২৪ জুন ২০১৯, সোমবার, ১০:৪৬

কুলাউড়ায় স্মরণকালের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা, নিহত ৭

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় স্মরণকালের বড় ট্রেন দুর্ঘটনা সাতজন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে শতাধিক। উদ্ধার কাজে বিজিবি নামানো হয়েছে। হাসপাতালে স্বজনদের ভিড় জমেছে।

সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে এ পর্যন্ত তিন নারীসহ অন্তত সাতজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। মৌলভীবাজারের জেলা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি খালে পড়ে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

সিলেট আখাউড়া রেলপথের শমশেরনগর স্টেশন সুত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা গামী রেল আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস বরমচাল স্টেশন অতিক্রম করে কুলাউড়া আসার পথে রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে পেছনের কয়েকটি যাত্রীবাহী বগি খালে পড়ে যায়। ঘটনার পর থেকে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত সাতজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন নারী, বাকি চারজন পুরুষ। লাশগুলো পুলিশের হেফাজতে আছে। রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

হাসপাতালে স্বজনরা নিহত এক নারীর লাশ শনাক্ত করেছেন। তিনি কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্ত গ্রামের বাসিন্দা বারি মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা পারভীন (৪৫)। রাত ২টা পর্যন্ত কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬০ জন। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মক আঘাত থাকায় ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

কয়েকজন যাত্রীকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, প্রথমে তারা বুঝতে পারেননি। অনেক সময় আটকে থাকার পর রেল থেকে নেমে দেখতে পান অনে লোকজন। দেখতে পান পেছনের দিকে কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে গেছে। তখন অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসও আসে। তারা তখন বুঝতে পারেন বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা আরো জানান, বিগত কয়েক দিন যাবত ঢাকার সাথে সরাসরি বাস যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ট্রেনে যাত্রীর সংখ্যা বেশি ছিল।
দুর্ঘটনায় আহতদের উদ্ধারকাজ অব্যাহত আছে। উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট। উদ্ধারকাজে স্থানীয় লোকজনও সহায়তা করছে।

কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বজনদের ভিড় রয়েছে। ওই সময়ের ট্রেন যাত্রীদের স্বজনরা মূল ফটক থেকে ভেতর পর্যন্ত রাস্তার দুই অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসা আহতদের দেখতে অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে পরিচিতদের খোঁজ করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের দেখতে আসেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. শাহজালালসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় তারা নিশ্চিত করেছেন, কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন ৪ জনের লাশ রয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ১ জন পুরুষ।

ট্রেন দুর্ঘটনার পর উদ্ধার কাজে বিজিবি নামানো হয়েছে। মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম এ কথা জানান।

http://www.dailynayadiganta.com/sylhet/419978