১৬ মার্চ ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৭

মংলায় গম লোডিংয়ে ধীরগতি: সাইলোর কারিগরি ত্রুটি

 

খাদ্য গুদাম মংলার সাইলোতে বিদেশ থেকে আমদানি করা গম নিয়ে ভিড়তে পারেনি বিদেশি জাহাজ। সাইলো জেটি এলাকায় নাব্য সংকটের কারণে ২২ হাজার টন গম নিয়ে বহির্নোঙ্গরে অবস্থান করেই গম খালাস কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া নতুন এ সাইলোতে দক্ষ জনবল না থাকা ও কারিগরি সমস্যার কারণে ধীরগতিতে চলছে লোডিং কাজ। কারিগরি ত্রুটির কারণে গম লোডিংয়ের দুটি পয়েন্টের একটি নামমাত্র সচল থাকলেও অন্যটি অচল হয়ে আছে। এ অবস্থায় সাইলো উদ্বোধনের পর প্রথমবারের মতো গম নিয়ে আসা জাহাজের খালাস কাজে বিড়ম্বনা দেখা দিয়েছে। এতে জাহাজ কর্তৃপক্ষ, শিপিং এজেন্ট, স্টিভিডোরসসহ সংশ্লিষ্টরা মোটা অঙ্কের টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

আপৎকালীন দুর্যোগ মোকাবেলায় সাড়ে পাঁচশ' কোটি টাকা ব্যয়ে মংলার জয়মনিতে ৫০ হাজার টন খাদ্যশস্য ধারণ ক্ষমতার অত্যাধুনিক এ সাইলোটি নির্মিত হয়। গত বছরের ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এ সাইলোর উদ্বোধন করেন। এ সময় লাইটারে পরীক্ষামূলক ৪০৬ টন গম গুদামজাত করা হয়। এ সাইলোর জন্য সরকারিভাবে বিদেশ থেকে আমদানি করা গমের প্রথম চালান নিয়ে গত ৯ মার্চ মংলা বন্দরে ভিড়েছে জাহাজ। রাশিয়া থেকে আসা গমবোঝাই এমভি 'নর্ডলেক্স' নামের পানামার পতাকাবাহী জাহাজটি বন্দরের পশুর চ্যানেলের হারবাড়িয়া বহির্নোঙ্গরে অবস্থান করছে। প্রথমবারের মতো আসা গমবাহী জাহাজটি নাব্য সমস্যার কারণে সাইলোর জেটিতে ভিড়তে পারেনি। ফলে মাদার ভেসেল থেকে ছোট লাইটারে খালাসের পর সাইলো জেটিতে লোডিং কাজ শুরু করা হয়। মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় গম লোডিং শুরু হলেও ধীরগতি নিয়ে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সাইলো জেটির দুটি লোড পয়েন্টের একটি অচল হয়ে আছে। অন্যটি চললেও কিছুক্ষণ পরপর বন্ধ থাকছে। দক্ষ জনবল না থাকায় এ অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। গম নিয়ে আসা বিদেশি জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট সেভেস সির্সের খুলনার ম্যানেজার মো. শামিম হোসেন জানান, জাহাজটি ২২ হাজার টন গম নিয়ে বন্দরে আসে। এ গম খালাস করতে ৪ থেকে ৫ দিন সময় লাগতে পারে। তবে সাইলোর লোডিং পয়েন্টের ধীরগতিতে বিদেশি জাহাজটি নির্ধারিত সময় বন্দর ত্যাগ করতে পারছে না। এই জাহাজের শ্রমিক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজিং পার্টনার এসএম মোস্তাক জানান, মাদার ভেসেল থেকে লাইটারে দ্রুতগতিতে গম খালাস করা হলেও সাইলোর কারিগরি ত্রুটির কারণে লোডিংয়ে ধীরগতি চলছে।

তিনি জানান, অত্যাধুনিক এ সাইলোর প্রযুক্তি অনুযায়ী চবি্বশ ঘণ্টায় ২ হাজার টন গম লোডিং করার কথা থাকলেও তা পেরে উঠছে না কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টায় মাত্র ৪২৬ টন গম লোডিং করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, গম নিয়ে একাধিক লাইটার সাইলো জেটির লোডিং পয়েন্টে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে গম লোডিংয়ের ধীরগতিতে নির্ধারিত সময় খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। আর এ জন্য তিনি সাইলোর কারিগরি ত্রুটি ও দক্ষ জনবল সংকটকে দায়ী করেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে গমবাহী মাদার ভেসেল কর্তৃপক্ষ, শিপিং এজেন্ট ও স্টিভিডোরস এবং লাইটার কর্তৃপক্ষের মোটা অঙ্কের অর্থিক ক্ষতি হবে। তবে এ বিষয়ে সাইলোর ইনডোর বিভাগের প্রকৌশলী অরূপ জানান, সাইলোর লোডিং পয়েন্টে যথানিয়মে কাজ চলছে। তবে কোনো প্রকার ত্রুটির থাকার কথা অস্বীকার করে তিনি বহির্বিভাগে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তবে এ বিষয়ে মংলা সহকারী উপখাদ্য পরিদর্শক নাহিদুল ইসলাম জানান, তারা শুধু আমদানি করা গমের গুণগত মান পরীক্ষা করেই জাহাজ থেকে খালাস ও লোডিংয়ের অনুমতি প্রদান করেছেন।

http://bangla.samakal.net/2017/03/16/277601