শ্রেণী কক্ষে ঢুকে ছাত্রীকে লাঞ্চিত করলো বখাটে, বিচারে দাবি শিক্ষার্থীদের - সংগৃহীত
৩০ জুন ২০১৯, রবিবার, ১:১৮

শ্রেণী কক্ষে ঢুকে ছাত্রীকে লাঞ্চিত করলো বখাটে, বিচারে দাবি শিক্ষার্থীদের

বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে শিক্ষার্থীদের সামনে বহিরাগত এক বখাটে প্রবেশ করে ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্রীকে হাত ধরে টেনে হেচড়ে বাইরে নিয়ে যৌনহয়রানী ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে লোক দেখানো শালিসে আপোষ-মিমাংসা করার ঘটনায় শিক্ষার্থী ও এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নটাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে।

ওই ছাত্রী জানায়, গত বৃহস্পতিবার সকালে স্কুল চলাকালীন সময়ে উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নটাপাড়া গ্রামের সুকুমার সরকারের ছেলে সুজন সরকার ক্লাস রুমে প্রবেশ করে তাকে জোড়পূর্বক হাত ধরে টানা হেচড়া করে ক্লাসের বাইরে নিয়ে ঝাপটে ধরে। যা স্কুলের শত শত শিক্ষার্থীরা দেখে। আমি লজ্জায় এখন স্কুলে গেলেও কারো সামনে যেতে পারি না। আমি তার বিচার দাবী করছি।

স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রকাশ্যে দিবালোকে স্কুলের শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করে একজন বখাটে ছাত্রীর হাত ধরে টানা হেচড়া করাসহ জাপটে ধরে যৌন হয়রানী করেছে। এটা সামান্য লোক দেখানো বিচার করা হয়েছে। তাকে আইনে আওতায় আনা উচিত ছিল। সহজে পার পেয়ে যাওয়ার কারণে পুনরায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে বলেও তারা শঙ্কা প্রকাশ করে।

তারা আরো জানায়, নটাপাড়া স্কুলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে পিটিয়ে জখম করাসহ ইতিপূর্বে ২ শিক্ষার্থীকে কোপানো হয়। কুপিয়ে থানা পুলিশের কাছে ধরা দেয়। যা দেশে একটি আলোচিত ঘটনায় রুপান্তিত হয়। আজ অপরাধ করে সামান্য বিচারে বেচে গেলেও আগামী বড় ধরনের অপরাধ করতে দ্বিধাবোধ করবে না। তারা প্রশাসনের নিকট দ্রুত ঘটনার বিচার দাবী করে।

নাম না প্রকাশের শর্তে একজন ইউপি সদস্য বলেন, প্রকাশ্যে স্কুলের ক্লাস রুমে ঢুকে একজন ছাত্রীর হাত ধরে টানাটানিসহ যৌনহয়রানী ঘটিয়ে যে অপরাধ করেছে, তাকে প্রশাসনে সোপর্দ করা উচিত ছিল। এটা না করে লোক দেখানো শালিস করেছে। কাজটি ঠিক হয়নি।

স্কুলের এক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রকাশ্যে দিবালোকে একজন শিক্ষার্থীকে যৌনহয়রানী করে পার পেয়ে যাবে এটা অন্যায়। আমরা যারা আজ তাকে বাঁচিয়েছি, কাল আমরাই তার হাতে লাঞ্ছিত হবো। তাকে প্রশাসনে সোপর্দ না করে দ্রুত দায়সারা ভাবে শালিস করে বাঁচানো হয়েছে। তার বিচার দাবী করছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, এলাকার সুজন সরকার নামের এক ছেলে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুমে ঢুকে স্কুল ছাত্রীকে হাত ধরে টানাটানি করে। ওই ঘটনায় তাৎক্ষনিক ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শামছুর রহমান ও স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে আপোষ মিমাংসা করে দিয়েছেন। এ জন্য প্রশাসনকে কিছু অবগত করিনি।

বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য সামছুর রহমান বলেন, সুজন সরকারকে মারপিট করাসহ অঙ্গিকার পত্রে স্বাক্ষর নিয়ে আপোষ মিমাংসা করে দিয়েছি।

যৌনহয়রানীর ঘটনাটি দায়সারা ভাবে শালিসে আপোষ-মিমাংসা করে দেয়ায় শিক্ষার্থী ও এলাকায় সচেতন মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

http://www.dailynayadiganta.com/dhaka/421572/