৬ এপ্রিল ২০১৯, শনিবার, ১১:১৮

ইলিশের বাজারে আগুন

বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ সামনে রেখে রাজধানীর বাজারগুলোতে ইলিশের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী ইলিশের সরবরাহ কম। দামও বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। ফলে বাজারে ইলিশের মূল্য হয়েছে আকাশছোঁয়া। বাজারে এক কেজির কিছু বেশি ওজনের একটি ইলিশের দাম বিক্রেতারা আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা চাচ্ছেন। এক সপ্তাহ আগেও এই মানের ইলিশ দেড় হাজার টাকায় পাওয়া যেত। তাই সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে ইলিশ। এদিকে গরু, খাসি ও ব্রয়লার মুরগির দামও চড়া।

রাজধানীর কাওরানবাজার, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারগুলোতে বৈশাখকে কেন্দ্র করে ইলিশ মাছ ও মাংসের চাহিদা বেড়েছে। সরবরাহ বাড়ছে না। দাম আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি এ সময় জাটকা ধরা ঠেকাতে নদীতে অভিযান চালায় স্থানীয় প্রশাসন। ফলে দাম বেড়ে যায়। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছোট আকারের প্রতি কেজি ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের এক হালি ইলিশ ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা, ৮০০ গ্রামের প্রতি হালি ইলিশ ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতি হালি ইলিশ ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া গত সপ্তাহের মতো সব থেকে কম দামে বিক্রি হচ্ছে তেলাপিয়া মাছ, দাম ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি, রুই ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, টেংরা কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি, চিতল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি। কাওরান বাজারের মাছ বিক্রেতা নকিব বলেন, গত দুই দিনে দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। হিমাগারে কিছুদিন আগে রাখা হয়েছে, এমন বড় ইলিশের প্রতি কেজির দর দেড় হাজার টাকার মতো। একই মাছ হিমাগারের না হলে দর তিন হাজার টাকা। কাওরান বাজারে ইলিশ কিনতে আসা নাইম বলেন, দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে আমাদের মতো চাকরিজীবীদের আর কেনার সুযোগ নেই। সাধারণ মানুষের পক্ষে পাঙাশ, তেলাপিয়া ছাড়া অন্য মাছ কেনার উপায় নেই। বাজারে ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজির দর এখনো ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, যা কয়েক সপ্তাহ ধরে চড়া। দেশি মুরগির কেজি চাওয়া হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০ টাকা। গরুর মাংসও কেজিপ্রতি ৫০ টাকা বেড়ে ৫৫০ টাকায় উঠেছে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৮৮০ টাকা।

ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনপ্রতি ৫ টাকা কমে ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও হাঁসের ডিমের ডজন এখনো ১৫০ টাকা। আর দেশি মুরগির ডিমের দাম প্রতি ডজন ১৮০ টাকা। এদিকে তিন সপ্তাহ ধরে চড়া দামে বিক্রি হওযা সবজির দাম এখনো চড়াই রয়েছে। বরবটি গত সপ্তাহের মতো ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পটল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঢেঁড়স, কচুর লতি ও করলা। শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিস। আর ধুন্দুল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। বাজারে নতুন আসা সজনে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি।

সবজি ব্যবসায়ী শাহিন বলেন, এখন বাজারে যেসব সবজি বেশি পাওয়া যাচ্ছে তার বেশিরভাগই নতুন। শীতের সবজি হিসেবে পরিচিত কপি ফুরিয়ে গেছে। পাকা টমেটো শেষ হয়ে যাওয়ার পথে। এ কারণে এখন সবজির দাম কিছুটা বাড়তি। ॥

http://mzamin.com/article.php?mzamin=166903&cat=6