১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বুধবার, ১০:১৪

রাজনীতি নেই রাজনীতিবিদের হাতে

ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী : আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা তোফায়েল বড় দেরিতে এক চরম সত্য উপলব্ধি করেছেন। ন্যাপের সদ্য প্রয়াত নেতা অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি এখন রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। সত্যিকারের রাজনীতিবিদ এখন কমই পাওয়া যায়। তারপর তিনি পুরানো বদঅভ্যাস অনুযায়ী, এখনও কিছু পাবার ক্ষীণ আশায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে একহাত নিয়ে বসলেন, “জিয়াউর রহমান বলেছিলেন রাজনীতিকে রাজনীতিবিদদের জন্য কঠিন করে দেব, যুগে যুগে এভাবেই স্বৈরশাকরা রাজনীতিকে কলুষিত করেছেন।”

প্রথমে জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে দু’চার কথা বলে নেয়াই ভালো। আওয়ামী লীগাররা সব সময় প্রেক্ষাপটে কথা বলে। এমনকি তারা এখনও এমন কথা বলে যে, ‘তৎকালীন প্রেক্ষাপটে’ বাকশাল বা একদলীয় স্বৈরশাসন চালু করা সঠিক ছিল। অর্থাৎ সঠিক ছিল বাকশাল ছাড়া আওয়ামী লীগসহ সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা। সঠিক ছিল ভিন্ন মত নির্মমভাবে দলন করা। সঠিক ছিল মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে নেয়া, সঠিক ছিল সরকার নিয়ন্ত্রণে চারটি পত্রিকা রেখে সকল পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া। কিন্তু এরা কখনও বিবেচনায় নেন না যে, কী প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাজনীতিকে কঠিন করার কথা বলেছিলেন।

জিয়াউর রহমান যখন রাজনীতি কঠিন করে তোলার কথা বলেছিলেন, তখন রাজনীতি আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল ড্রয়িং রুমে। রাজনীতিকরা ক্রমশই জনগণের সংযোগ হারিয়ে ফেলেছিলেন। বাকশালের মাধ্যমে তো জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সেই ভুয়া প্রতারণামূলক ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে চেয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন জনগণের দোরগোড়ায়। তিনি চেয়েছিলেন, রাজনীতি করতে হলে রাজনীতিবিদদের জনগণের দোরগোড়ায় যেতে হবে। তাদের অভাব-অভিযোগের কথা শুনতে হবে। তারা কী চান, সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। যা ড্রয়িং রুম রাজনীতিবিদদের জন্য মোটেও সহজ কাজ ছিল না। সেই প্রেক্ষাপটেই তিনি বলেছিলেন, ‘আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট।’ রাজনীতিকে জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়ার মানে রাজনীতিকে কলুষিত করা হতে পারে না।
তবে তোফায়েল সাহেব যে বলেছেন, যুগে যুগে এভাবে স্বৈরশাসকরা রাজনীতিকে কলুষিত করেছে। তার এই বাক্যাংশ সর্বাংশে সত্য। আজ রাজনীতি নেই রাজনীতিবিদদের হাতে- এটা আরও নির্মম সত্য। কিন্তু এই অবস্থা তৈরির জন্য দায়ী কে? তোফায়েল আহমেদ স্মরণ করে দেখতে পারেন। ১৯৭২-৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকালে বাংলাদেশের যে রাজনীতি, তাতেও ছিল না কোনো জনসম্পৃক্ততা। বরং যে সময় শাসকগোষ্ঠী দাঁড়িয়েছিল জগণের আশা-আকাক্সক্ষার বিপরীতে। সে শাসনকালের একেবারে শুরু থেকেই স্বৈরাচারী কায়দায় কঠোর নির্যাতনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছিল সরকার। আর তোফায়েল আহমেদ, আপনারা বলেছিলেন, যারাই শেখ মুজিব সরকারের বিরোধিতা করবে, তাদের ‘মুজিববাদে’র নিড়ানি দিয়ে উপড়ে ফেলা হবে। আপনারা উপড়ে ফেলার প্রাণান্ত চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু জনগণের প্রতিপক্ষে দাঁড়িয়ে তেমন কোনো সাফল্য অর্জন করা যায়নি। বরং জাসদ আপনাদের মুজিববাহিনী, লালবাহিনী, নীলবাহিনী ও দানব রক্ষীবাহিনীর প্রতিপক্ষ গড়ে তুলেছিল গণবাহিনী। আপনাদের বাহিনীগুলোর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গ্রাম-গ্রামান্তরে মানুষ নিজেদের সুরক্ষায় গণবাহিনীকে ডেকে নিয়ে গেছে। আশ্রয় দিয়েছে, খাদ্য দিয়েছে। বিনিময়ে সুরক্ষা পেতে চেয়েছে। তবে সে স্বৈরশাসনের পরিণতি তোফায়েল সাহেবদের জন্য ভাল হয়নি। আশাকরি, তিনি স্বীকার করবেন।

একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটে। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। স্বাধীনতার পর ঐ অল্প সময়েই আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তায় ব্যাপক ধস নেমেছিল। যে কারণেই শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের ভোটের ওপর আস্থা রাখতে পারছিলেন না। তাই কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন জাতীয় সংসদের সকল আসন। ফলে এমনও হলো যে, নির্বাচন কমিশন বিরোধী দলের অনেককে নির্বাচিত ঘোষণা করার পর তাঁর নাম বদলে আওয়ামী প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করা হল। আওয়ামী লীগের নির্বাচনে কারচুপি ও নির্বাচন দস্যুতার সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল। শেখ মুজিব জনআকাক্সক্ষাকে ভয় পেয়েছিলেন। তিনি বুঝে গিয়েছিলেন তার বছর খানেকের অপশাসনেই জনগণ বিগড়ে গেছে। ভোট পাওয়া যাবে না। অতএব ব্যবহার করো রাষ্ট্রশক্তিকে। পুলিশ, বিডিআর, রক্ষীবাহিনী। আওয়ামী লীগের সেই যে জনভীতি শুরু হয়েছিল, তা এখনও দূর হয়নি। দূর যে হয়নি, তার প্রমাণ পাওয়া গেল ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনেও। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য মইন উদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের সঙ্গে তারা একটা নীল-নকশা প্রণয়ন করল। সে নকশা অনুযায়ীই ঐ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করা হয়েছিল। ছদ্মবেশি সামরিক শাসকরা চেয়েছিল, পূর্ববর্তী দু’বছরে তারা যেসব অপকর্ম করেছে, তা থেকে তাদের দায়মুক্তি দিতে হবে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল ও নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে না। কাউকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো যাবে না।

ক্ষমতা গ্রহণের পর সেসব শর্ত শেখ হাসিনা সরকার অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। মইন উদ্দিন-ফখরুদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন। জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী দেশেই আছেন এবং জাপা থেকে তাকে এমপি বানিয়ে আনা হয়েছে মধ্যরাতের নির্বাচনে। জেনারেল মতিনও দেশে। শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর যখন আইন করা হলো যে, কেউ যদি সামরিক আইন জারি করে তবে তার মৃত্যুদ- হবে। দাবি উঠলো যে, ঐ অবৈধ সামরিক শাসকদের বিচারের আওতায় আনা হোক, তখন শেখ হাসিনা বললেন, তিনি কেন তাদের বিচার করতে যাবেন। বেগম খালেদা জিয়া তাদের পদে বসিয়েছিলেন, বিচার করলে তাকেই করতে হবে। এর চেয়ে হাস্যকর কথা আর কী হতে পারে। শুধু তাই নয়, এই মইন-ফখর গং যখন ক্ষমতা নিল, শেখ হাসিনা তখন বলেছিলেন, তারা বিএনপি’র বিরুদ্ধে যে কোনো ব্যবস্থা নিক। আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় আসে, তবে প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করে তাদের কাজের বৈধতা দেয়া হবে। অর্থাৎ রাজনীতিকে রাজনীতিকদের হাত থেকে ফিরিয়ে নিয়ে সামরিক স্বৈর শাসকদের হাতে তুলে দিলেন শেখ হাসিনা। তবে এটাই তার শুরু নয়। এর আগে ১৯৮২ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত বিচারপতি সাত্তার সরকারকে হঠিয়ে জেনারেল এরশাদ যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখনও শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আই অ্যাম নট আনহ্যাপি।’ আমি অখুশি নই। অর্থাৎ তিনি তখনও রাজনীতিবিদদের হাত থেকে রাজনীতিকে সামরিক একনায়কদের হাতে তুলে দিয়ে সুখী ছিলেন।

