২৪ জুলাই ২০১৯, বুধবার, ২:৩২

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত

মহামারীর দ্বারপ্রান্তে ডেঙ্গু

২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৪৭৩ * এডিস নিয়ন্ত্রণের জন্য বিদেশ থেকে জিনোটাইপ মশা আনার উদ্যোগ * সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা

দেশে প্রতিদিনই ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

রাজধানীর কোনো কোনো পরিবারের সব সদস্যই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে ডেঙ্গু রাজধানীর সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে গেছে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল বিভাগে।

রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ইতিমধ্যে দেশে ডেঙ্গুর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে একে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

ডেঙ্গুর এই অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতিকে ভয়াবহ হিসেবে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে সেটিকে পুরোপুরি মহামারী বলা না হলেও এর দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছে।

অর্থাৎ যে কোনো সময় এর বিস্তার মহামারীতে রূপ নিতে পারে। এখনই জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। কারণ বছরের এই দুই মাস থেমে থেমে বৃষ্টি হয়।

এতে অনুকূল পরিবেশ পাওয়ায় এডিস মশার প্রজনন বেড়ে যায়। ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশা এডিস নিয়ন্ত্রণে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন যখন ব্যর্থ হয়েছে, তখন বিদ্যমান পরিস্থিতি সামাল দিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বিদেশ থেকে জিনোটাইপ মশার ডিম আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে অধিদফতর।

এই ডিম থেকে জন্ম নেয়া জিনোটাইপ মশা এডিসের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস করবে। এতে স্বাভাবিক কারণেই ডেঙ্গুর বিস্তার কমে আসবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ দিনে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজার ৬৩৭ জন। সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত মৃত্যু ঘটেছে ৫ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৪৭৩ জন।

তবে বেসরকারি হিসাবে এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের। সবমিলিয়ে দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও এখনই এটাকে পুরোপুরি মহামারী বলতে নারাজ বিশেষজ্ঞসহ সরকারের সংশ্লিষ্টরা।

তাদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতি অবশ্যই আউটব্রেক (প্রাদুর্ভাব)। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরে ও মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিদ্যমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরেকটু বেড়ে গেলে সরকারিভাবেই ডেঙ্গুকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা দেয়া হতে পারে।

ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে মানুষকে বাঁচাতে ইতিমধ্যে চিকিৎসকদের জন্য তৈরি করা হয়েছে পকেটবুক আকারে গাইডলাইন। যাতে তারা (চিকিৎসক) ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করতে পারেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ সাধারণ ও মারাত্মক ধরনের ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

বর্তমানে প্রতি বছর মারাত্মক ধরনের ডেঙ্গুজ্বরে কমপক্ষে ৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন। প্রতি মিনিটেই বিশ্বের কোথাও না কোথাও কেউ না কেউ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তাদের অধিকাংশই শিশু। আক্রান্তদের মধ্যে বছরে ২২ হাজার ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়।

মহামারী পর্যায়ে ডেঙ্গু : দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রায় মহামারী পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এমন মন্তব্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। তারা জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রচলিত যে মহামারীর সংজ্ঞা সেখানে বলা হয়েছে, ‘কোনো রোগ কোনো ভৌগোলিক এলাকায় এর আগে ছিল না, হঠাৎ করে সেই এলাকায় যদি আবির্ভাব ঘটে, তাহলে ওই রোগের জীবাণু ওই এলাকার মানুষের শরীরে অধিক হারে সংক্রমণ ঘটিয়ে মৃত্যুতে পতিত করতে পারে।

এতে ভয়াবহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে, যদি কোনো প্রতিষেধক না থাকে তাহলে রোগের ভয়াবহতা বাড়তে পারে, চিকিৎসা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা হওয়ায় মৃত্যু বাড়তে পারে। কোনো রোগের ক্ষেত্রে এসব বিবেচনায় নিয়ে মহামারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

এ ক্ষেত্রে ডেঙ্গু বাংলাদেশে নতুন না হলেও এর কোনো প্রতিষেধক নেই এবং এ রোগে ব্যাপক জনদুর্ভোগ ও মৃত্যু ঘটা অস্বাভাবিক নয়। তাই এই অবস্থাকে মহামারী হিসেবে উল্লেখ করা যায়।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করে যুগান্তরকে বলেন, ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রায় মহামারী হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে।

সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে অবনতির শঙ্কা : চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে। এছাড়া ডেঙ্গুজ্বরের ধারাবাহিকতা আগামী নভেম্বর মস পর্যন্ত চলমান থাকবে বলে মন্তব্য করেন অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে স্বাভাবিক নিয়মে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এবার ‘আর্লি ডেঙ্গু ব্রেক আউট (আগাম ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব)’ হয়েছে। সেজন্য এই সময়ে রোগী এত বেশি হয়েছে। তাই নিয়মানুযায়ী ওই সময়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

নতুন করে আক্রান্ত : স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার যুগান্তরকে জানান, গত ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭ হাজার ৭৬৬ জন।

এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৩৮ জন এবং বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ১ হাজার ৮২৩ জন। তবে শুধু গত ২৩ দিনেই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজার ৬৩৭ জন। জুন মাসে এই সংখ্যা ছিল ১৭৬১ জন।

