৯ জুলাই ২০১৯, মঙ্গলবার, ১২:৪০

নারায়ণগঞ্জে ৬ মাসে ১৭৮ লাশ হত্যাকাণ্ড ৪৪ ॥ নীরব আতংক

তমিজউদ্দিন আহমদ, নারায়ণগঞ্জ থেকে : বিগত সময়ের মতো এখনও জেলা জুড়ে চলমান রয়েছে লাশের মিছিল। আর এ লাশের মিছিল থেকে বাদ পড়ছে না সদ্য ভুমিষ্ট হওয়া শিশুটিও। পুরো জেলায় বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ক্রমাগত আলোচিত থাকায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডগুলো কিছু দিন আলোচনা থাকার পরও চাপা পড়ে যায়। একের পর এক এসব হত্যাকাণ্ডে নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে নীরব আতংক।

গত ৬ মাসে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় হত্যা, রহস্যজনক মৃত্যু, দূর্ঘটনা, আত্মহত্যাসহ বিভিন্ন কারণে লাশের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৭৮টি। এর মধ্যে হত্যকান্ডের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৪ জনের। এ সকল ঘটনার অধিকাংশই পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী স্বামীকে স্বামী স্ত্রীকে, ভাই ভাইকে কখনও আবার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকান্ড সংঘটিত হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই এ ধরণের ঘটনা ঘটছে নারায়ণগঞ্জে। কোনোটির সমাধান মিলছে আবার কোনোটির রহস্য উন্মোচন হবার আগেই ধামা পড়ে যাচ্ছে ঘটনার অন্তরালে। এদিকে এ সকল ঘটনায় বাংলাদেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা এখন মূর্তমান আতঙ্ক।

সংশ্লিষ্টদের মতে, একদিকে যেমন সামাজিক অবক্ষয় ঘটছে অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যথাযথ তৎপরতার অভাবে এ ধরনের ঘটনার বার বার ঘটছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিমত, নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার্থে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে এবং আগের তুলনায় এ ধরণের ঘটনা কমে এসেছে।

গণমাধ্যম হতে সংগৃহীত তথ্যানুসারে, গত ৬ মাসে পুলিশের উদ্ধার করা মরদেহের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৮ টি। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ২৯টি, ফেব্রুয়ারিতে ২৮টি, মার্চে ৪১টি, এপ্রিলে ৩২টি, মে মাসে ১৭টি আর সবশেষ জুন মাসে ৩১টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১৭৮ লাশের মধ্যে শুধু হত্যাকা-ের ঘটনাই রয়েছে ৪৪টি। এর মধ্যে আলোচিত হত্যাকা- রয়েছে ১৫টি।

বিভিন্ন গণমাধ্যম হতে গৃহীত তথ্যানুসারে, ৩০ জুন রূপগঞ্জে নুরবানু নামে এক বিড়ি শ্রমিককে করাত দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত নুর বানুর পরিবারের দাবি, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে পাঁচ জনকে আটক করে পুলিশ।

২৬ জুন রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও ইউপি সদস্য বিউটি আক্তার কুট্টি করে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহতের ছেলে পারভেজ আহমেদ জানান, ডায়াবেটিসের রোগী হওয়ায় বিউটি বেগম কুট্টি প্রতিদিন ভোরে হাঁটতে বের হন। ২৬ জুন সকালে হাঁটতে বের হলে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে চলে যায়। পরে সকালে সাড়ে ৬ টায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা জানালে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এদিকে এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। হত্যার কারণ হিসেবে পুলিশ এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, মূলত দোকান ভাঙচুড় ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে।

অন্যদিকে ১৯ জুন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি চৌধুরীপাড়া এলাকায় ‘জ্বীন তাড়ানোর চিকিৎসার’ সময় মারা যান শিখা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কবিরাজ ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী জেসমিনকে আটক করা হয়েছে। ফারুকের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলব থানার মান্দার আলী এলাকায়। তারা সিদ্ধিরগঞ্জে মিজমিজি চৌধুরীপাড়ার একটি বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকত।

