১৭ মার্চ ২০১৭, শুক্রবার, ১০:২৮

ভারতের নির্বাচনে ইভিএম কারচুপি নিয়ে বিতর্ক

ভারতের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল দেশটির নির্বাচনে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ভোটযন্ত্র বা ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। প্রায় দুই দশক আগে ভারতের নির্বাচনে প্রথম ইভিএম ব্যবহার করা হলেও এখন কয়েকটি রাজনৈতিক দল অভিযোগ করছে ইভিএমে ভোট জালিয়াতির সুযোগ রয়েছে। বিবিসি
সদ্য সমাপ্ত উত্তর প্রদেশের ভোটে ইভিএমে ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বহুজন সমাজ পার্টির প্রধান মায়াবতী। তারপরে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং দিল্লির কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেনও অভিযোগ করেছেন যে ইভিএমে কারচুপি করা সম্ভব। দিল্লিতে আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য পৌর নির্বাচনে ইভিএমের বদলে কাগজের ব্যালট পেপার ব্যবহার করার দাবি তুলছেন কেজরিওয়াল এবং মাকেন। কিন্তু ভারতের নির্বাচন কমিশন আগের মতো আবারো জানিয়েছে, ভোটযন্ত্রে কারচুপি করা সম্ভব নয়। আর দেশের সব ভোটে ইভিএম ব্যবহার বাধ্যতামূলক। উত্তর প্রদেশে যে দিন ভোট গণনা চলছিল, সে দিনই সংবাদ সম্মেলনে মায়াবতী অভিযোগ তুলেছিলেন, ইভিএম যন্ত্রগুলোতে বড় ধরনের কারচুপি করা হয়েছে, যার ফলে শুধু বিজেপির দিকেই ভোট চলে গেছে। এমনকি অন্য দলকে ভোট দিলেও সেগুলো বিজেপির দিকে চলে গেছে বলে তাদের অভিযোগ। তারপরেই কেজরিওয়াল ও কংগ্রেস নেতা মাকেন ইভিএমে কারচুপির প্রসঙ্গ তোলেন।
বিজেপি অবশ্য বলছে, তারা যদি ইভিএমে কারচুপি করেই থাকবে তাহলে দিল্লি এবং বিহার বিধানসভা নির্বাচনে গত বছর তারা পরাজিত হলো কেন? কারচুপি করে সেগুলোতেও তারা জিততে পারত, যুক্তি দিচ্ছে বিজেপি।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এর আগে ইভিএমে কারচুপিসংক্রান্ত যেসব মামলা হয়েছিল, সেগুলোতে কেউ যন্ত্রে কারচুপির প্রমাণ দিতে পারেননি।
ভারতের ইভিএম বিশেষজ্ঞ, প্রয়াত পি ভি ইন্দিরেসান কয়েক বছর আগে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাাৎকারে জানিয়েছিলেন, যন্ত্রের প্রধান সুবিধা হলো এই ব্যবস্থায় জালভোট বা ছাপ্পা ভোট দেয়া যায় না। আগে একই ব্যক্তি পরপর অনেকগুলো ব্যালট পেপারে ছাপ মেরে বাক্সে ফেলে দিতে পারতেন। যন্ত্রে সেই সুযোগ নেই। প্রত্যেকটি ভোটের মধ্যে আট সেকেন্ডের ব্যবধান থাকতে হবে। যেসব অভিযোগ আসে, সেগুলো নিতান্তই যান্ত্রিক ত্রুটি।
তবে দণি ভারতের এক প্রকৌশলী একটি ইভিএম যন্ত্র জোগাড় করে হাতে-কলমে করে দেখিয়েছিলেন কিভাবে তাতে কারচুপি করা যায়।
কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত কর্মকর্তারা বলছেন, একটি যন্ত্র কোনোভাবে জোগাড় করে তাতে কারচুপি করা সম্ভব হলেও ভোটের ফলাফল বদলে দেয়ার জন্য বহুসংখ্যক ইভিএমে কারচুপি করতে হবে।
আর সেই প্রক্রিয়ায় যতজন নির্বাচনী কর্মকর্তা বা নিরাপত্তারীকে অংশ নিতে হবে, তা গোপনে করা সম্ভব নয়।

www.dailynayadiganta.com/detail/news/204300