২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৭:৫৭

গঙ্গা-পদ্মায় পানি বৃদ্ধি

গঙ্গা-পদ্মায় পানি বাড়ছেই। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বিপদসীমা ছুঁইছুঁই। জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ রুটে
ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ফেরি চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন-
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, ভারতে অতিবৃষ্টিতে উজানের ঢলে গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর অববাহিকায় পানি বাড়ছেই। ভাটিতে গোয়ালন্দে পানির প্রবাহ এখন বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। গতকাল মঙ্গলবার পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে একথা জানা যায়।

সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি প্রতিটি পয়েন্টে বেড়ে যাচ্ছে। গতকাল গঙ্গা নদীর পাংখা, রাজশাহী ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার যথাক্রমে ৯২, ৯২ এবং ৫০ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হয়।
গঙ্গার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি গোয়ালন্দ, ভাগ্যকুল ও সুরেশ^র পয়েন্টে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল এ তিনটি স্থানে বিপদসীমার যথাক্রমে ৩, ৪৭ এবং ৩৮ নিচে এসে গেছে। গোয়ালন্দে পদ্মা নদীর পানি গতকাল রাতের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করার শঙ্কা।

পাউবো পূর্বাভাসে জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় সুরমা-কুশিয়ারা নদীসমূহের পানির সমতলও বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশের নদ-নদীসমূহের ৯৩টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ৬৫টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি এবং ২৭ স্থানে হ্রাস পায়। গতকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে সর্বোচ্চ ১১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতের দিব্রæগড়ে ১১০ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে।
রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে তলিয়ে গেছে পন্টুন। এছাড়াও রয়েছে তীব্র স্রোত। যে কারণে রাজবাড়ীর জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ নৌরুটে বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো যাত্রী।

জানা যায়, হঠাৎ করে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে রাজবাড়ীর জৌকুড়া ঘাটের পন্টুনটি তলিয়ে যায়। এছাড়াও তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল ব্যাঘাত হওয়ায় রোববার সকাল থেকেই বন্ধ রাখা হয়েছে জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটের লঞ্চ ও ফেরি চলাচল। নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে দুটি ফেরি, দুটি লঞ্চ ও ১০ থেকে ১২টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। এই নৌযানগুলো দিয়ে প্রতিদিন ফরিদপুর, রাজবাড়ী, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার অন্তত ১৫ হাজার মানুষ ও যানবাহন পারাপার করা হয়।
জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটে তত্ত্বাবধানে রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাজবাড়ী। এই কার্যালয়ের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল। পানি কমে গেলেই শুরু হবে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল।

আরিচা সংবাদদাতা জানান, পদ্মা-যমুনায় পানি ও স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে স্বাভাবিক ফেরি চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। ফেরি স্বল্পতা ও ফেরি পারাপারে সময় বেশি লাগায় এ রুটের উভয় প্রান্তে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিআইডবিøউটিএ অফিস সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া পয়েন্টে গত কয়েকদিনে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিআইবিøউটিসির ঘাট কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, এ রুটে চলাচলরত ১৬টি ফেরির মধ্যে ২টি ফেরি মেরামতে থাকায় এবং একটি ফেরি চলাচলে অনুপযোগী হওয়ায় বর্তমানে ১৩টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ফলে, বাড়তি যানবাহনের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসির এজিএম জিল্লুর রহমান জানান, গতকাল দুপুরে উভয় প্রান্তে পাঁচ শতাধিক যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায় ছিল। মালবাহী যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটুরিয়া ঘাট টার্মিনালে স্থান সংকুলান না হওয়ায় আরিচা সড়কের উথলী মোড় থেকে ট্রাকগুলোকে আটকিয়ে সাময়িক অপেক্ষায় রাখা হচ্ছে।

https://www.dailyinqilab.com/article/236551/