৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, রবিবার, ১২:০৪

এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু

ভুল প্রশ্নে উদ্বেগ

পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথিত প্রশ্ন * চট্টগ্রামে সাত কেন্দ্র সচিবকে শোকজ, কুমিল্লা বোর্ডে একজন প্রত্যাহার

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শনিবার শুরু হয়েছে। এদিন কোথাও থেকে প্রশ্নফাঁসের খবর পাওয়া যায়নি। তবে পরীক্ষা কেন্দ্র করে সারা দেশে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।

এর মধ্যে আছে অনিয়মিতদের প্রশ্নে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়া, কেন্দ্রে কম প্রশ্ন পাঠানোর কারণে ফটোকপিতে পরীক্ষা নেয়া, ট্রেজারিতে প্রশ্ন রেখে পাশের কেন্দ্র থেকে এনে পরীক্ষা গ্রহণ, বিলম্বে পরীক্ষা শুরু ইত্যাদি। এছাড়া পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথিত প্রশ্নপত্র দেখা যায়। ভুয়া প্রশ্ন বিক্রি করে প্রতারণার অভিযোগও আছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

প্রথমদিন এসএসসিতে বাংলা প্রথমপত্র, দাখিলে কোরআন মাজিদ এবং এসএসসি ভোকেশনালে বাংলা-২ বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা বোর্ডগুলোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে প্রথমদিন সারা দেশে ৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কৃত হয়েছে। ফরম পূরণের পরও প্রথমদিনের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল প্রায় ৫ হাজার ছাত্রছাত্রী।
এদিকে ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া এবং দেরিতে পরীক্ষা শুরুসহ কিছু ঘটনায় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। যদিও সংশ্লিষ্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন, এসব কারণে শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু এতে আশ্বস্ত হতে পারছেন না শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। তারা বলছেন, কর্তৃপক্ষের ভুলে ফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত তাদের টেনশনে থাকতে হবে।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, পরীক্ষা নিয়ে যে দু-চারটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো সম্পর্কে আমরা অবহিত। প্রত্যেকটি ঘটনা তদন্ত করে এর দায়দায়িত্ব নিরূপণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। প্রশ্নপত্র অনুযায়ীই তাদের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, বিদ্যমান পদক্ষেপের পর কারও পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নের ছবি তুলে আপলোড করা সম্ভব নয়। তবু পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যদি কেউ প্রশ্নপত্র তুলে দিয়ে থাকে, তাহলে সেই দুষ্কৃতকারী রক্ষা পাবে না। প্রযুক্তিগত অনুসন্ধানে অপরাধীকে ধরে আইনের আওতায় আনা হবে।

জানা গেছে, ঢাকা বোর্ডের বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ‘১০১৯ সালের সিলেবাস’ লেখা হয়েছে। অথচ এখন চলছে ২০১৯ সাল। এই বোর্ডেরই অধীন রাজধানীর মিরপুরের শহীদ পুলিশ স্মৃতি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে সৃজনশীল অংশের পরীক্ষা ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্রে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হয়। ওই কেন্দ্রের ১১৪ জন ছাত্রছাত্রী এই ঘটনার শিকার হয়েছে।

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার দুয়ারিয়া এজি মডেল একাডেমি কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরুর পৌনে এক ঘণ্টা পর পরীক্ষার্থীদের মাঝে রচনামূলক (সৃজনশীল) প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। ওই কেন্দ্রে ৫৭৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। কেন্দ্রের একাধিক পরীক্ষার্থী জানায়, শনিবার বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার জন্য বোর্ড থেকে উপজেলা প্রশাসনকে ৪নং সেটের (গাঁদা) রচনামূলক প্রশ্ন কেন্দ্রে বিতরণের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু প্রশ্নের প্যাকেটে ৪নং সেট না থাকায় বিপাকে পড়ে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে কেন্দ্রে পৌঁছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যরা।

