১০ অক্টোবর ২০২০, শনিবার, ১০:৫৭

অবৈধভাবে বাড়ানো হচ্ছে খাদ্যপণ্যের মেয়াদ

ভেজাল খাদ্যে সয়লাব দেশ

প্রতিবছর দেশে ৩ লাখ মানুষ ক্যান্সারে, ২ লাখ কিডনি ও দেড় লাখ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হচ্ছে ১৫ লাখ * তিন বছরে ২৫ হাজার মামলায় শতকোটি টাকা জরিমানা

নেদারল্যান্ডস থেকে আমদানি করা চিকেন ফ্র্যাং ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আগামী বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নতুন করে মেয়াদ বাড়িয়ে রিপ্যাক করেছিল কমলা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের খান হোটেলের দোতলায় গোডাউন ভাড়া নিয়ে চলছিল তাদের এই অপকর্ম। এসব মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যসামগ্রী তারা পাইকারি ও খুচরা দামে বিক্রিও করছিল। ১১ সেপ্টেম্বর র‌্যাবের ভেজালবিরোধী অভিযানে ধরা পড়লে প্রতিষ্ঠানটিকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় ১০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের চিকেন ফ্র্যাং, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিজ, ঘি, বিস্কুটসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।

শুধু মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যই নয়, রাজধানীর নামিদামি রেস্টুরেন্টগুলোয়ও রান্না হচ্ছে ভেজাল মসলা দিয়ে সুস্বাদু খাবার। ফ্রিজে রাখা হচ্ছে কাঁচা মাংসের সঙ্গে রাখা রান্না করা মাংসও। রান্নাঘরও নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।

রাজধানীর গোপীবাগের আরকে মিশন রোডের নামকরা খাবার হোটেল ‘হাঁড়ি গোশত রেস্টুরেন্ট ও ক্যাটারিং সার্ভিস’। নামি এই রেস্টুরেন্টে দূর-দূরান্ত থেকে খাবার খেতে আসে লোকজন। অথচ সেই রেস্টুরেন্টের রান্নাঘর অত্যন্ত নোংরা পরিবেশ ও প্রচণ্ড দুর্গন্ধময়। চুলার পাশে অপরিষ্কার নালা, বাসি খাবার সংরক্ষণ, রান্না ও কাঁচা মাংস একই ফ্রিজে রাখা হয়েছে। খাবার অযোগ্য পচা সবজি এবং তেলাপোকা ঘুরঘুর করছে পুরো রান্নাঘরে। এমন পরিবেশ ও রেস্টুরেন্টের হালনাগাদ সনদ না থাকায় ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জ্যোতিশ্বর পালের নেতৃত্বে পরিচালিত মোবাইল কোর্ট ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে ওই রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।

এছাড়া গত বছরের ২৮ অক্টোবর ধানমণ্ডির সাতমসজিদ রোডের ‘বুমারস ক্যাফে’কে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম শান্তুনু চৌধুরী। ১ অক্টোবর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য তৈরি করায় যাত্রাবাড়ীর ‘দিল্লি দরবার’কে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন প্রতিষ্ঠানটির অন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পংকজ চন্দ্র দেবনাথ। এছাড়া ১১ ফেব্রুয়ারি রান্নাঘর নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হোটেল নূরজাহানসহ ৩ রেস্টুরেন্টকে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করেন বিএফএসএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম শান্তুনু চৌধুরী। এ চিত্র শুধু রাজধানী ঢাকা ও হাইওয়ের হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোয়ই নয়, সারা দেশের জেলা-উপজেলা শহরগুলোয়ও একই ধরনের চিত্র।

