বনানীতে এফআর টাওয়ারে আগুন
৩০ মার্চ ২০১৯, শনিবার, ১২:২০

নকশা অনুযায়ী নির্মিত হয়নি বনানীর এফআর টাওয়ার: দায়িত্ব পালন করেনি কেউ

১৮ তলার অনুমোদনে ২৩ তলা, অধিকাংশ ফ্লোরে ছিল না নির্গমন পথ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা * ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও ভবন কর্তৃপক্ষ, রাজউক ও ফায়ার সার্ভিস ছিল নির্বিকার * রাজউক এতদিন কী করেছে- আইজিপি * ২ সপ্তাহের মধ্যে সব বহুতল ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার চিত্র প্রকাশ করা হবে -রাজউক চেয়ারম্যান

রাজউক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নির্মিত হয়নি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বনানীর এফআর (ফারুক-রূপায়ন) টাওয়ার। ১৮ তলার অনুমোদন নিয়ে ভবনটি করা হয় ২৩ তলা। শুধু তাই নয়, ভবনটির অধিকাংশ ফ্লোরে ছিল না নির্গমন পথ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। আর যেসব ফ্লোরে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল দুর্ঘটনার সময় সেগুলোও কোনো কাজ করেনি।

এসব অনিয়ম দূর করতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) একবার ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তিন দফা সতর্কীকরণ নোটিশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ভবনটির মালিক এ বিষয়টি আমলে নেননি। এমনকি এর আগেও এ ভবনে দু’বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এছাড়া গত বছর ভূমিকম্পের সময় এফআর টাওয়ারটি কিছুটা হেলেও পড়েছে। অর্থাৎ পুরোপুরি ঝুঁকি নিয়েই ভবনের যাবতীয় কার্যক্রম চলছিল। এসব তথ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সবার জানা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তারা সবাই ছিলেন নির্বিকার।

বৃহস্পতিবার বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত ছয় তদন্ত কমিটির প্রাথমিক অনুসন্ধান, বিশেষজ্ঞ, ভবনে অবস্থিত বিভিন্ন অফিস এবং সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে উল্লিখিত সব তথ্য।

ভবন মালিক ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠানসহ যারাই দায়িত্বে অবহেলা করেছেন তাদের সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে সরকারসংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের প্রয়োজনীয় কাজ শেষ না হওয়ায় শুক্রবার গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোর প্রতিনিধিরা ভবনের ভেতরে কাজ করতে পারেনি। তবে নিজস্বভাবে বৈঠক করে তদন্তের প্রাথমিক কাজ বিশ্লেষণ করেছে কমিটিগুলো। আজ তদন্ত কমিটিগুলোর সদস্যরা ভবনের ভেতরে ঢুকে ঘটনার কারণ, ত্রুটি-বিচ্যুতি খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন।

এদিকে প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর বিভিন্ন তদন্ত কমিটির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অবৈধ ভবন নির্মাণের জন্য প্রথম দায়ী ভবন মালিক ও ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান। এ ভবনটির মালিক ইঞ্জিনিয়ার এসএমএইচআই ফারুক। আর নির্মাণ করেছে রূপায়ন গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান।

সরকারের পক্ষ থেকে দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা- রাজউক, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট দফতর ও কর্মকর্তারাও দায়ী। কেননা, তাদের সঠিক মনিটরিং থাকলে ১৮ তলার অনুমোদন নিয়ে নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে ২৩ তলা ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হতো না।

একই সঙ্গে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকলেও ফায়ার সার্ভিস বিভাগ তার সঠিক মনিটরিং করেনি। সেই সুযোগে ভবন মালিক ও ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে অতিরিক্ত পাঁচ তলা নির্মাণ করেছে এবং পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছাড়া ভবনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এ প্রসঙ্গে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার জন্য যারা দায়ী সবার বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

এ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেছেন, বনানী এফআর টাওয়ারের ভবনটি ১৮ তলা হওয়ার কথা থাকলেও করা হয়েছে ২৩ তলা। সেটাও গত ১৪ বছর আছে। তাহলে রাজউক এত?দিন ধরে কী করেছে?

