২৮ জুন ২০১৯, শুক্রবার, ৫:৩৯

ম্যাটস ও আইএইচটিতে কেনাকাটায় সাড়ে ২২ কোটি টাকার পুকুর চুরি

আবু সাইদ বিশ্বাস, সাতক্ষীরা: সরকারি কেনাকাটায় সাতক্ষীরায় পুকুর চুরি হয়েছে। ৫শ থেকে ৭শ’ টাকার ফুটবলের সরকারি ক্রয় মূল্য ধরা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। ১ থেকে দেড় হাজার টাকার স্টেথোস্কোপ ও বিপি মেশিনের দাম ধরা হয়েছে ৯ হাজার টাকা। একটি ক্রিকেট ব্যাটের ক্রয় মূল্য ধরা হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। যেন বালিশ কান্ডকে হার মানিয়েছে ফুটবল কান্ড।

এভাবেই উচ্চ মূল্যে প্রায় সাড়ে ২২ কোটি টাকার সরকারিভাবে খেলার সামগ্রী, বইপত্র, আসবাবপত্র ও স্বাস্থ্য বিষয়ক যন্ত্রাংশ ক্রয় করা হয়েছে। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজী (আইএইচটি) ও মেডিক্যাল এ্যাসিসট্যান্ড ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) নামক দুটি প্রতিষ্ঠানে ক্রয় করা হয়। বিপুল পরিমাণ সামগ্রী ক্রয়ে ছিলেন সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমানসহ হাফ ডজনের বেশি সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারি। ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিপুল পরিমাণ এসব পণ্য উচ্চ মূল্যে উক্ত দুটি প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বিগত ১৭-১৮ অর্থ বছরে কালিগঞ্জের নলতা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজী (আইএইচটি) ও মেডিক্যাল এ্যাসিসট্যান্ড ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) নামক দুটি প্রতিষ্ঠানে এসব সামগ্রী ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ আসে। বরাদ্দের বিপরিতে বিগত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি আইএইচটির সামগ্রী ক্রয়ের জন্য দৈনিক কালের কণ্ঠ ও ডেইলি সান পত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। একই সাথে একই দিনে দৈনিক আমার সংবাদ ও নিউজ টুডে পত্রিকায় ম্যাটস’র জন্য এসব সামগ্রী ক্রয়ের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। পরে দরপত্রগুলো মূল্যায়নের জন্য গত বছরের ৪ এপ্রিল দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভায় ম্যাটস ও আইএইচটির দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান, কমিটির সদস্য ডা. আকছেদুর রহমান, ডা. মো. আব্দুল লতিফ, শেখ আব্দুল আলিম, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রহমান, আরএমও কালিগঞ্জ ডা. শেখ তৈয়েবুর রহমান ও দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মেহেদি হাসান আলোচনার মাধ্যমে ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এসব মালামাল সরবরাহের জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন।

দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে, উত্তরা ঢাকার মেসার্স বেনিভোলেন্ট এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্তাধিকারি শাহিনুর রহমান, শ্যামলী ঢাকার নলতা শরিফ সার্জিক্যাল এর স্বত্তাধিকারি তরিকুল ইসলাম ও ঢাকার পুরানা পল্টনের মেসার্স ইউনিভার্সাল ট্রেড কর্পোরেশনের স্বত্তাধিকারী আসাদুর রহমান।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মেসার্স বেনিভোলেন্ট এন্টারপ্রাইজ ৪ কোটি ৪৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭২০ টাকার খেলার সামগ্রী ও আসবাবপত্র সরবরাহ করেছেন। এরমধ্যে নলতা ম্যাটস এ ২ কোটি ২৪ লাখ ৯৯ হাজার ৮১০ টাকার এবং আইএইচটিতে ২ কোটি ২৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯১০ টাকার আসবাবপত্র ও খেলার সামগ্রী সরবরাহ করেন। তবে মোট টাকার মধ্যে ৭৬ লাখ ৫১ হাজার ৬৬০ টাকার ট্যাক্স ও ভ্যাট প্রদান করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি নীট বিল পেয়েছেন ৩ কোটি ৭৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬০ টাকা।

একইভাবে নলতা শরিফ সার্জিক্যাল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারি তরিকুল ইসলাম মোট ৪৯ লাখ ৯৭ হাজার ২৫ টাকার বইপত্র সরবরাহ করেছেন। এরমধ্যে ম্যাটস এ ২৪ লাখ ৯৮ হাজার ৯৯৩ টাকার এবং আইএইচটিতে ২৪ লাখ ৯৮ হাজার ৩২ টাকার বইপত্র রয়েছে। ঠিকাদারি এই প্রতিষ্ঠানটি ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৭৩৪ টাকা সরকারকে ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রদান করেন।

