বছরের শুরুতেই সবজি ব্যতীত তেল, চালসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার থেকে তোলা ছবি -সংগ্রাম
২ জানুয়ারি ২০২১, শনিবার, ৩:৪০

তেল চালের মূল্যবৃদ্ধি থামছেই না

বাজার নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানির ঘোষণা দিলেও দাম বাড়ছেই। আমদানির ঘোষণা দিলেও স্বস্তি নেই চালের বাজারে। সদ্য বিদায়ী বছরের শেষ সপ্তাহের মতো নতুন বছরের শুরুতেও চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। খুচরা বাজারে ৬২ টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বাজারে চালের বাড়তি দামের জন্য অস্বস্তি প্রকাশ করছে ক্রেতারা। যদিও অগ্রহায়ণে ধানের মৌসুমেও চালের বাড়তি দামে মিল মালিকদের দায়ী করছেন ক্রেতারা।

জানা গেছে, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কিন্তু তার কোন প্রভাব নেই বাজারে। ভরা মৌসুমে এভাবে চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সরকারও অস্বস্তিতে রয়েছে। সরকার অভিযানসহ নানা উদ্যোগ নিলেও কোন কাজে আসেনি। উল্টো দাম বাড়ছেই। এদিকে কোন কারণ ছাড়াই বাড়ছে ভোজ্য তেলের দাম। বাজারে সব কয়টি সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। এ নিয়ে তেমন কোন বাজার মনিটরিং নেই। কোম্পানিগুলো নিজেদের ইচ্ছা মত দাম বাড়াচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার ও বউ বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে মিনিকেট চাল ৬২ টাকা, নাজির ৬৫ টাকা, আটাশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, পাইজাম ৪৮ টাকা, হাসকি ৫০ টাকা ও খুদের চাল ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় অস্বস্তি প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। আর চালের দামের এমন ঊর্ধ্বগতির জন্য মিল মালিকদের দায়ী করছেন খুচরা বাজারের বিক্রেতারা। রাজধানীর মহাখালী কাচাবাজারের বিক্রেতা সোলেইমান বলেন, কদিন আগে অগ্রহায়ণ মৌসুমে ধান উঠেছে। তারপরও মিল মালিকরা চালের দাম নামাচ্ছে না। তারা কারসাজি করে দাম ধরে রেখেছে।

গত এক সপ্তাহ ব্যবধানে এসব বাজারে বয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজি, পাকিস্তানি মুরগি ২২০ টাকা আর লেয়ার বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১৭০ টাকা।

মুরগী বিক্রেতারা জানান, থার্টি ফার্স্ট নাইটের কারণে মুরগির দাম বেড়েছে। তবে তা দু-একদিনের মধ্যেই কমে যাবে। এদিকে বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা কেজি, খাসির মাংস ৮০০ টাকা কেজি। আর বয়লার মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা ডজন। হাঁসের ডিম ১৫০ টাকা ডজন।

চালের দামে ঊর্ধ্বমূল্য থাকলেও শীতকালীন সবজি আসায় স্বস্তি দিচ্ছে সবজির দামে। বাজারে সরজমিনে দেখা যায়, প্রতিপিস ফুলকপি ও বাধাকপি আকারভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৭০ টাকা, পাকা টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মরিচ ১০০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, বেগুন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মুলা ২০ থেকে ২৫ টাকা, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহ ব্যবধানে এসব বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। দেশি পেঁয়াজের পাল্লা ( ৫ কেজি) ২০০ টাকা হলেও খুচরা বাজারে ৫০ টাকা দরে কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চায়না পেঁয়াজ ৩০ টাকা, দেশি ও চায়না রসুন ১১০ টাকা, দেশি মোটা রসুন ৭০ টাকা, আদা ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে প্রতি কেজি বড় চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাঙাস ১৫০ টাকা, রুই ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ টাকা, কালিবাউশ ৩৬০ টাকা, শোল ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, শিং ৪০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ও টেংরা ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

https://dailysangram.com/post/439220