তোফায়েল আহমেদ সাহেব আজ আফসোন করছেন। কিন্তু রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাত থেকে সরিয়ে যখন শেখ হাসিনা সরকার সামরিক একনায়কদের হাতে তুলে দিয়েছেন, তখন তিনি বা তার কোনো সহকর্মী প্রতিবাদ করেছেন- এমন কথা কখনও শোনা যায়নি। আসলে আওয়ামী লীগ প্রধানের সামনে দাঁড়িয়ে ভিন্নমত পোষণ করার মতো গুর্দা কোনো আওয়ামী লীগারের নেই। তোফায়েল আহমেদেরও নেই। আগেও ছিল না। কিন্তু এদেশের রাজনীতি সচেতন মানুষেরা জানেন- বিএনপিতে সে রকম ব্যক্তির অভাব ছিলনা। বি. চৌধুরী ছিলেন, সালাম তালুকদার ছিলেন, সাইফুর রহমান ছিলেন। ফলে নিঃসংশয়ে বলা যা, বিএনপি ছিল অনেক গণতন্ত্রমনা। যেখানে ভিন্নমতের মূল্য ছিল। সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ছিল আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে।

২০১৪ সালে বিরোধী দলসমূহকে বাইরে রেখে এক ভোটারবিহীন নির্বাচনের আয়োজন করেছিল আওয়ামী লীগ, তাদের সরকারের অধীনে। এক দলের প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছিল। নির্বাচনে যায়নি দেশের উল্লেখযোগ্য কোনো দল। আওয়ামী লীগের সঙ্গী হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের দল ছাড়া আর সকল রাজনৈতিক দল সে নির্বাচন বর্জন করেছিল। বর্জন করেছিল সারা বিশ্ব। কেউ পর্যাবেক্ষণে আসেনি। কারণ তারা আগেই বুঝে গিয়েছিল যে, ঐ নির্বাচন হবে একটা প্রতারণামূলক নির্বাচন। যেখানে ভোটের কোনো প্রয়োজন হবে না। শেখ হাসিনা পেশি শক্তির বলে ক্ষমতা দখল করে নেবেন, তাতে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনের প্রয়োজন হবে না। তোফায়েল সাহেব, তখনও আপনারা কেউ রাজনীতিকে রাজনীতিকদের হাতে ফেরত পাঠাতে চাননি বা পারেননি। তবে, তোফায়েল সাহেব, আপনারা যে চেষ্টা করেননি, তা আমি বলবো না। আপনারা চারজন আওয়ামী লীগে সংস্কার আনার চেষ্টা করেছিলেন। আপনারা ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। পরে আপনাদের ‘র‌্যাটস’ নামে অভিহিত করা হতো। (Razzak, Amu, Tofael & Suranjit = RATS)। তবে আপনারা র‌্যাটসের বালকেরা ভুল করে নেমেছিলেন ভুল জলে। স্থান-ফল-পাত্র উপলব্ধি করতে পারেননি। সেজন্য আমিও আপনাদের সম্পর্কে পত্রিকায় উপসম্পাদকীয় লিখেছিলাম: “সংস্কারবাজদের জন্য কোনো সুখবর নেই।’ তখন আপনারাও নিজেদের মেরুদণ্ডের ওপর দাঁড়াননি। দাঁড়াননি জনসম্পৃক্ততা নিয়ে। যাদের মদতে আপনারা সংস্কার ছেয়েছিলেন, তারা যে ক্ষণস্থায়ী বুদ্বুদ মাত্র, সেটা আপনারা উপলব্ধি করতে পারেননি। যে বুদ্বুদ মিলিয়ে গেলে আপনারাও ‘শূন্য’ হয়েছেন।