সুস্বাস্থ্যের জন্য চাই স্বাস্থ্যসম্মত নিরাপদ খাদ্য। অর্থাৎ ‘সুস্থ খাবার, সুস্থ জীবন’। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, এদেশের প্রায় প্রতিটি খাদ্যেই ভেজালে সয়লাব। গত তিন বছরে বিএসটিআই (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন), বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ), এলিট ফোর্স র‌্যাব এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কমবেশি ৮ হাজার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। এসব অভিযানে ভেজাল প্রমাণিত হওয়ায় প্রায় ২৫ হাজার মামলা হয় এবং প্রায় শতকোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু র‌্যাবের পক্ষ থেকে ৩ বছরে (২০১৮-২০২০) ভেজালবিরোধী অভিযান (মোবাইল কোর্ট) পরিচালনা করা হয়েছে ৪ হাজার ৯২৮টি। এর মধ্যে মামলা হয়েছে ১৬ হাজার ১২৬টি এবং থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে ৯৪টি। এসব মামলায় জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৭৫ কোটি ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৮৮ টাকা এবং কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে ১৩ হাজার ২০ জনকে। এই সময়ের মধ্যে বিএসটিআই-এর পক্ষ থেকে প্রায় দেড় হাজার ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ২ হাজার মামলা করা হয়েছে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে সাড়ে ২২ কোটি টাকা। এছাড়া নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ চলতি বছর ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে ৬২টি। এর মধ্যে মামলার মাধ্যমে ৪১ ব্যক্তিকে সাজা দেয়া হয়েছে। আর জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৭২ লাখ টাকা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় ৬০ কোটি মানুষ ভেজাল ও দূষিত খাদ্য গ্রহণের কারণে অসুস্থ হয়। এর মধ্যে মারা যায় ৪ লাখ ৪২ হাজার মানুষ। দূষিত খাদ্য গ্রহণজনিত কারণে ৫ বছরের কম বয়সের আক্রান্ত হওয়া ৪৩ শতাংশ শিশুর মধ্যে মারা যায় ১ লাখ ২৫ হাজার। পরিবেশ বাঁচাও অন্দোলনের (পবা) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু ভেজাল খাদ্যের কারণে প্রতিবছর দেশে ৩ লাখ লোক ক্যান্সারে, ২ লাখ লোক কিডনি রোগে, দেড় লাখ লোক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া গর্ভবতী মা ১৫ লাখ বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম দিচ্ছেন। ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে দেশে হেপাটাইটিস, কিডনি, লিভার ও ফুসফুস সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্যের অধিকার জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। ভেজাল খাদ্য পরীক্ষা করতে ইতোমধ্যে দেশের আট বিভাগে আটটি আধুনিক ল্যাবরেটরি তৈরির কাজ চলছে। ভেজাল খাদ্যের বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।’

জানতে চাইলে খাদ্যদ্রব্যসহ সব ধরনের পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই-এর মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল আনোয়ার যুগান্তরকে বলেন, ‘বিএসটিআইয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে আমরা রাজধানীতে ভেজালবিরোধী অভিযান নিয়মিতভাবেই পরিচালনা করছি। শুধু গত মাসেই (সেপ্টেম্বর) ১৮৩টি অভিযান পরিচালনা করেছেন আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা। যেখানেই অনিয়ম ও ভেজাল পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’ এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে আরও তৎপর ও অনিয়মের প্রতিবেদন প্রকাশ করার অনুরোধ জানান তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে খাদ্যপণ্যে চলছে ভেজালের ছড়াছড়ি। চালে মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত ক্যাডমিয়াম। আটায় চক পাউডার। পোলট্রি গোশত ও ডিমে পাওয়া গেছে সহনীয় মাত্রার ৩/৪ গুণ বেশি ক্রোমিয়াম। গরু মোটাতাজা করতে খাওয়ানো হয় স্টেরোয়েড টেবলেট। মাছ, গোশত, দুধ ও ফলে মেশানো হচ্ছে মরণঘাতী ফরমালিন। দুধের ছানার পানির সঙ্গে খাওয়ার সোডা, বিষাক্ত পারঅক্সাইড ও বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করা হয় কৃত্রিম দুধ। সয়াবিন তেলে মেশানো হয় পাম অয়েল। সরষে তেলে মেশানো হয় মরিচের গুঁড়া, সাবান তৈরির ক্যাস্টার অয়েল ও কেমিক্যাল ঝাঁজ। মিষ্টিকুমড়া-গাজর পিষে, রং, ফ্লেভার ও প্রিজারভেটিভ মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে গাওয়া ঘি। মন ভোলানো চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে নামকরা কোম্পানির খাঁটি গাওয়া ঘি বলে দেদার বিক্রি করছে। মরিচের গুঁড়ার সঙ্গে মেশানো হয় ইটের গুঁড়া। ধনের সঙ্গে মেশানো হয় কাঠের গুঁড়া আর ধানের ভূষি। হলুদের রং উজ্জ্বল করতে মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অস্ট্রেলিয়ার ওলিংগং বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে গবেষণা জরিপ করে দেখেছে, রাজধানীর ৯৬ শতাংশ মিষ্টি, ২৪ শতাংশ বিস্কুট, ৫৪ শতাংশ পাউরুটি, ৫৯ শতাংশ আইসক্রিম ভেজাল বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি। এক্ষেত্রে নমুনা পরীক্ষা করে প্রায় ৫০ শতাংশ খাদ্যপণ্যে অস্বাস্থ্যকর উপাদান পেয়েছে জাতীয় জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান।

