১২ মে ২০১৯, রবিবার, ১১:১৮

৯ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ১১৯২ কোটি ডলার

রপ্তানি আয় বাড়লেও বাণিজ্য ঘাটতি কমছে না। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১২.১০ শতাংশ। আর আমদানি খরচ বেড়েছে ৫.১৩ শতাংশ। তারপরও পণ্য বাণিজ্যে বাংলাদেশের সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯২ কোটি ৮০ লাখ (১১.৯৩ বিলিয়ন) ডলার। এই ঘাটতি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে কিছুটা কম হলেও অর্থনীতির জন্য অস্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতির পরিমাণ বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংক লেনদেন ভারসাম্যের তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ৪ হাজার ২৩৬ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। একই সময়ে রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৪৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ হিসাবে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯২ কোটি ৮০ লাখ (১১.৯৩ বিলিয়ন) ডলার।

২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩১৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ১ হাজার ৮২৫ কোটি ৮০ লাখ ডলারে বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে অর্থবছল শেষ হয়েছিল।

গত অর্থবছরে আমদানি ব্যয় ২৫.২৩ শতাংশ বৃদ্ধির বিপরীতে রপ্তানি আয় ৬.৪৩ শতাংশ বেড়েছিল। আদানির গতি কম থাকায় এবং রপ্তানি বাড়ায় সবাই আশা করেছিল এবার বাণিজ্য ঘাটতি বেশ খানিকটা কমবে। কিন্তু নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) তথ্যে তেমনটা দেখা যাচ্ছে না।

সেবা বাণিজ্যে ঘাটতি: ৯ মাসের হিসাবে পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি গত অর্থবছরের চেয়ে কম থাকলেও সেবা বাণিজ্যে ঘাটতি বেড়ে গেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে সেবা বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৬৮ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ২৫৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার ছিল। তবে সরকারের আর্থিক হিসাবে (ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট) উদ্বৃত্ত ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। জুলাই-মার্চ সময়ে এই উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪২০ কোটি ৯০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই উদ্বৃত্ত ছিল ৫৪৯ কোটি ১০ লাখ ডলার।

লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি: চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৬৪৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আর ৯৭৮ কোটি ডলারের বিশাল ঘাটতি নিয়ে ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষ করেছিল বাংলাদেশ। সাধারণভাবে কোনো দেশের নিয়মিত বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতি বোঝা যায় চলতি হিসাবের মাধ্যমে। আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য নিয়মিত আয়-ব্যয় এতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এখানে উদ্বৃত্ত হলে চলতি লেনদেনের জন্য দেশকে কোনো ঋণ করতে হয় না। আর ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে ঋণ নিতে হয়।

এফডিআই বেড়েছে: গত অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ২০৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বাংলাদেশে এসেছিল। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এসেছে ২৮৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এ হিসাবে এই ৯ মাসে এফডিআই বেড়েছে ৩৯.২১ শতাংশ। এই সময়ে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী ঋণ বাবদ দেশে এসেছে ৪৩১ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেশি।

http://mzamin.com/article.php?mzamin=172086