এছাড়া ঢাকার পুরানা পল্টনের মেসার্স ইউনিভার্সাল ট্রেড কর্পোরেশন কালিগঞ্জের নলতা ম্যাটস ও আইএইচটিতে মোট ১৭ কোটি ৪৯ লাখ ২৪ হাজার ১৬৪ টাকার বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্য যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করেন। এরমধ্যে ম্যাটস এ ৭ কোটি ৭৪ লাখ ৫৮ হাজার ৬৫০ টাকার এবং আইএইচটিতে ৯ কোটি ৭৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫১৪ টাকার স্বাস্থ্য যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য সামগ্রী রয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি সরকারকে ভ্যাট ও ট্যাক্স দিয়েছেন ২ কোটি ৯ লাখ ৯০ হাজার ৯০৫ টাকা।

এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি যে সমস্ত যন্ত্রাংশ সরবরাহ করেছেন তার মধ্যে রয়েছে ডুয়েল সেক্স টরস ২০পার্ট, চায়না, ১২টি করে প্রতিটির মূল্য ৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা করে মোট ৩৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। ডুয়েল সেক্স টলস্ উইথ ওপেন ব্যাক (২০ পার্ট) ১২টি করে প্রতিটির মূল্য ৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা করে মোট ৩৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। স্পাইনাল কড এন্ড স্পাইনাল নার্ভস চায়না ১২টি। প্রতিটির মুল্য ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা করে ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। ইউরিনারি ওরগান চায়না ১০টি, প্রতিটি ৪৮ হাজার ১০০ টাকা করে ৪লাখ ৮১ হাজার টাকা। ফিমেল পেলভিস চায়না ১০টি, প্রতিটির মুল্য ৪৮ হাজার ৮০০ টাকা করে মোট ৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। হিপ জয়েন্ট সেকশান ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা প্রতিটি। ৩ সেটের দাম পড়েছে ১লাখ ৩৩ হাজার ২০০ টাকা। ফুললি অটোমেটেড ক্লিনিক্যাল ক্যামেস্ট্রি এ্যানালাইজার, জার্মানী, একটি মূল্য ৭৪ লাখ টাকা। ট্রাইনোকুলার মাইক্রোস্কপ ইউএসএ ২টির মুল্য ৩৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। বাইনোকুলার এলইডি মাইক্রোস্কপ প্রতিটির মূল্য ২ লাখ ২২ হাজার টাকা করে ৫৩টির মূল্য ১ কোটি ১৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। এভাবেই ম্যাটসএ ১০৬ প্রকার ও আইএইচটিতে ১০৪ প্রকার মোট ২১০ প্রকারের বিভিন্ন স্বাস্থ্য যন্ত্রাংশ ও মেশিন ক্রয় করা হয়েছে ১৭ কোটি ৪৯ লাখ ২৪ হাজার ১৬৪ টাকায়। নলতা তথা কালিগঞ্জবাসী বিপুল পরিমান এসব কেনাকাটায় ধন্য হলেও প্রকৃত মূল্য নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দরে এসব পণ্য ক্রয় করার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে মেসার্স বেনিভোলেন্ট এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী শাহিনুর রহমান ম্যাটস ও আইএইচটিতে সরবরাহ করেছেন, খেলার জন্য ফুটবল ২০টি ১লাখ টাকা, ক্রিকেট ব্যাট ৫০টি সাড়ে ৭ লাখ টাকা, এছাড়াও রয়েছে ক্রিকেট বল, প্যাড, হেলমেড, গ্লোবস, ক্রিকেট স্ট্যাম্পসহ অন্যান্য খেলার বিভিন্ন ধরণের ৫৮টি সামগ্রী। এই সামগ্রী সরবরাহ করে ম্যাটস ও আইএইচটি কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বিল নিয়েছেন ভ্যাট ও ট্যাক্স বাদে ৮৯ লাখ টাকা। বিপুল পরিমাণ এই টাকার খেলার সামগ্রী দিয়ে প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা খেলা ধুলা করবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানায়।

এছাড়াও ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির সরবরাহকৃত আসবাবপত্রের মধ্যে রয়েছে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ টেবিল প্রতিটির মূল্য ৮০ হাজার ৫০০ টাকা, হাফ সেক্রেটারি টেবিল ৪৯ হাজার ৩০০ টাকা, স্টীল আলমিরা ৪০ হাজার ৭০০ টাকা করে ১০টি, গ্লাস আলমিরা ৪০ হাজার ৭০০ টাকা করে ১০টি, স্টীল ফাইল কেবিনেট ২৮ হাজার ৫৫০ টাকা করে ১৫টি সর্বমোট ম্যাটস এ ৫২টি আসবাবপত্র ও ২৯টি খেলার সামগ্রী সরবরাহ করে বিল নিয়েছেন ২ কোটি ২৪ লাখ ৯৯ হাজার ৮১০ টাকা। পাশাপাশি এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আইএইচটি তে ৪৬টি আসবাবপত্র ও ২৯টি খেলার সামগ্রী সরবরাহ করে বিল নিয়েছেন ২ কোটি ২৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯১০ টাকা।

