিনের মতো স্বাভাবিক ছিল না। দুপুর আড়াইটার দিকে হঠাৎই ব্রিজের ওপর দিয়ে সজোরে গাড়ি চালিয়ে যখন একজন হামলাকারী পার্লামেন্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেকে। ঘটনার আকস্মিকতায় দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করেন তারা। এরইমধ্যে হঠাৎ এক নারীকে টেমস নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখা যায়। সেই দৃশ্যটি ধরা পড়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির ক্যামেরায়।


অবশ্য, ওই নারীকে লাফিয়ে পড়তে বাধ্য করা হয়েছে নাকি আতঙ্কিত হয়ে নিজেই লাফিয়ে পড়েছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিছুক্ষণ পর লন্ডন বন্দর কর্তৃপক্ষ সে নারীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে। বন্দর কর্তৃপক্ষের এক মুখপাত্র জানান, ওই নারী গুরুতর আহত হয়েছেন।


সিরিয়া ও ইরাক যুদ্ধের বদলা নিতেই লন্ডনে আইএস-এর হামলা!


লন্ডনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হামলা উদযাপন করছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর সমর্থকরা। তারা দাবি করছে, আইএস এর পক্ষ থেকেই এই হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকে ইরাক এবং সিরিয়ায় ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর হামলার ‘বদলা’ বলেও দাবি করছে আইএস সমর্থকরা। তবে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ এই হামলায় দায় স্বীকার করেনি।


ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়েছে, হামলার ২৪ ঘণ্টার মাঝে স্বভাবতই কোন গোষ্ঠী দায় স্বীকার করে না। এখনও হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কেও জানা যায়নি।


বার্মিহামে গ্রেফতার ৭


বিবিসি জানায়, বৃটেনের ওয়েস্টমিনিস্টার ব্রিজে হামলার কয়েকঘণ্টা পর সেন্ট্রাল ইংল্যান্ডের বার্মিহামে শহরের ছয়টি বাড়িতে রাতভর অভিযান চালায় বৃটিশ পুলিশ। অভিযানে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


মেট্রোপলিটন পুলিশের সন্ত্রাস-দমন বিভাগের শীর্ষ একজন কর্মকর্তার মার্ক রৌলি বলেছেন, কয়েকশত গোয়েন্দা পুলিশ রাতভর এই অভিযান চালিয়েছে।


লন্ডনের পুলিশ বলছে, হামলাকারী আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে উৎসাহিত হয়ে হামলা চালিয়েছে বলে মনে করছেন। এর আগে রৌলি বলেছিলেন, এই হামলার ঘটনা ইসলামপন্থীদের কাজ হতে পারে বলে মনে করছেন।


তবে এখন বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে সে এই হামলা চালিয়েছিল বলে ধারণা করছে পুলিশ। এ নিয়েএর বিশদ কিছু জানাননি তিনি।


বার্তা সংস্থা প্রেস অ্যাসোসিয়েশন ও স্কাই নিউজ বলছে, লন্ডন হামলার সঙ্গে এই অভিযানের সম্পর্ক রয়েছে। ওই হামলায় ৪জন নিহত ও ৪০ জন আহত হয়।


লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলায় বিশ্বনেতাদের নিন্দা ও সহমর্মিতা : লন্ডনে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় শোকের ছায়ায় আচ্ছন্ন ব্রিটেন। লন্ডন পুলিশ কর্তৃপক্ষ এই হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে চিহ্নিত করেছে। ভয়াবহ এই হামলায় এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪ জন। আহত হয়েছেন আরো ৪০জন।


রয়টার্সের খবরে বলা হয়, এই হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। তারা সহমর্মিতার কথা জানিয়েছেন ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের স্বজনদের প্রতি। একইসঙ্গে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের লড়াইয়ে তারা সঙ্গে রয়েছেন বলেও জানান। ডেইলি মেইল।


এ ঘটনার পর বুধবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’কে ফোন করেন। তিনি এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সর্বদা ব্রিটেনের পাশে থেকে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই একযোগে কাজ করার অঙ্গিকার করেন। তিনি বলেন, এটি একটি ভয়ংকর সন্ত্রাসী হামলা। এই ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য আমরা প্রার্থনা করি।’ দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জানান, এই হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন।


জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ব্রিটেনের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। অ্যাঙ্গেলা মার্কেলও এ ঘটনায় শোক জানিয়ে হতাহতদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। তিনি সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে ব্রিটেনের পাশে থাকারও অঙ্গিকার করেছেন।

http://www.dailysangram.com/post/276891-