মৃত ৫ রোগীর মধ্যে ২ দু’জন এপ্রিল মাসে, দু’জন জুন মাসে এবং চলতি মাসে একজনের মৃত্যু হয়। ডেঙ্গু আক্রান্তের এই সংখ্যা শুধু রাজধানীর ১২টি সরকারি হাসপাতাল এবং ২৫টি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আর মৃতের সংখ্যাও সরকারি হিসাবের তুলনায় অনেক বেশি। তাদের মতে, এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতি যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে অতীতের সব রেকর্ড ইতিমধ্যে ছাড়িয়ে গেছে।

এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সরকারি যে হিসাব সেটি ঠিক নয়।

অন্যদিকে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর যে সরকারি ও বেসরকারি হিসাব উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো একটিও ঠিক নয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী গত বছর সর্বোচ্চ ১০ হাজার ১৮৪ জন সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তার মধ্যে ২৬ জন মারা যান।

এর আগে ২০০২ সালে ৬ হাজার ২৩২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল। তবে চলতি জুলাই মাসের প্রথম ২৩ দিনের চিত্র দেখে দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহতার চিত্র পাওয়া যায় মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের।

এছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা এবং বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ইতিমেধ্য ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। কন্ট্রোল রুমের কাছে ঢাকার বাইরে এ পর্যন্ত ৬৫ জনের তথ্য রয়েছে। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা একশ’ ছাড়িয়ে যাবে।

এডিস নিয়ন্ত্রণে জিনোটাইপ মশা : ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জিনোটাইপ মশা আমদানির কথা ভাবছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণালব্ধ এই জিনোটাইপ মশা ব্যবহার করে এর আগে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিজিসহ বেশ কয়েকটি দেশ এডিস নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ যুগান্তরকে বলেন, মঙ্গলবার সকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের বলেছি, ‘জিনোটাইপ মশা আমদানি, আমাদের দেশে এর কার্যকারিতা এবং সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে। তারা সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

তিনি বলেন, জিনোটাইপ মশা মূলত পুরুষ হয়ে থাকে। এসব মশা ছেড়ে দেয়া হলে সেগুলো এডিস স্ত্রী মশার সঙ্গে মিলিত হয়। কিন্তু ওই স্ত্রী মশা ডিম পাড়লেও সেটা থেকে লার্ভা হয় না। ফলে এই প্রক্রিয়ায় ধীরে ধীরে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এর কার্যকারিতা ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ পরিলক্ষিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দুই সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তলব : ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২ প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় তাদের আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়। বিচারপতি তারিক-উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দী সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।

এর আগে দেয়া আদেশ অনুযায়ী ঢাকার ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়াসহ এডিস মশা নির্মূলে ২ সিটির পদক্ষেপের প্রতিবেদন দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে তাদের তলব করে এ আদেশ দেন আদালত।

এছাড়া এডিস মশা নির্মূলে এবং ডেঙ্গ-চিকুনগুনিয়াসহ এ রকম রোগ ছড়ানো বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না এবং এই ধরনের রোগ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন আদালত।

সিটি কর্পোরেশন ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতো না : ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গু প্রধানত ঢাকা শহরে সীমাবদ্ধ ছিল। সে সময় ঢাকায় এডিস মশার প্রজননস্থল পুরোপুরি ধ্বংস করা গেলে ডেঙ্গুর বিস্তার রোধ করে তা সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো, পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হতো না।

মঙ্গলবার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত ‘দেশব্যাপী ডেঙ্গুর বিস্তার : জাতীয় কর্মপরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।

বক্তারা শিগগিরই ডেঙ্গু প্রতিরোধে একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সেক্ষেত্রে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনের মতো ডেঙ্গুপ্রবণ দেশগুলো থেকে সহযোগিতা গ্রহণের পরামর্শ দেন তারা।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় একদিনে নতুন আরও ৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রামে। বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালের মধ্যে ইউএসটিসির বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ১ জন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হসপিটালে ৩ জন, পার্কভিউ হসপিটালে ৩ জন ও চট্টগ্রাম ন্যাশনাল হাসপাতালে ১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়।

মঙ্গলবার বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতাল থেকে এ তথ্য দেয়া হয় বলে সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে চলতি বছরে চট্টগ্রামে ৩০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হল।

সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী যুগান্তরকে বলেন, ‘নগরীতে মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ যাতে ছড়াতে না পারে; এজন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে লিফলেট বিতরণ করা হয়।

এছাড়া নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সামনে ডেঙ্গু সচেতনতামূলক ব্যানার টানাতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও নগরীর ৯টি আরবান ডিসপেনসারিতেও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বরিশাল ব্যুরো জানায়, শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন যুগান্তরকে জানান, এখন পর্যন্ত বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে আমরা ৮ জন রোগীকে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করেছি। যার মধ্যে ২ জন এরই মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে আরোগ্য লাভ করে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন।

বাকি ৬ জন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীদের আমরা মেডিসিন ওয়ার্ডে রেখেই চিকিৎসা দিচ্ছি। সব সময় ফলোআপে রাখছি, বিভিন্ন ধরনের সিমটম রয়েছে এসব রোগীর। তবে এটা এ অঞ্চলে মহামারী আকার ধারণ করেনি।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/202492