এসব আসবাবপত্র ও খেলার সামগ্রী বুঝে নিতে গঠিত সার্ভে কমিটির দায়িত্বে ছিলেন ডা: মেহেদী হাসান, ডা. তৈয়েবুর রহমান, ডা. আকছেদুর রহমান এবং ম্যাটস ও আইএইচটির ভারপ্রাপ্ত স্টোরকিপার মামুন অর রশিদ। গত বছরের ৪ জুন থেকে বিভিন্ন সময় এসব মালামাল তারা বুঝে নিয়েছেন।

এছাড়াও শ্যামলী ঢাকার নলতা শরিফ সার্জিক্যাল এর স্বত্বাধিকারি তরিকুল ইসলাম ম্যাটস এর আওতায় বই সরবরাহ করে বিল নিয়েছেন ২৪ লাখ ৯৮ হাজার ৯৯৩ টাকা। আপরদিকে আইএইচটির আওতায় বিভিন্ন প্রকারের বই সরবরাহ করে বিল নিয়েছেন ২৪ লাখ ৯৮ হাজার ৩২ টাকা মাত্র।

এদিকে ৫ হাজার টাকা মূল্যের বল প্রদানকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স বেনিভোলেন্ট এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারি শাহিনুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ছোট আইটেম অনেক সময় দরদামের তারতম্য হয়ে যায়। তবে এসব দাম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই নির্ধারণ করেছেন বলে দাবি করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এসব পণ্য সঠিক মূল্যে ও ভালমানের সরবরাহ করা হয়েছে।

নলতা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজী (আইএইচটি) ও মেডিক্যাল এ্যাসিসট্যান্ড ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) এ দুটি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্বে) থাকা সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল ইসলামের সাথে কথা বলে কেনাকাটায় কোন অনিয়ম হয়েছে কি না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বলতে পারবো না, কারণ আমার আমলে কোন কেনাকাটা হয়নি। এসময় তিনি আরও বলেন, ১৭-১৮ ও ১৮-১৯ অর্থ বছরে প্রতিষ্ঠান দুটির জন্য যেসব পণ্য কেনা কাটা হয়েছে তা সাবেক সিভিল সার্জন ডা: তৌহিদুর রহমানের আমলে এটুকুই জানি, আর কি হয়েছে তা তিনিই বলতে পারবেন।

সাবেক সিভিল সার্জন ও প্রতিষ্ঠান দুটির তৎকালীন অধ্যক্ষ ডা: তৌহিদুর রহমান জানান, এ অঞ্চলে এ ধরণের কোন প্রতিষ্ঠান না থাকায় খুলনা বাগেরহাটসহ অন্যান্য এলাকা থেকে সাতক্ষীরার ছেলে মেয়েরা পড়ে আসতো। আমি সিভিল সার্জন থাকাকালিন সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী আ ফ ম ডা. রুহুল হক স্যারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরায় ম্যাটস এবং আইএইচটির অনুমোদন হয়। শুধু সাতক্ষীরা নয়, দেশের আরও ৮টি স্থানে হলেও সেসব জায়গায় এখনও চালু করা সম্ভব না হলেও এখানে হয়েছে। ফলে বরাদ্দ অনুযায়ী নতুন প্রতিষ্ঠানের সব কিছুই কেনা লাগে। সাতক্ষীরার মানুষ হিসেবে আমি এসব জিনিসপত্র কেনার পর আমাকে ফাঁসানোর নানান পরিকল্পনা চলছে। ভাল করেছি না খারাপ করেছি সাতক্ষীরাবাসীই একদিন বলবে।

তিনি ক্ষোভের সাথে আরও বলেন, সদর হাসপাতালে আমার আগে কয়েকজন সিভিল সার্জন এসেছে আর গিয়েছে। তারা সাতক্ষীরার বাসিন্দা ছিলেন না বলে কোন কিছুই দেখেননি। আমি সাতক্ষীরার মানুষের জন্য কিছু করতে গিয়ে নানাভাবে হয়রানি হচ্ছি। বিশেষ করে চিকিৎসকরা বিরোধিতা করায় সমস্যাটা বেশি হয়েছে। কারণ হাসপাতালে সব কিছু চালু হলে কিছূ চিকিৎসকের ক্লিনিক ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। বিলাস বহুল ক্লিনিক থেকে শুধু কমিশন নয় আরও কত কিছু পান এসব চিকিৎসকরা তা সব কথা বলতে পারছি না। হাসপাতালে সব জিনিস থাকলে চিকিৎসকদের বেশি সময় ডিউটি করতে হয় আর না থাকলে ক্লিনিকে পাঠানো যায়, তাতে আলাদা ব্যবসাও হয়। তবে ম্যাটস ও আইএইচটির কেনা কাটায় কোন ধরণের অস্বচ্ছতা নাই দাবী করে বলেন তালিকা অনুযায়ী প্রতিটি জিনিস কেনা হয়েছে। কোন জিনিস কমও নাই, দুই নম্বরও নাই।

https://www.dailysangram.com/post/380691