২৮ জুলাই ২০১৯, রবিবার, ৩:৩০

শাহজালালে বিশেষ সতর্কতা

মশা নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মশা নিধনে চলছে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম। ক্র্যাশ প্রোগ্রামের বাইরে নতুন করে ১০ জনকে মশক নিধনে নিয়োগ করা হয়েছে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলছে মশা মারার কাজ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ক্র্যাশ প্রোগ্রাম ও জনবল বাড়িয়ে মশক নিধন চালালেও যাত্রী, দর্শনার্থীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ। ঢাকা শহরে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার কারণে শাহজালালে দেশি-বিদেশি বিমান যাত্রীরা এখন আতঙ্কিত। এডিস মশার কামড় খেয়ে কখন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন এনিয়ে চিন্তায় আছেন তারা। বিষয়টি সর্ম্পকে জানতে চাইলে শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন আবু সাঈদ মেহবুব খান মানবজমিনকে বলেন, আমরা মশা নিধনে সারা বছরের অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করি।
অনুযায়ি কাজ করি। শীতকালে মশা মারার উপর বেশি জোর দেয়া হয়। কারণ ওই সময় মশার প্রজনন বেশি হয়। তিনি বলেন, ক্র্যাশ প্রোগ্রামে নিয়োজিত জনবলের বাইরে নতুন করে আরও ১০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এখন দিন রাত মশা নিধনে কাজ করছে আমাদের কর্মীরা।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বছরে ৫০ লাখ যাত্রী আসা-যাওয়া করেন। এদের মধ্যে ৪০ লাখই আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করেন। অর্ধ শতাধিক ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। বিমানবন্দর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন যাত্রীদের অভিযোগ, শাহজালাল আর্ন্তজাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর টার্মিনালে মশা ভনভন করে। বিভিন্ন দেশ থেকে ফ্লাইট আসা মাত্রই উড়োজাহাজে মশা ঢুকে যায়। উড়োজাহাজে মশা থাকায় নির্ধারিত সময়ে ফ্লাইট ঢাকা ছেড়ে যায়নি এমন ঘটনাও ঘটেছে। মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উৎপাতের কারণে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ছাড়তে নির্দিষ্ট সময় থেকে দুই ঘণ্টা দেরি হয়েছিল। ওই দিন রাতে উড়োজাহাজটি রানওয়ের দিকে এগোলেও ফিরে আসতে হয়। কারণ মশার উৎপাতে বসে থাকতে পারছিলেন না যাত্রীরা। প্রায় দুই ঘণ্টা কেবিন ক্রুরা মশা নিধন শেষ করলে ফের ফ্লাইটটি রওনা দেয়। রাত সাড়ে ১২টায় ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার পথে ফ্লাইটটি রওনা দেয়ার কথা ছিল। দুই ঘণ্টা পর রাত ২টা ৪৬ মিনিটের দিকে ওই উড়োজাহাজ রওনা দেয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজে ওঠার সময় মশাও ঢুকে পড়ে। মশার উৎপাতে যাত্রীরা বিরক্ত হয়ে অভিযোগ করেন কেবিন ক্রুদের কাছে। তাই অনেক সময় বাধ্য হয়ে রানওয়ের পরিবর্তে বে এরিয়ার উড়োজাহাজটি ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হন পাইলট।

এদিকে এ বছরের ১২ ই মার্চ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী, দর্শনার্থীসহ অন্যদের মশার উৎপাত থেকে রক্ষায় কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানাতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। এ রিটের বিপরীতে হাইকোর্ট রুল জারি করে। রিট আবেদনে যুক্তি উল্লেখ করে বলা হয়, সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা রাষ্ট্রের অন্যতম কর্তব্য। অথচ কর্তৃপক্ষের মশা নিয়ন্ত্রণে নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতা সমর্থনযোগ্য নয়। এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।

https://www.mzamin.com/article.php?mzamin=183371