এসব বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, বনানী এফআর টাওয়ারের অব্যবস্থাপনা প্রতিরোধে রাজউক থেকে বিভিন্ন সময়ে নোটিশ করা হয়েছে। এরপরও তারা শুধরে যাননি। এখন ওই ভবনের সবকিছু যাচাই-বাছাই করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ রিপোর্টের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, বনানী এফআর টাওয়ারের অনিয়মের সঙ্গে রাজউকের পক্ষ থেকে কেউ জড়িত থাকলেও তাদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। রাজউক ও মন্ত্রণালয়ের তদন্তে সেসবও বেরিয়ে আসবে। এরপর দায়ীদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে রাজধানীর সব বহুতল ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার চিত্র প্রকাশ করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এফআর টাওয়ার ভবনটিকে ১৮ তলা ইমারত নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয় ১৯৯৬ সালে। ২০০৫ সালে এসে রাজউককে একটা কপি দাখিল করে বলা হয় এটা ২৩ তলা হয়েছে। এ বিষয়ে পরে সরকারি তদন্তে বেরিয়ে আসে, যে কপি ভবন মালিক দাখিল করেছে, তার সমর্থনে রাজউকের রেকর্ডে কোথাও কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই।

ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৩ তলার যে নকশা ভবন কর্তৃপক্ষ দাখিল করেছে, তা সঠিক নয় এবং মূল অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে ভবনের অবৈধ অংশ নির্মাণ করা হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, তদন্ত কমিটি এ ভবনের প্ল্যান অনুমোদনের প্রক্রিয়ার ভেতরে কোনো নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে কিনা, অনুমোদিত প্ল্যানের বাইরে বির্ল্ডিং নির্মাণ হয়েছে কিনা, হয়ে থাকলেও এর সঙ্গে কারা কারা জড়িত, ডেভেলপার, ভবন মালিক বা রাজউকের কেউ জড়িত থাকলেও সেসব বিষয় তদন্ত কমিটিগুলোর প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসবে।

এ প্রসঙ্গে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ফয়জুর রহমান শুক্রবার দুপুরে যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা (শুক্রবার) সকালেই বৈঠক করে তদন্তের গাইডলাইন নির্ধারণ করেছি। বৈঠকের পর কমিটির সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা না করার কারণে আমরা কাজ করতে পারিনি। ফায়ার সার্ভিস ভবন হস্তান্তর করার পর আমরা তা পরিদর্শন করব।

তিনি আরও বলেন, আজ (শুক্রবার) বিকালে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলতে বিভিন্ন হাসপাতালে যাব। যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের কাছ থেকে ঘটনার বয়ান নেয়ার চেষ্টা করব, যতটুকু সম্ভব। এ ছাড়া ভবনটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, সিঁড়ি না থাকা, দুই ভবনের মধ্যে যে পরিমাণ ফাঁকা জায়গা রাখার কথা, তা ছিল কিনা- এসব বিষয় জানতে ভবনের মালিক, রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আজই চিঠি দেয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ওই চিঠিতে ভবনের নকশাসহ যাবতীয় তথ্য-প্রমাণাদি নিয়ে শনিবারের (আজ) মধ্যে তদন্ত কমিটির কাছে সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে। ভবনের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে ভবন নির্মাণের অনুমোদন নেয়া হয়েছিল। এসব কাগজপত্রও তলব করা হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ভবনটির ১৮ তলা পর্যন্ত নির্মাণের অনুমতি ছিল। তাহলে কীভাবে তা ২৩ তলা হল? কারা এই অনুমতি দিল। বিষয়গুলো নিয়ে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহি করতে হবে। এ ভবনের জন্য যে পরিমাণ অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কথা ছিল তা ভবনের মালিক নিয়েছিলেন কি না তা-ও জানতে চাওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেলসহ ভিকটিমরা যেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সেইসব হাসপাতাল পরিদর্শন করব। আজ (শনিবার) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন এবং আগামী ৩ এপ্রিল প্রতিবেদন জমা দেয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানান তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব ফয়জুর রহমান।

