৫ আগস্ট ২০১৯, সোমবার, ২:৫৬

ক্ষতি প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা

বন্যায় ভেঙেছে এলজিইডির ৪০৭৮ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক

ভয়াবহ বন্যায় দেশের ২৫ জেলায় ২ হাজার ৭৪টি গ্রামীণ সড়কের ৪ হাজার ৭৮ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৭৬৬টি ব্রিজ ও কালভার্ট ভেঙে গেছে। রাস্তা এবং ব্রিজ-কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। আর এতে ২ হাজার ৭৮ কোটি টাকা সরকারের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
চলতি বন্যায় গ্রামীণ সড়ক কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আগামী মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

অনেকের মতে, ১৯৮৮ সালের চেয়েও এবার ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। চলতি মাসে আবারো বড় ধরনের বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তার আগে কিছু গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংস্কার করতে চায় স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

এদিকে বন্যাকবলিত সকল জেলার সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঈদের ছুটি বাতিল এবং জেলা উপজেলা প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক সমন্বয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামোগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেরামত ও সংস্কার করতে নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ অবকাঠামোর সড়কগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেরামত ও সংস্কার করতে দির্দেশ দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, সারাদেশে গ্রামীণ সড়ক ও পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। সেই এলজিইডির পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের বন্যায় দেশের ২৫ জেলায় ২ হাজার ৭৪টি গ্রামীণ অবকাঠামোর রাস্তার ৪ হাজার ৭৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ব্রিজ ও কালভার্ট ৭৬৬টি। যা ১১ হাজার ১৮০ কিলোমিটার। এসব গ্রামীণ অবকাঠামোর রাস্তার ২ হাজার ৭৮ কোটি টাকা ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ২৫ জেলার ৫০টি উপজেলায় ৬০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব চেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে জামালপুর জেলা। এ জেলায় স্থানীয় সরকার বিভাগের ৫৬২টি সড়ক এবং ২৪৩টি ব্রিজ বন্যায় ভেঙে গেছে। আর চট্টগ্রাম জেলায় ৩৮৮টি সড়ক এবং ৭৪টি ব্রিজ এবং সুনামগঞ্জ জেলার ২৭৫টি সড়ক এবং ৯৬টি ব্রিজ বন্যায় পানিতে ভেঙে গেছে। কুড়িগ্রাম জেলায় নয়টি উপজেলার ৬০টি সড়ক এবং ৪০টি ব্রিজ। গাইবান্ধা জেলার ১৬১টি সড়ক ২২টি ব্রিজ, লালমনিরহাট জেলার ৪১টি সড়ক এবং ২৬টি ব্রিজ। রংপুর জেলার ১২টি সড়ক এবং ১০টি ব্রিজ, সিরাজগঞ্জ জেলার ৭২টি সড়ক এবং ১১টি ব্রিজ। বগুড়া জেলার ৬৬টি সড়ক এবং ৮টি ব্রিজ। মৌলভীবাজার জেলার ২৭টি সড়ক এবং ১৫টি ব্রিজ। হবিগঞ্জ জেলার ৫৩টি গ্রামীণ সড়ক এবং ২৯টি ব্রিজ। টাঙ্গাইল জেলার ৯৭টি গ্রামীণ সড়ক এবং ৪৭টি ব্রিজ। খাগড়াছড়ি জেলার ২২টি সড়ক এবং ১৩টি ব্রিজ। বান্দরবান জেলায় ২৯টি সড়ক এবং ১১টি ব্রিজ। রাঙ্গামাটি জেলায় ১৫টি সড়ক এবং ১৮টি ব্রিজ। কক্সবাজার জেলায় ৪৯টি সড়ক এবং ২৩টি ব্রিজ। ময়মনসিংহ জেলায় ৪৫টি সড়ক এবং ৬২টি ব্্িরজ। নেত্রকোনা জেলায় ৩৮টি সড়ক এবং ১৯টি ব্রিজ। শরীয়তপুর জেলায় ৪৯টি সড়ক এবং ১৯টি ব্রিজ। মাদারীপুর জেলায় ৮টি সড়ক এবং ব্রিজ নেই। রাজবাড়ী জেলায় ১৫টি সড়ক এবং ১টি ব্রিজ। এছাড়া শেরপুর, ফরিদপুর, সিলেট এবং গোপালগঞ্জ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ সড়ক ও ব্রিজের তথ্য এখনো মন্ত্রণালয়ে আসেনি।

https://www.dailyinqilab.com/article/225255/