এ প্রসঙ্গে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম নিজ দফতরে যুগান্তরকে জানান, ‘অসাধু ব্যবসায়ীরা অভিনব কায়দায় খাদ্যে ভেজাল দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে বিদেশ থেকে আমদানি করা গুঁড়া দুধ, চকলেটসহ শিশুখাদ্য, কসমেটিকস আইটেম, ফলমূল মেয়াদোত্তীর্ণ হলে নিজেরাই ১/২ বছর মেয়াদ বাড়িয়ে বিক্রি করেন। এসব অপকর্মে দেশের নামিদামি কোম্পানিগুলোও রয়েছে।

এ ধরনের বিষয় ধরা পড়ার পর আইন হয়েছে পণ্যের প্যাকেট/কৌটার গায়ে উৎপাদন, প্যাকেটজাত এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ উল্লেখ করতে হবে। এছাড়া বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দরে কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে। যাতে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য দেশে প্রবেশ করতে না পারে। খাদ্য ব্যবসায়ীদের আরও সচেতন করতে হবে। তাদের এবং হোটেল শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সচেতন করতে হবে।’

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ করোনার কারণে কয়েক মাস অভিযান পরিচালনা না করলেও এখন নিয়মিত অভিযান হচ্ছে। যেখানেই ভেজাল মিলছে, সেখানেই মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি ও জরিমানা করা হচ্ছে। তবে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সচেতন হতে হবে।’ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ‘অধিদফতরের পক্ষ থেকে প্রতিদিন বাজার তদারকি করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। কোথাও কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে ভোক্তা অধিকার আইনে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

এর আগে গত বছরের মে মাসে খোলাবাজার থেকে ৪০৬টি পণ্যের নমুনা ক্রয় করে বিএসটিআই। এসব পণ্য তাদের নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষা করা হলে ৫২টি পণ্যে ভেজাল পাওয়া যায়। এসব পণ্যের মধ্যে ছিল সরিষার তেল, চিপস, খাবার পানি, নুডলস, হলুদ ও মরিচের গুঁড়া, আয়োডিনযুক্ত লবণ, লাচ্ছা সেমাই, চানাচুর, বিস্কুট ও ঘি। পণ্যগুলো বাজার থেকে তুলে নিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কনশাস কনজুমার্স সোসাইটি নামে একটি বেসরকারি ভোক্তা অধিকার সংস্থা। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাজার থেকে ওই ৫২টি পণ্য সরিয়ে নিতে আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদেশ বাস্তবায়ন করতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ পণ্যগুলোর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিলে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ড. সহদেব চন্দ্র সাহা। তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে আলাদা চিঠি দিলে বাজার থেকে তুলে নেয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এ বিষয়ে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা ও মনিটর করছেন।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/353270