৯ মে ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১০:১৫

বিনিয়োগ বাড়াতে নীতিমালা শিথিল বাংলাদেশ ব্যাংকের

দেশী-বিদেশী উভয় ক্ষেত্রেই বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে। শুধু চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশী-বিদেশী মিলে মোট বিনিয়োগ প্রস্তাবনা কমেছে প্রায় সাড়ে ২৫ শতাংশ। গত বছরের প্রথম তিন মাসে দেশে মোট বিনিয়োগ প্রস্তাবনা ছিল ৩০ হাজার ৫২১ কোটি টাকার। চলতি বছরের একই সময়ে তা কমে নেমেছে ২২ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা। এমনি পরিস্থিতিতে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে নীতিমালা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে যেখানে শুধু বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন হয় এমন শাখায় (এডি) বিদেশী বিনিয়োগকারীরা স্থানীয় মুদ্রায় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারতেন। বিদেশী বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে এখন তফসিলি ব্যাংকগুলোর সব শাখায় বিদেশী বিনিয়োগকারীদের হিসাব খোলার সুযোগ দেয়া হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে এক সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নিবন্ধিত স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগের প্রস্তাবনার পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, বিদেশী ও স্থানীয় বিনিয়োগ মিলে সামগ্রিক বিনিয়োগ অস্বাভাবিক কমে গেছে। বিডার পরিসংখ্যান থেকে দেখা গেছে, বছরের প্রথম তিন মাসে দেশে স্থানীয় ও বিদেশী ৩২৮টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করেছিল। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪০৮টি। শুধু প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। আর বিনিয়োগের পরিমাণ কমেছে প্রায় সাড়ে ২৫ শতাংশ।

বিডার পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৮ সালের প্রথম তিন মাসের (জানুয়ারি-মার্চ) তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে স্থানীয় বিনিয়োগ প্রস্তাবনা কমেছে প্রায় সাড়ে ৪৬ শতাংশ। গত বছরের প্রথম তিন মাসে দেশে স্থানীয় পর্যায়ের নিবন্ধিত বিনিয়োগ প্রস্তাবনার পরিমাণ ছিল ২৬ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। সেখানে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে স্থানীয় পর্যায়ে শিল্প বিনিয়োগ প্রস্তাবনা কমে নেমেছে ১৪ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগে এডি শাখা ছাড়া বিদেশী বিনিয়োগকারীরা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারত না। এডি শাখায় হিসাব খুলতে হলে অনেক সময় অপেক্ষাকৃত দূরে অবস্থিত কোনো শাখায় হিসাব খুলতে হতো। এতে যানজটের নগরীতে একদিকে যেমন সময় ক্ষেপন হতো, অপরদিকে নগদ অর্থ লেনদেনেও ঝুঁকি দেখা দিত। এ কারণে অনেকেই ঝামেলা এড়াতে নতুন হিসাব খুলতেন না।

এ ঝামেলা এড়াতে ও বিদেশী বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে এখন সব শাখায় হিসাব খোলার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে এক সার্কুলার জারি করা হয়েছে। গতকালই তা বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা শিথিল করায় বিদেশী বিনিয়োগকারীদের স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেন আরো সহজ হবে। এতে তারা সহজেই হিসাব খুলতে পারবেন। এতে বিনিয়োগ আরো বাড়বে বলে তিনি মনে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/408693