জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে অন্যের জমি দখল ও সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগে উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক কামাল হোসেনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ। রবিবার সকালে থানায় মামলা দায়েরের পর তাকে স্থানীয় মাজালিয়া বিলপাড়ার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের মাজালিয়া বিলপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আয়নাল হক ও প্রতিবেশী মৃত জনু শেখের ছেলে আলতাফ হোসেন এই দুই পরিবারের সদস্যদের মাঝে স্থানীয় হাসড়া মাজালিয়া মৌজার ৬১ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। ওই জমি বর্তমানে আলতাফ হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যদের ভোগ দখলে রয়েছে।
ডোয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক কামাল হোসেন জমির মালিকানা দাবিদার আয়নাল হকদের পক্ষ নিয়ে জমি দখল করে দেওয়ার উদ্দেশে গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলবল নিয়ে আলতাফ হোসেনদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট করে। এ সময় তারা দেশীয় ধারাল বিভিন্ন অস্ত্র উঁচিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনদের ভয়ভীতি দেখায় এবং মারধর করে। এতে আলতাফ হোসেনসহ অন্তত ১২ জন গুরুতর আহত হন।
এছাড়াও হামলাকারীরা নগদ দেড় লাখ টাকা লুট, শতাধিক ফলজ ও বনজ গাছ কর্তন, বেশকিছু কলাগাছ ও সবজি বাগান বিনষ্ট এবং একটি ছাপরা ঘর তুলে জমি দখল করে। হামলার সময় যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনকে বেশ বড়সড়ো একটি ধারাল চাপাতি অস্ত্র উঁচিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনদের ভয়ভীতি দেখান।
এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আলতাফ হোসেনের ভাই মো. শাকিলা জামান চাঁন বাদী হয়ে গতকাল রবিবার সকালে হামলার নেতৃত্বদানকারী যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনসহ ২১ জনকে আসামি করে সরিষাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ঈমান আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রধান আসামি যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে জামালপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তবে ঘটনার দিন হামলার সময় কামাল হোসেন ও তার সহযোগীদের হাতে থাকা চাপাতি ও অন্যান্য ধারাল দেশীয় অস্ত্রগুলো পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। এ ব্যাপারে ওই এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন মাজালিয়া বিলপাড়া এলাকার মো. আব্দুল মান্নানের ছেলে।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজেদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মাজালিয়া গ্রামে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা, জমি দখল ও বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। মামলাটির প্রধান আসামি কামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’