১ আগস্ট ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৮:৫২

ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট সংকটের আশঙ্কা

দেশব্যাপী ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়া এবং রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ায় এ রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কিট বা সরঞ্জামাদি সঙ্কটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঢাকায় রোগ নির্ণয়ের বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবি এরইমধ্যে এক দফা ওই সংকট মোকাবিলা করেছে। কিট সঙ্কটে নোটিশ টাঙিয়ে কয়েকঘণ্টা তাদের সেবা বন্ধ ছিল। প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ দপ্তর অবশ্য গতকাল মানবজমিনকে এটা নিশ্চিত করেছে যে কিটের সংস্থান হওয়ার পর তারা ফের সেবা চালু করেছেন। এখন সরকার নির্ধারিত মূল্যে তারা ২৪ ঘন্টা পরীক্ষা-নিরীক্ষার সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালেও কিটের সরবরাহে টান পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে তারা এ-ও বলছেন, সংকটের আশঙ্কায় তারা আগেভাগেই কিটের পর্যাপ্ততা নিশ্চিতে দৌড়ঝাঁপ করছেন। সরকারের তরফে এ নিয়ে যথেষ্ট সচেতনতা রয়েছে বলেও দাবি তাদের।

এদিকে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাৎক্ষণিক কিটের জোগান সংকটে পড়ছে সরকারি অনেক হাসপাতাল। ঢাকার পাশের জেলা মানিকগঞ্জে গত ১০ দিনে ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার পর জেলা হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন ৪৬ জন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬ জন। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ৫ জনকে। অন্যরা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও রিএজেন্ট সুবিধা না থাকায় বিপাকে পড়েছে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী এবং হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্তরা। রোগীরা বাধ্য হয়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্যাথলজি সেন্টারে পরীক্ষা করাচ্ছেন। জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল আওয়াল গণমাধ্যমকে বলেছেন, আগে থেকে হাসপাতালে সরকারিভাবে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোনো প্যাথলজিক্যাল কিট ও রিএজেন্ট ছিল না। ডেঙ্গু রোগী আসা শুরু করলে প্রথম পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের বিশেষ অনুদানে কিছু কিট ও রিএজেন্ট কেনা হয়। গত এক সপ্তাহের পরীক্ষায় সেগুলো শেষ হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এখনও প্রয়োজনীয় কিট ও রিএজেন্ট আসেনি। তবে খুব শিগগির পাওয়া যাবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. লুৎফর রহমান বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা দুইটি ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। তাদের চিকিৎসায় সার্বক্ষণিক চারজন ডাক্তার নিয়োজিত রয়েছেন। ওই কর্মকর্তার মতে, তারা আন্তরিকভাবে ডেঙ্গু রোগ নির্ণয় এবং রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় সামান্য জ্বর ও ঠাণ্ডা কাশি নিয়েও অনেকে ডেঙ্গু রোগ নির্ণয় করতে হাসপাতালে যাচ্ছেন। এ কারণে হাসপাতালে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে। বিপুল সংখ্যক ব্যক্তির রোগ নির্ণয় করতে তাদের অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে রাজধানীর মগবাজারে অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের হাতে থাকা কিটে আর এক থেকে দুই দিন চলবে। নতুন করে তা আনতে আরো সাতদিন লাগবে। রোগী আসা অব্যাহত থাকলে সংকট হতে পারে।

https://www.mzamin.com/article.php?mzamin=184023