জানা যায়, ঈদের আগ থেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন ঐ গৃহবধূ এমন অবস্থায় চিকিৎসার জন্য গত ১৫ জুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে এক সপ্তাহের ঔষধ দেওয়া হয়। ঔষধে খাওয়ানোর একদিন পর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় প্রতিবেশীদের পরামর্শে ১৬ জুন কবিরাজ ফারুক হোসেনকে বাসায় ডেকে আনা হয়। শাহনাজকে দেখে ‘খারাপ জ্বীনের আছর করেছে’ বলে জানায় কবিরাজ। এক সপ্তাহের কবিরাজী চিকিৎসায় ভালো করে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে দশ হাজার টাকায় চুক্তি করেন তিনি। তবে কথিত চিকিৎসায় প্রথমদিনে কোনো উন্নতি না হওয়ায় নিজ বাসায় নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেন কবিরাজ ফারুক। ১৮ জুন সন্ধ্যায় শিখাকে কবিরাজের বাসায় পাঠান অভিভাবকরা।

বাসায় নিয়ে তারা চিকিৎসার নামে শিখার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায় ফারুক ও তার স্ত্রী জেসমিন। এক পর্যায় নির্যাতনের মুখে শিখার মৃত্যু হয়। নিহতের মা কবিরাজের বাসায় গিয়ে মেয়ের মরদেহ ফ্লোরে চাদর মোড়ানো অবস্থায় দেখতে পান।

নিখোঁজের ১৫ দিন পর ৭ জুন সোনারগাঁ এলাকা থেকে বালু খুঁড়ে মিনু আক্তার (৩৫) নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যাকা-ের একমাত্র আসামী নিহতের সাবেক স্বামী জুনায়েদ আহমেদ (৪০) কে আটক করা হয়। তার জবানবন্দিতে উঠে আসে লোমরহস্যক ঘটনা। ৪ বছর পূর্বে ২০১৬ সালে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে মিনু আক্তারের সাথে মোঃ জুনায়েদ এর দ্বিতীয় বিবাহ হয়। পরে ২০১৮ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তবে বিচ্ছেদের পরেও জুনায়েদের সাথে মিনু আক্তারের অনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল।

গত ২১মে রাত ৩টা দিকে জুনায়েদ মিনুকে ফোন দিয়ে তার ভাড়া বাসায় আসতে বলে। মিনু আসলে সেদিন জুনায়েদ তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। রাতে মিনু ঈদের মধ্যে কাপড়ের ব্যবসা করার জন্য জুনায়েদের কাছে ২০হাজার টাকা দাবি করলে জুনায়েদ মিনুকে চড়-থাপ্পড় দেয়। ঝগড়ার এক পর্যায় ঘরের মধ্যে থাকা একটি বাঁশের লাঠি দিয়ে মিনু আক্তারকে মাথায় আঘাত করে। পরে জুনায়েদ গলা টিপে শ্বাসরোধ করে তাঁর হত্যা নিশ্চিত করে। হত্যার পর ঐ দিন রাত ৪টার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরের কচুরীপানার ভেতরে রেখে দিয়ে জুনায়েদ ঘরে ফিরে আসে। পরবর্তীতে জুনায়েদ সকালের দিকে তার কর্মস্থলে চলে যায়। ২১মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরে কচুরীপানা থেকে মিনু আক্তারের মৃতদেহ উঁঠিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে বাড়ির পাশের ড্রেজারে দিয়ে ফেলা বালি গর্ত করে মিনুর লাশ গুম করে। পরে সুকৌশলে স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যায় জুনায়েদ।
মে মাস

১১ মে বন্দর উপজেলায় আমপাড়াকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে আবুল হোসেন (৫০) নামে এক দিনমজুরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে পরিবারের লোকজনেরা। নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানা যায়, আবুল হোসেন পরিবার নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতেন।

১১মে সকালে গাছ থেকে আম পাড়া নিয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। এর এক পর্যায়ে আবুল হোসেনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে কাজল মিয়া বাদী হয়ে বন্দর থানার মামলা দায়ের করেন।

