২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, সোমবার, ৫:৩৩

অবিরাম বর্ষণে রংপুর ডুবছে

শত বছরের ইতিহাসে রেকর্ড পরিমাণ অবিরাম ভারি বর্ষণে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ টি ওয়ার্ডের প্রায় দেড়শো পাড়া মহল্লার সড়ক, বাড়িঘর ও প্রধান সড়ক স্টেশন রোডসহ হাঁটু থেকে কোমর পানির নীচে তলিয়ে গেছে।

অপ্রত্যাশিত এই পানির তান্ডবে নগরীর অন্তত ৫০ হাজার পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। নগরীর বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া পয়ঃনিস্কাশনের অন্যতম মাধ্যম শ্যমাসুন্দরী খালের বিস্তীর্ণ দুকূ’ল উপচে পার্শ্ববর্তী পাড়া মহল্লার সড়ক এবং বাড়ি ঘর হাটু থেকে কোমর পানির নীীচে তলিয়ে গেছে। নগরীর ষ্টেশন রোড, সেন্ট্রাল রোড, জিএল রায় রোডসহ ব্যাংক পাড়া, অফিস পাড়া, আদালত চত্বর, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অধিকাংশ সড়কের উপর এবং বাড়ীর শয়নকক্ষসহ রান্নাঘর ২/৩ ফুট পানির নীচে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে এবং অনুসন্ধান নিয়ে জানা গেছে, এসব পানিবন্দী পরিবারের অনেকেইে রান্নার অভাবে দিনভর অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটিয়েছে। কেউবা শুকনো খাবার সংগ্রহ করে দায়সারা ক্ষুধা নিবারন করেছে। পানিবন্দী পরিবার গুলোর কেউ কেউ পার্শ্ববতী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিংবা স্বজনদের বাসায় নিরাপদ স্থানে অতি কষ্টে ঠাইঁ নিয়েছে। আকস্মিক পানিবন্দী হয়ে অনেকের আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীসহ মুল্যবান জিনিসপত্র ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বহুতল ভবনের নীচতলা এবং একতলা বাড়ীঘরের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশী দেখা দিয়েছে। এই সংকটে ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ গুলো সবচেয়ে বেশী সংকটে পড়েছে। মুষুল ধারে বর্ষনের পাশাপাশি দিনভর বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। পানিবন্দী মানুষের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস এর জওয়ানরা নিরলস সেবা দিচ্ছে।

রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানান বিগত ১০০ বছরের ইতিহাসে রংপুরে গত শনিবার সন্ধা থেকে রোববার সকাল ১১ টা পর্যন্ত স্মরনকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমান ৪৩৩ মিলিমিটিার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ১৯৮৮ সালর ভয়াবহ বন্যয়ও এমন দুর্গতি এবং ভয়াবহতা দেখা যায়নি। নগরীর প্রধান সড়ক গুলির কোথাও কোথাও ৩/৪ ফুট পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে।

নগরীর নুরপুর, রর্বাটসনগঞ্জ, মন্ডলপাড়া, গুপ্তপাড়া, সেনপাড়া, নিউ আর্দশ পাড়া, নিউসেনপাড়া, জুম্মাপাড়া, হনুমানতলা, রাধাবল্লভ, মেডিকেল পাকার মাথা, খটখটিয়া, বাবুখাঁ, গনেশপুর, কামাড় পাড়া, মুলাটোল, পাকপাড়া, মুন্সিপাড়া, কেরানী পাড়া, ইসলামবাগ, খলিফাপাড়া, বাসটার্মিনাল, শালবন, মিস্ত্রিপাড়া, বৈরাগীপাড়া, আশরতপুর, চিনিয়াপাড়া, মন্ডলপাড়া, তাঁতিপাড়া, কামাল কাছনা, মর্ডানমোড়, মিলনপাড়া, আলহাজ নগর সহ দেড় শতাধিক পাড়া-মহল্লা পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। পানি বন্দী পরিবার গুলো দিনভর দুভোগে দিনাতিপাত করেছে। অনেক পুকুরের মাচ পানিতে ভেসে গেছে।

https://dailysangram.com/post/428863