২৯ জুন ২০১৯, শনিবার, ৭:৩৫

ডিমের দাম বেড়েছে অপরিবর্তিত সবজি

কোনো কারণ ছাড়াই ডিমের দাম হঠাৎ বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি ডিমের দাম বেড়েছে এক টাকা এবং ডজনে বেড়েছে ১০ টাকা। আর মাসের ব্যবধানে প্রতিটি ডিমের দাম বেড়েছে তিন টাকা এবং ডজনে ৩০ টাকার ওপরে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন ডিমের যে চাহিদা বাজারে সরবরাহ তার থেকে বেশ কম। বাজারে ডিমের যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, খামারিরা তা সরবরাহ করতে পারছেন না। সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় ডিমের দাম বেড়েছে।

বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ঈদের পরও কিছু কিছু বাজারে ডিমের ডজন ৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু তিন সপ্তাহ ধরে দফায় দফায় বেড়ে ডিম এখন অনেকটাই নি¤œ আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। গত এক মাসের ব্যবধানে ডিমের দাম বেড়েছে তিন দফা। এর মধ্যে শেষ দুই সপ্তাহ দাম বৃদ্ধির হার ছিল সবচেয়ে বেশি। সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে কারো নজরদারি না থাকায় ডিমের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা বাজার নজরদারির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ জন্য ভুগতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

খুচরা পর্যায়ে মুদি দোকানে গতকাল ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয় ১০ থেকে ১১ টাকায় প্রতিটি। আর হালি হিসাবে বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৪২ টাকায়। এসব ব্যবসায়ী ডিমের ডজন বিক্রি করছেন ১১৮ থেকে ১২০ টাকা দরে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও খুচরা দোকানগুলোতে ১০৫ টাকা ডজন ডিম পাওয়া গেছে। আর এক হালি পাওয়া গেছে ৩৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের দাম বেড়েছে আরো বেশি। ১২০ টাকা থেকে বেড়ে প্রতি ডজন ডিম গতকাল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। খিলগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী শহিদুল জানান, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়ে গেছে। তবে দাম বাড়লেও বিক্রি কমেনি বলে জানান তিনি।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ সবজির দামই অপরিবর্তিত আছে। ঢেঁড়সের কেজি আগের মতোই বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, পটোল ও ধুন্দুল। অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া পেঁপের দাম কিছুটা কমে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা হয়েছে। করল্লা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিদরে। কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, বেগুন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, গাজর ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি এবং কচুরলতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ২ টাকা। গত সপ্তাহের যেসব বাজারে গোল আলু ১৮ টাকা কেজি বিক্রি হয়, গতকাল সেখানে ২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর যে বাজারে ২০ কেজি ছিল, সেখানে দাম বেড়ে হয়েছে ২২ থেকে ২৫ টাকায়। আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে রসুন ও আদা। খুচরা বাজারে গতকাল আমদানি করা আদা ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় এবং দেশী আদা ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা এবং দেশী রসুনের কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা জানান, রোজার ঈদের পর রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়লেও এখন আবার কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে দেশী পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ৫ টাকা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা এক পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম পাল্লায় কমেছে ১৫ টাকা। এ হিসাবে কেজিতে পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে কমেছে ৩ টাকা। পাইকারি বাজারের মতো খুচরা বাজারেও সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে। গত সপ্তাহে যেসব বাজারে দেশী পেঁয়াজের কেজি ৩৫ টাকা বিক্রি হয়, ওই বাজারে দেশী পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, অর্থাৎ খুচরা বাজারে কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ৫ টাকা।

বাজারে গতকাল প্রতি কেজি বয়লার মুরগি বিক্রি হয় ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। আর গরুর গোশত বিক্রি হয় বাজারভেদে ৫২৫ থেকে ৫৫০ টাকা এবং খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে। কয়েক মাস ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া মাছের দাম এখনো বেশ চড়া। তেলাপিয়া মাছ আগের মতো বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। রুই মাছ ২৮০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/421229