৫মে একই দিন আড়াইহাজার আমেনা বিবি (৭০) নামে বৃদ্ধার গলায় মশারি পেঁচানো হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আগুনে পোড়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে কালাপাহাড়িয়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ বিজয় কৃষ্ণ কর্মকার জানান, উলুকান্দী এলাকার চকের মধ্যে একটি বাড়িতে একাই বসবাস করতেন বৃদ্ধা আমেনা বিবি। শনিবার মধ্যরাতে বৃদ্ধার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এসে দেখতে পায় বৃদ্ধার হাত-পা,মুখ বাঁধা অবস্থায় চকির উপরে আগুনে পুড়ছে। আগুন নেভানোর আগেই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এপ্রিল মাস

১২ এপ্রিল টানবাজার সাহাপাড়া এলাকায় বৃষ্টি চৌধুরী (২১) নামের গৃহবধূর হত্যার অভিযোগ পাওয়া যায়। জানা যায়, দুই আগে কুমিল্লার মুরাদনগর এলাকার বাসিন্দা শ্যামল চৌধুরীর মেয়ে বৃষ্টির সঙ্গে বিয়ে হয় নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তা সুদীপ রায়ের। বিয়ের সময় ১৫ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণলংকার দেয় বৃষ্টির পরিবার।

কিন্তু বিয়ের পর সুদীপের পরিবার আরো যৌতুকের জন্য বৃষ্টিকে মারধর করা শুরু করে। এসব নিয়ে কয়েকবার বিচার হলেও কোনো স্থায়ী সমাধান করতে পারেনি কেউ। অবশেষে ১২ এপ্রিল শ্বশুড় বাড়ি থেকে বৃষ্টির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পরিবারের

অভিযোগের ভিত্তিতে বৃষ্টির স্বামী ও শ্বশুরকে আটক করা হয়। ১১ এপ্রিল রূপগঞ্জে প্রিয়া বিশ্বাস নামে গৃহবধূকে হত্যার পর তার পাষন্ড স্বামী লাশ গুম করার চেষ্টা করা হয়।

অন্যদিকে ১০এপ্রিল ফতুল্লায় ঝুটের গোডাউন থেকে নিখোঁজ ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান সেলিম চৌধুরীর (৫২) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, ব্যবসায়ের সুবাদে সেলিম চৌধুরী প্রায়ই মোহাম্মদ আলী আর্থিকভাবে সহায়তা করতো। গত ৩১মার্চ দুপুরে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী সেলিমকে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে ঐ গোডাউনে ডাকে। সেলিমকে মোহাম্মদ আলী তার কথা মত ২ লাখ ৬ হাজার টাকা দেয়। টাকা দেয়ার সময় কর্মচারী সে, লেবার আলী ও আরো একজন সামনেই উপস্থিত ছিলো। সেলিম টাকা নিয়ে বের হওয়ার সময় আলী তার ঘাড়ে রড দিয়ে সজোরে আঘাত করে। আঘাতের পরপরই সেলিম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার মুখ, হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। পরে আহত অবস্থায় ৩১ মার্চ রাতেই মোহাম্মদ আলীর নির্দেশে গোডাউনের একপাশে সেলিমকে বস্তাবন্দি করে মাটি চাপা দিয়ে পুঁতে রাখা হয়।

১এপ্রিল জামতলা ডাক্তার গলি এলাকার ময়লার ভাগাড় থেকে কন্যা নবজাতকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধারণা করা হচ্ছে, রাতের কোনো এক সময়ে মেয়ে নবজাতকটিকে কেউ হত্যা পর দুই টুকরো করে ময়লার ভাগাড়ের মধ্যে ফেলে যায়। নবজাতকটির পরিচয় আজও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
মার্চ মাস

২৯ মার্চ শহরের টানবাজারে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ৫ সন্তানের জননী আরজু বেগমকে (৪০) মারধর ও বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার প্রতিপক্ষের লোকজন। ১২ মার্চ আড়াইহাজারে নূরে আলম ওরফে নূরা (৩৫) নামের এক অটো রিকশা চালককে হত্যা করা হয়।