শেখ মুজিবের নৃসংশ হত্যাকাণ্ডের পর আবদুর রাজ্জাক তবু বাকশাল নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, বহু প্রত্যাশা সত্ত্বেও আপনি কিন্তু মেরুদণ্ড সোজা করে অনড় অবস্থানে দাঁড়াতে পারেননি। অথচ র‌্যাটসের মধ্যে আপনিই ছিলেন সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক চরিত্র। আপনারা যদি সঙ্কীর্ণ স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে সত্যি কথা জনগণের সামনে বলে রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতেন, তাহলে ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকতে পারতেন। তা না করে যত দীর্ঘ সংগ্রামের পর ‘শূন্য’ হয়ে গেলেন।

তখন মন্ত্রী হয়েছিলেন। আপনাদের সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমি (সংস্কার বাজদের) ফরগিভ করেছি, কিন্তু ফরগেট করিনি। শেখ হাসিনা সেটা প্রমাণও করেছেন। তোফায়েল সাহেব, ২০১৪ সালের তথাকথিত নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা দয়া করে আপনাদের মন্ত্রী করেছিলেন। তখন কি আপনাদের হুঁশ হয়েছিল যে, আপনারা আসলে জনপ্রতিনিধি নন, আপনাদের জনপ্রতিনিধি ঘোষণা করা হয়েছে মাত্র। কিন্তু মন্ত্রী হয়ে অনেকটা বেদিশা হয়ে গেলেন। সঙ্কীর্ণ স্বার্থের ফাঁদে ভুলে গেলেন আপনার অতীত, আপনার লড়াইয়ের কথা। তখনও বোধকরি বুঝতে পারেননি, কী অপমান লুকিয়ে আছে আপনাদের আপসকামিতার পেছনে। ভেবেছিলেন, মন্ত্রী হয়েছেন, আবারও মন্ত্রী হবেন। কিন্তু শেখ হাসিনা তো আপনাদের ফরগেট করেননি।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন পৃথিবীর ইতিহাসে এক নতুন ঘটনা। এ রকম ঘটনা সচরাচর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে ঘটে না। তবে আত্মতৃপ্তির কথা এই যে, পৃথিবীতে বাংলাদেশকে এখন আর কেউ গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে বিবেচনা করে না। নব্য স্বৈরাচারী দেশ হিসাবে বিবেচনা করে। সেখানে রাজনীতি কীভাবে রাজনীতিবিদদের হাতে থাকে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আপনাকেও বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আপনি কি বলতে পারেন যে, আপনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন? নাকি পুলিশ ও প্রশাসন আপনাকে বিজয়ী করে এনেছেন। যদি আপনার মেরুদণ্ড শক্ত হতো তবে আপনি কিংবন্তীর তোফায়েল আহমেদ বলতে পারতেন, সারা দেশে ভোট দিক পুলিশ ও প্রশাসন, কিন্তু আমার আসনে ভোট হতে হবে জনগণের। তাদের ভোটে যদি জিতি, জিতব, না হলে না। যদি পারতেন তাহলে ইতিহাস হয়ে থাকতেন। শেখ আপনাকে ফের বাতাসা দেবেন- এই ভরসায় আপনারা বরবাদ হয়ে গেলেন। আমারতো মনে হয় না যে, আপনারা আর রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতে ফিরিয়ে আনতে পারবেন। এ দেশ আপনারা নন, পুলিশ ও প্রশাসনই পরিচালনা করতে থাকবে।

বি.দ্র: একটি টিভি টক-শোতে আমি ঢুকছি। বেরিয়ে আসছেন এক এমপি, সজ্জন, পূর্ব পরিচিত। বললাম, কেমন আছেন ভাই? বললেন, ‘রেজোয়ান ভাই, কেমন যে আছি বলতে পারব না। ইউএনও কথা শোনে না, ওসি কথা শোনে না। ডিসি ফোন ধরে না। তাহলে যে জনগণের আমি প্রতিনিধি, তাদের কাজ করব কীভাবে। বললাম, কীভাবে করবেন? তিনি বললেন, কোনো অবস্থা তো দেখি না। এমনকি কনস্টেবলও সালাম দেয় না। বলে, ওরাই নাকি আমাদের ক্ষমতায় এনেছে। আমি বললাম, এনেছে তো তাই। তাহলে আপনাকে মানবে কেন? তিনি বললেন, বিপদ তো সেখানেই। এখন আমার চেয়ে এলাকায় ওসি-এসআই-এএসআই অনেক বেশি শক্তিশালী।

https://www.dailysangram.com/post/389835