২০ জুন ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১১:১০

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি: ১৫০ স্টাফের সাড়ে ৪ কোটি টাকা লোপাট

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ট্রাস্টি বোর্ডের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্টাফদের পেনশন প্রথা চালুসহ বেশকিছু সুবিধা এনে দেয়ার কথা বলে ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত তিন দফায় ১৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী বিধিবহির্ভূতভাবে এই অর্থ পরিশোধ করেছেন।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দেয়ার কথা বলে এই অর্থ আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এর পেছনে যারা কলকাঠি নেড়েছেন, তাদের এরই মধ্যে অন্যত্র বদলি করে দেয়া হয়েছে। কথা অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় বেশকিছু দিন এ নিয়ে কানাঘুষা চলছিল।

একপর্যায়ে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসায় ৮ এপ্রিল বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উপমহাব্যবস্থাপক জাফর সাদিকের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

কথা হয় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির এমডি ফজলুর রহমানের সঙ্গে। তিনি এ নিয়ে বিস্তারিত কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করে শুধু বলেন, তদন্ত কমিটি কাজ করছে। পরে তিনি ফোন কেটে দেন। জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক খনি উপমহাব্যবস্থাপক জাফর সাদিকের সঙ্গে কথা হলে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে বলে মন্তব্য করেই কথা শেষ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তদন্ত কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেছেন, তাদের কাছ থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৯২ হাজার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৯৬ হাজার এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ লাখ ২০ হাজার করে টাকা চাঁদা হিসেবে নেয়া হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা।

এ ছাড়াও কোলমাইন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি সভায় কোম্পানিতে পেনশন প্রথা চালুর নামে ৩০ হাজার করে ১৫০ জনের কাছে এককালীন আরও ৪৫ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। সবমিলে ৫ কোটি ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এই টাকার কোনো হিসাবে পাওয়া যাচ্ছে না।

ক্ষতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন খনির ডেপুটি ম্যানেজার (মাইন অপারেশন) একরামুল হক। তিনি বলেছেন, আমার কাছে যে অর্থ নেয়া হয়েছে, তা আমি লিখিত আকারে দিয়েছি। ম্যানেজার (যান্ত্রিক) ফজলুল হক বলেন, তিন ধাপে ৯২ হাজার, ৯৬ হাজার এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ছাড়া আরও ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন পেনশন প্রথা চালুর নামে।

বড়পুকুরিয়া খনি দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার চার্জ শুনানি ১৮ জুলাই : যুগান্তর রিপোর্টার জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ শুনানির জন্য ১৮ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বুধবার কেরানীগঞ্জের কারা ভবনে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-২ এর বিচারক এএইচএম রুহুল ইমরান শুনানির এ দিন ধার্য করেন। এদিন মামলার চার্জ গঠনের জন্য ধার্য ছিল। খালেদা জিয়া হাসপাতালে থাকায় সময় আবেদন কর হয়।

আসামি পক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে আদালত পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।

সূত্র জানায়, কনসোর্টিয়াম অব চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তির মধ্য দিয়ে সরকারের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।

২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক সামছুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেন।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/189797