এ প্রসঙ্গে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য ও স্থাপত্য অধিদফতরের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির যুগান্তরকে বলেন, আজ (শুক্রবার) আমরা গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রীর সঙ্গে বনানীর এফআর টাওয়ারে গিয়েছিলাম। সে সময় আমরা ভবনের ভেতর ঢোকার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, পর্যাপ্ত আলোর অভাব ও ফায়ার সার্ভিসের কাজ শেষ না হওয়ায় সেভাবে ঘুরে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে রাজউকের পরিচালক (আইন) ও তদন্ত কমিটির প্রধান খন্দকার অলিউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, বনানী এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাজউকের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা শুক্রবার একটি বৈঠক করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের বাধার কারণে এফআর টাওয়ারে প্রবেশ করতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল (আজ) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করব। তিন কার্যদিবসের মধ্যে আমাদের প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

ভবন কর্তৃপক্ষকে নোটিশ : বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টি আগেই জেনেছিল ফায়ার সার্ভিস। এ ব্যাপারে তিন তিনবার ভবন কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে নোটিশও দেয়া হয়। ওই নোটিশে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করে ফায়ার সার্ভিস।

এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার রহমান যুগান্তরকে বলেন, ভবন পর্যবেক্ষণ করে ইতঃপূর্বে তিনবার নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু তারপরও ভবন কর্তৃপক্ষ সে বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

এফআর টাওয়ারের ম্যানেজার কামাল হোসেন যুগান্তরের কাছে দাবি করেন, ভবনটিতে অগ্নিনির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। নির্গমন পয়েন্ট রয়েছে, সেগুলো সবসময় খোলা থাকে। তবে ফায়ার এক্সটিংগুইশার থাকলেও আগুন লাগার পর সেগুলো খোলা হয়নি।

এফআর ভবনে অবস্থিত ডার্ট গ্রুপের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার জুলকার নাঈম যুগান্তরকে বলেন, গত বছর ভূমিকম্পের সময় এফআর টাওয়ার পার্শ্ববর্তী আহমেদ টাওয়ারের দিকে একটু হেলে পড়ে।

জানতে চাইলে জাতীয় অধ্যাপক ও প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় বহুতলা ভবনের অগ্নিনির্বাপণের জন্য সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়া আছে। সেগুলোর মধ্যে ফায়ার রেটিং, ফায়ার এক্সটিংগুইশার, ফায়ার সেপটিক ব্যবস্থা ও জলাধার রাখাসহ বেশকিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইমারত নির্মাণ বিধিমালার এসব নির্দেশনা মেনে চললে খুব সহজে অগ্নিকাণ্ড নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হবে। কিন্তু, দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর মনিটরিংয়ের অভাবে সেসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবার দায় রয়েছে।

এ বিষয়ে স্থপতি ইকবাল হাবিব যুগান্তরকে বলেন, রাজধানী ঢাকার বেশিরভাগ বহুতলা ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অগ্নিনির্বাপণের যথাযথ নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে রাজউক ও ফায়ার সার্ভিসের সমান ব্যর্থতা দায়ী।

তিনি আরও বলেন, রাজধানীকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য রাখতে হলে ভবনগুলোর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ প্রতিবছর পানি-বিদ্যুৎ ও গ্যাস সেবার সংযোগগুলো নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু, দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজউক, ফায়ার সার্ভিস বা অন্য সেবা সংস্থাগুলোর সেদিকে তেমন কোনো দৃষ্টি নেই। এ দায় তারা কোনো ভাবেই এড়াতে পারে না।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ মাজহারুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, রাজধানীর ৯৫ ভাগ ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা সঠিক নেই। ভবন নির্মাণের সময় ইমারত নির্মাণ বিধিমালার যেসব নির্দেশনা রয়েছে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, বহুতলা ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রধান দায়িত্ব রাজউকের। কিন্তু, প্রতিষ্ঠানটি নিজ দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস, ভবন মালিক, ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানেরও বড় দায় রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তারা মনে করছেন শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে এটা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। যেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে সেই অষ্টম তলায় রেস্টুরেন্ট ছিল প্রথমে বলা হলেও সেখানে কোনো রেস্টুরেন্ট নেই। ভবনের প্রতিটি ফ্লোরেই প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের অফিস। প্রতিটি ফ্লোরেই প্রচুর সংখ্যক কম্পিউটার ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম রয়েছে। এগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এই তিনটি ফ্লোর ছাড়া ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ফ্লোরেও আগুনের আঁচ লেগেছে। এই ফ্লোরগুলোতে ধোঁয়া ঢুকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে ফ্লোরগুলোর আসবাবপত্র ও সরঞ্জাম।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/160840