৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, সোমবার, ১২:০২

মহিলা পরিষদের তথ্য

জানুয়ারিতে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ২৯৮ ঘটনা

চলতি বছরের প্রথম মাসেই ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা ও নারী নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটেছে মোট ২৯৮টি। আর বিদায়ী ২০১৮ সালে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ৩৯১৮টি। যা খুবই উদ্বেগজনক। তাই দেশের চলমান ধর্ষণ আইনের পরিবর্তন ও আইনের মাধ্যমে ধর্ষকের দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম। তবে বিচারবহির্ভূত হত্যার পর কাউকে ধর্ষণ মামলার আসামি হিসেবে যেন প্রচার করা না হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে বলে জানান তিনি।

গতকাল জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের পরিবর্তে সরাসরি নির্বাচন প্রক্রিয়া চালু এবং অব্যাহত নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন, ধর্ষণের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা খানম বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের একটি ইতিবাচক দৃশ্য এখন বাংলাদেশে বিদ্যমান। আজকে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে নারীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে একটি বড় ভূমিকা রাখছে।

সেই ভূমিকার স্বীকৃতির প্রতিফলন হতে হবে রাষ্ট্র পরিচালনায় নারীর অংশগ্রহণের ভেতর দিয়ে এবং একটি শক্তিশালী, ভবিষ্যৎমুখী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে।

কিন্তু নির্বাচন ব্যবস্থায় অর্থ এবং পেশীশক্তির ব্যবহার, নারীর প্রতি সমাজের প্রথাগত দৃষ্টিভঙ্গি, নারী হিসেবে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা, বিদ্যমান সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইত্যাদির কারণে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে নারীদের অগ্রসর হওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে এই সরকারের যখন নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল সেখানে নির্বাচনী এলাকা পুনঃনির্ধারণ করে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করার মতো একটি সহায়ক পরিবেশ ছিল এবং তা করা হলে ২০১৮তে অনেক নারী সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারতেন।

কিন্তু তা এখনো কারোর দৃষ্টিগোচর হয়নি। তাই আমরা এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের কাছে আবারো বলতে চাই যে, এখনো সময় আছে, সংবিধান সংশোধন করে আগামীর জন্য সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের পরিবর্তে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য যাতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারীরা রাষ্ট্র পরিচালনায় জনশক্তি হিসেবে এগিয়ে আসতে পারে।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা তথ্য-উপাত্তের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, নতুন বছরের প্রথম মাসেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২৯৮টি। এর মধ্যে ধর্ষণ ৫২টি। আর গণধর্ষণ ২২টি। ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে ৫টি। একইভাবে ২০১৮ সালে ৩৯১৮টি নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬৯৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৮২ জন এবং ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে ৬৩। এ ছাড়া বাসা থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, পরিবহন সব জায়গায় নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। সংবাদ সম্মেলনে এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রেখা চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ, অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম প্রমুখ।

http://mzamin.com/article.php?mzamin=157896