জানা যায় ১২ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্থানীয় শফিকের গ্যারেজে গাড়ির চাকা ঠিক করতে যায়। চাকা ঠিক করাকে কেন্দ্র করে দুইজনের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয় ওই দুইজনের মধ্যে। পরে গ্যারেজ মালিক নূরাকে সজোরে আছাড় দেয়। এতে নূরা গাছের উপরে পরে গুরুতর আহত হয়। পরে খবর পেয়ে স্বজনরা আহত নূরাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

১৩মার্চ রূপগঞ্জে ভোলাব ইউনিয়নের টাওড়া এলাকায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা সোহেল মিয়া (২৭) ছাত্রলীগ নেতার পায়ের রগ কেটে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
২৮মার্চ সিদ্ধিরগঞ্জে পারিবারিক কলহের জের ধরে ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাই খুন হয়। ২ মার্চ সিদ্ধিরগঞ্জের এনায়েতনগর এলাকার আমিনুল ইসলাম ওরফে কালুকে (২৫) স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে হত্যার অভিযোগ উঠে।
ফেব্রুয়ারী মাস

১৯ ফেব্রুয়ারি রূপগঞ্জে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার ইটভাটা থেকে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, রফিকুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ৭ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জে নাঈমা আক্তার (২৩) নামে এক গৃহবধুকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী শহিদুল ইসলাম (৩০) এর বিরুদ্ধে।
জানুয়ারী মাস

৩১ জানুয়ারী রূপগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরধরে মামুন দেওয়ান নাছির (২১) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠে। ২৮ জানুয়ারী শহরের ডিআইটি কলোনির পিছন থেকে সিয়াম (১৭) নামে এক হোসিয়ারী শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ব্রেসলাইট নিয়ে ঝগড়ার জের ধরে বন্ধুদের হাতে খুন হয় সিয়াম।

২০জানুয়ারী সকালে আড়াইহাজারের সুলতান সাদী এলাকার শ্মশানঘাট থেকে মোজ্জামেল হোসেন (২৫) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারকৃত যুবক জাঙ্গালিয়া এলাকার অলিউল্ল¬াহর ছেলে। তবে কীভাবে যুবকের মৃত্যু হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।

১৯জানুয়ারী বন্দরে নাঈমা রহমান (৩৭) নামে গৃহবধূকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নাঈমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ জানায়, বন্দরের সোনাকান্দা এলাকার মাবিয়া ভবনের দ্বিতীয় তলায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে থাকতেন নাঈমা। তাঁর স্বামী আনিসুর রহমান থাইল্যান্ড প্রবাসী।

সেদিন নিহতের মেয়ে বন্দর গার্লস স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী আনুশী স্কুল থেকে দুপুরে বাসায় ফিরে দরজার বাইরে থেকে তালা লাগানো দেখতে পায়। পরে সে তার কাছে থাকা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে। পরে সে বেড রুমে গিয়ে তার মাকে রক্তাক্ত ও আগুনে পুড়ছে।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সুবাস চন্দ্র সাহা বলেন, ‘নিহতের মাথায় ধারালো অস্ত্রের বেশ কয়েকটি আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বটি ও একটি মানিব্যাগ আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। যে আলামতের সংগ্রহ করা হয়েছে তাতে

আমরা ঘটনাটি শিগগিরই উদঘাটন করতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আশপাশের লোকজনই এই হত্যার সঙ্গে জড়িত রয়েছে কিনা না তাও আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

১৭ জানুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জে ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় বলাৎকারের পর তানজিল নামে এক শিশুকে হত্যার পর ড্রামের ভেতরে গুম করে রাখে। এ ঘটনায় বাড়ির কেয়ারটেকার নাজমুল ইসলাম রাজুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর সে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে।

অন্যদিকে ১৪ জানুয়ারি নগর খানপুরের পুকুরপাড় এলাকা একটি ময়লার ভাগাড় থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার করে এলাকাবাসী। ১২ জানুয়ারী রূপগঞ্জে ইভটিজিংয়ে বাঁধা দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসলাম হোসেন (১৪) নামে ৭ম শ্রেণির এক ছাত্রকে ছুরিকাঘাত হত্যা করে এক যুবলীগ কর্মী।

https://www.dailysangram.com/post/382085