৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, রবিবার, ১২:১২

রাজবাড়ী

পদ্মাসহ ৫ নদী ধু ধু বালুচর

উজানে পানি প্রত্যাহার, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের কারণে রাজবাড়ীতে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে প্রমত্তা পদ্মা এবং একসময়ের খরস্রোতা গড়াই, চন্দনা, হড়াই ও চত্রা নদী। এই পাঁচটি নদী নাব্যতা হারিয়ে ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। যদিও নদীগুলো বাঁচাতে ড্রেজিং বা খননকাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

পদ্মা নদীতে একসময় ইলিশের ছড়াছড়ি থাকলেও পানিশূন্যতার কারণে এখন ইলিশ তো দূরের কথা স্বাদু পানির মাছও কমে গেছে। বর্ষা মৌসুমে মাছ মিললেও শুকনা

মৌসুমে মাছের আকাল পড়ে যায়। রাজবাড়ী শহরের কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া প্রায় ৮৫ কিলোমিটার নদীর দশা করুণ। বড় লঞ্চ বা কার্গো এখন কম চলে। পাবনার সঙ্গে নদীপথে যোগাযোগের একমাত্র ফেরি সার্ভিস (ধাওয়াপাড়া-নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট) বন্ধ হওয়ার পথে। উন্মুক্ত নদীতে মাছ শিকার করতে না পেরে হাজার হাজার জেলে ও মৎস্য শিকারি পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে। একই পরিণতি দাঁড়িয়েছে জেলার গড়াই, চন্দনাসহ বিভিন্ন নদীর। এসব নদী মরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুপাশ দখল করে নিচ্ছে দখলবাজরা। প্রতিবছর বালু জমতে জমতে এখন পুরো গড়াই বিশাল বালুচরে পরিণত হয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের পরিবেশ এবং কৃষক ও জেলেদের জীবন-জীবিকায় নেমে এসেছে বিপর্যয়।

সরেজমিন দেখা গেছে, গড়াই ও চন্দনায় মাইলের পর মাইল জেগে উঠেছে বিশাল বালুচর। নদীতে নেই কোনো স্রোত, নেই গভীরতা। অনেক জায়গায় নদীগুলোর বুক দিয়ে চলছে বালু বোঝাই ট্রাক ও ট্রাক্টর। অনেক কৃষক আবার জেগে ওঠা চরে ইরি-বোরো ধান রোপণ করছে। নদীতে শুধু দেখা মেলেনি মাছ ধরার নৌকা ও জেলেদের জাল।

রাজবাড়ী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুরে সরকার গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। তবে বর্তমানে ওই প্রকল্পটির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, নদীগুলোর নাব্যতা ফেরাতে তাঁরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে পদ্মা, চন্দনা, হড়াই, চত্রা নদীসহ জেলার বিভিন্ন খালের নাব্যতা ফেরাতে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এতে নদীগুলো পুনরুজ্জীবিত হবে। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলের মৎস্য ও কৃষি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2019/02/03/733111