৩১ মার্চ ২০১৯, রবিবার, ৯:৩২

তদারকিতে মন নেই নকশা অনুমোদনে আগ্রহ রাজউকের

ভবন তদারকির চেয়ে নকশা অনুমোদনে আগ্রহী রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কারণ তদারকির ক্ষেত্রে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে যেতে হয় তাদের। আর এ কারণেই ভবন মনিটরিংয়ের চেয়ে নকশা অনুমোদন দিতে রাজউকের বিল্ডিং শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগ্রহ বেশি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নকশা অনুমোদনসহ সব কাজ দ্রুত করতে ২০১৩ সালে রাজউকের জনবলকাঠামো দ্বিগুণ করা হয়। পুরনো কাঠামোতে রাজউকের জনবল ছিল প্রায় এক হাজার। নতুন কাঠামোতে রাজউক দুই হাজার ৭০০ লোকের জনবল কাঠামো তৈরি করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত এক হাজার ৯৮০ জনের কাঠামো সাজিয়ে এটি অনুমোদন পায়। নতুন জনবল কাঠামোতে অথরাইজড অফিসার পদ রয়েছে ২৪টি। সহকারী অথরাইজড কর্মকর্তার পদ চারটির স্থলে ৪৮টি করা হয়।

আগে ভবন পরিদর্শক ছিলেন ৪০ জন। নতুন করে ২৮৮টি ভবন পরিদর্শকের পদ সৃষ্টি করা হয়। প্রধান পরিদর্শকের পদ আটটি থেকে বাড়িয়ে ৪৮টি করা হয়। নকশা অনুমোদন শাখার এত জনবল বাড়ানোর পরও ভবন তদারকিতে তাদের মন নেই। বরং নকশা অনুমোদনের আগে পরিদর্শন করতে আগ্রহী বেশি ইমারত পরিদর্শকরা। এদিকে নকশার অনুমোদন নিয়ে রাজউকে দীর্ঘদিনের নকশা বাণিজ্যেও যে অভিযোগ রয়েছে, তা এখনো বহাল রয়েছে। এর আগে রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালাল চক্রের ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ এবং গ্রাহককে ভোগান্তি থেকে রেহাই দিতে ২০১৫ সালের ২২শে ডিসেম্বর অনলাইনে বাড়ির নকশা অনুমোদন কার্যক্রমের উদ্বোধন করে রাজউক। এ পদ্ধতিতে রাজউকের ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি ফরম পূরণ করতে হয় গ্রাহককে।

পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে যুক্ত করতে হয় আবেদনের সঙ্গে। কোনো তথ্য ভুল থাকলে স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রাহককে মোবাইলে মেসেজ দিয়ে জানিয়ে দেয়ার কথা। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরুৎসাহের কারণে অনলাইনে নকশা অনুমোদনের কার্যক্রম গতি পায়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রাজউকে ভবনের নকশা অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্য চলছেই। এ কাজে একটি শক্তিশালী চক্রও রয়েছে। রাজউকের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালালরা মিলে গড়ে তুলেছে সেই চক্র। কেউ নকশার জন্য রাজউকে শরণাপন্ন হলে তারা আগের পদ্ধতিতেই আবেদন করতে উৎসাহিত করেন। কারণ এতে তাদের বাণিজ্যে সুবিধা হয়। একেকটি নকশা অনুমোদনে সর্বনিম্ন ৭০ হাজার থেকে শুরু করে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকারও বাণিজ্য ফাঁদে চক্রটি। কোনো ত্রুটি থাকলে ওই গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে। কিন্তু অনলাইনে সব ডকুমেন্ট থেকে যাওয়ার কারণে সেই সুযোগ কম। চক্রটি অনলাইন কার্যক্রমের ব্যাপারে নেতিবাচক প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছে।

http://mzamin.com/article.php?mzamin=166073&cat=2