৪ জানুয়ারি ২০২০, শনিবার, ১২:৩৪

আবার বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ কেজি ২০০ টাকা

রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম আবারও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকার মতো। কিন্তু গতকাল শুক্রবার হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম আরো বৃদ্ধি পেয়ে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকা কেজি। এদিকে বাজারে শীতের সবজি ভরপুর থাকলেও দাম কমছে না। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। আর মাছ গোশতের দামও রয়েছে অপরিবর্তিত।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, দেশী নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। দেশী পুরনো পেঁয়াজ বাজারে নেই। তবে দেশী পুরনো পেঁয়াজ ২২০ টাকারও বেশী বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীর। এদিকে আমদানি করা পেয়াঁজ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি করলেও গতকাল তা ১শ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছে বিভিন্ন বাজারে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত রফতানি বন্ধ করায় পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। রেকর্ড ২৫০ টাকায় পৌঁছে যায় পেঁয়াজের কেজি। তবে নতুন দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসার পর দাম কিছুটা কমে। এতে কয়েক সপ্তাহ জুড়েই রাজধানীর বাজারগুলোতে নতুন দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছিল ১০০ টাকা কেজির মধ্যে। কিন্তু এখন আর কোনো বাজারেই ১০০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। বাজার ভেদে নতুন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। আর আমদানী করা পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার বেশি দামে।

সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম এমন লাফিয়ে বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে নতুন দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণে আবারও দাম বেড়েছে।

পাইকারী ব্যবসায়ী নোয়াব আলী বলেন, চাষিরা বাড়তি দামের কারণে আগেই তোলা শুরু করায় এখন দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণে দাম বেড়েছে। পরিস্থিতির সামনে হয়তো পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, আসন্ন রমজান মাসের চাহিদা মেটাতে রমজান মাসের আগেই দেশে দুই লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হবে।

তিনি বলেন, রমজানে পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদা থাকে। সেই চাহিদা সামনে রেখে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি), সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ ও এস আলম গ্রুপ ৫০ হাজার মেট্রিক টন করে পেঁয়াজ আমদানি করবে। রমজান মাস শুরুর আগেই এগুলো আমদানি করা হবে। এছাড়া ভোজ্যতেল, ছোলা, আদা-রসুন ও খেজুরসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা, উৎপাদন, আমদানি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় মজুত তৈরি করা হবে।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে সবজির বাজার। বাজারে মুলা ছাড়া প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। সবজির সঙ্গে বেড়েছে সবধরনের শাকের দাম। শাক-সবজির দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে কাঁচা মরিচের দাম।

সপ্তাহের ব্যবধানে এসব বাজারে কেজিপ্রতি ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গাজর বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো (আধা কাঁচা) ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৭০ টাকা, ক্ষিরা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

সবজিভেদে কেজিপ্রতি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে শিম (কালো) বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শিম (সাদা) ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৮০ টাকা, নতুন আলু ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, উস্তা ৫০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

তবে অপরিবর্তিত আছে কাঁচা মরিচের দাম। কাঁচা মরিচ বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।

এছাড়া পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়ে আকারভেদে প্রতিপিস বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ফুলকপি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকায়।

এসব বাজারে দাম বেড়ে আটিপ্রতি (মোড়া) কচুশাক পাঁচ থেকে সাত টাকা, লালশাক ১০ টাকা, মুলারশাক ১০ টাকা, পালংশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, পুঁইশাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, লাউশাক ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

https://www.dailysangram.com/post/402198