৩০ জুন ২০১৯, রবিবার, ১:৩৪

অমানবিক...বর্বর...নৃশংস

চট্টগ্রামে এক গৃহকর্মীর শরীরে গৃহকর্ত্রীর নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন দেখে বিস্মিত হয়েছে পুলিশ। ওই গৃহকর্মীর মুখ ও হাতসহ বিভিন্নস্থানে খুনতি দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া কিংবা কেটে দেওয়ার দাগ দেখে চরম অমানবিকতার স্পষ্ট তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় গৃহকত্রী নাছিমা আক্তার জেসিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নির্যাতনের ঘটনায় বাদী হয়েছেন শাহিনুর (ছদ্মনাম) নামের গৃহকর্মী। শাহিনুরের অভিযোগ, তাকে দিয়ে অসমাজিক কার্যকলাপও চালাতেন নাছিমা আক্তার। এতে শাহিনুর রাজি না হলেও পিটুনি দিতেন। সর্বশেষ গত বুধবার বিকেলে মেহমানকে চা দেওয়ার সময় সামান্য দুর্ঘটনার কারণে অমানুষিক নির্যাতন করেন নাছিমা। শনিবার মধ্যরাতে ডবলমুরিং থানায় এই ঘটনায় মামলা দায়েরের পরই নাছিমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

শাহিনুর রবিশাল জেলার বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই চট্টগ্রামে থাকেন তিনি। এ ছাড়া বেশ কয়েক বছর ধরেই নাছিমার বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করছেন। আর গ্রেপ্তারকৃত গৃহকর্ত্রীর নাছিমা আক্তার জেসি পাহাড়তলী থানার মো. জমির উদ্দিনের স্ত্রী। তবে তারা এখন ডবলমুলিং থানার নিরিবিলি আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে বাস করেন।

ঘটনার বিষয়ে নগর পুলিশের ডবলমুলিং জোনের সহকারী কমিশনার আশিকুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, মামলার বাদীর মুখ, হাত ও শরীরে বিভিন্ন অংশে অমানুষিক নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে। যা অনামনিক। তাই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।

ঘটনার বিষয়ে শাহিনুর তার এজহারে উল্লেখ করেন, তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে নাছিমার বাসায় গৃহকর্মীর কাছ করছেন। প্রায়ই তাকে দিয়ে অসামাজিক কাজ করানো হতো। রাজি না হলে পিটুনি দেওয়া হয়। নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি একবার বাসা ছেড়ে চলে যান। কিন্তু মামলার হুমকি দিয়ে পুনরায় তাকে বাসায় ফিরিয়ে আনেন নাছিমা। তারপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেন।

সর্বশেষ গত বুধবার বিকেলে ওই বাসায় আমেনা বেগম, সোমা বেগম, সনিয়া বেগমসহ কয়েকজন অতিথি আসেন। এই অতিথিদের চা দেওয়ার সময় 'কাপে অর্ধেক চা দেওয়া হয়েছে' এমন অজুহাতে তার শরীরে গরম চা নিক্ষেপ করেন নাছিমা আক্তার। পরে তাকে বটি দিয়ে হাতে ও মাথায় এলোপাতাড়িভাবে কোপ দেয়। শাহিনুর যাতে চিৎকার করতে না পারে, সেই জন্য তার মুখে ওড়না মুখে গুঁজে দেয় নাছিমা। আঘাতের পর শাহিনুর বেহুশ হয়ে পড়লে তাকে ডাক্তারের কাছে নেওয়া হয়। কিন্তু কাউকে কিছু না বলার জন্য নিষেধ করেন নাছিমা।

মারধর ঘটনার চার দিন পর গতকাল শনিবার ওই বাসায় বুধবার আসা অতিথিরা পুনরায় বেড়াতে এলে শাহিনুরকে দেখেন। তার হাতে শরীরে ক্ষত বিক্ষত দাগ দেখে তারাই ডবলমুরিং থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে শাহিনুরকে উদ্ধার ও আসামি নাছিমাকে গ্রেপ্তার করে।

https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2019/06/30/785734