পরে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে প্রায় ৪০ মিনিট পর তা বিতরণ করা হয়। এরই মধ্যে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা কেন্দ্রের মূল ফটকে জড়ো হন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবীন্দ্র চাকমা ও কেন্দ্র সচিব মো. আবু সেলিম ভূঁইয়া শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত সময় দেয়ার আশ্বাস দিয়ে অভিভাবকদের শান্ত করেন। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন কেন্দ্র সচিব মো. আবু সেলিম ভূঁইয়া। শেরপুরের শ্রীবরদীতে ৭৪ জন নিয়মিত পরীক্ষার্থীকে ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় উপজেলার মথুরানাথ বিনোদিনী পাইলট (এমএনবিপি) সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের কয়েকটি কক্ষে এমন ঘটনা ঘটে।

পরীক্ষার্থীরা জানায়, পরীক্ষার প্রায় এক ঘণ্টা পর তারা দেখতে পান, তাদের প্রশ্নপত্র ২০১৮ সালের। এতে বিপাকে পড়ে পরীক্ষার্থীরা। পরে কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র ও খাতা ফেরত নিয়ে ২০১৯ সালের প্রশ্নপত্র ফটোকপি করে প্রায় এক ঘণ্টা পর পরীক্ষার্থীদের হাতে দেয়া হয়। এজন্য পরীক্ষার্থীদের সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। এমএনবিপি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

জানা গেছে, একই পরিস্থিতির শিকার হয়েছে উপজেলার টেংগড়পাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা। ওই কেন্দ্রে অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থীর হাতে দেয়া হয়েছিল ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল খায়ের ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হয়তো ভুলবশত এসব প্রশপত্র ২০১৯ সালের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের প্যাকেটে ভরা হয়েছিল।

যুগান্তর প্রতিনিধিদের তথ্য অনুযায়ী, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, জামালপুর, মাদারীপুরের কালকিনি, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ, মানিকগঞ্জ, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর, মুন্সীগঞ্জ, চট্টগ্রামে নগরের বিভিন্ন স্কুলসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি প্রশ্নে নিয়মিতদের পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম ব্যুরো থেকে প্রতিনিধি জানান, এ ঘটনায় চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীন সাত কেন্দ্রের সচিবকে শোকজ করা হয়েছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক যুগান্তরকে বলেন, পরীক্ষা সামনে রেখে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। তবে সেগুলো বড় কিছু নয়। প্রতিবছরই আগের বছরের বা পুরনো সিলেবাসের পরীক্ষার্থী থাকে। সেগুলো একই সঙ্গে পাঠানো হয়। এখন প্যাকেটিং করার সময় নতুন সিলেবাসের প্রশ্নের সঙ্গে পুরনো সিলেবাসের প্রশ্ন চলে যেতে পারে। কিন্তু এ ধরনের ভুল আমরা গ্রহণযোগ্য বলে মনে করি না। বিষয়টি আমরা আমলে নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, প্রশ্নের প্যাকেটকরণের ত্রুটির কারণে কোথাও প্রশ্ন কম গেছে। আবার বাংলা প্রশ্নে মুদ্রণত্রুটির কারণে ‘২০১৯’ এর পরিবর্তে ‘১০১৯’ লেখা দেখা গেছে। অধ্যাপক হক বলেন, পরীক্ষা যেখানে বিলম্বে শুরু হয়েছে, সেখানে পরীক্ষা আরম্ভের সময় থেকে ৩ ঘণ্টা সময়ই ছাত্রছাত্রীরা লিখতে পেরেছে। যেখানে আগের বছরের প্রশ্নে পরীক্ষা হয়েছে, সেখানে ছাত্রছাত্রীদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তাদের উত্তরপত্রের ওএমআর আলাদা করা হয়েছে। আলাদা মূল্যায়ন করা হবে।
এদিকে ঢাকা জেলার সাভারের একটি কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র কম হওয়ায় ফটোকপি করা প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। ময়মনসিংহ শহরের প্রায় সব কেন্দ্রে ১৫ মিনিট দেরি করে পরীক্ষা শুরু করা হয় বলে জানা গেছে। মূল পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ভেন্যু কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র দেরিতে যাওয়ার কারণে ওই সমস্যা তৈরি হয়। প্রশ্নপত্র দেয়ার সময় থেকে হিসাব করে নির্দিষ্ট ৩ ঘণ্টা পর পরীক্ষা শেষ করা হয়েছে জানা গেছে। আর দেবিদ্বার প্রতিনিধি জানান, থানার ট্রেজারিতে প্রশ্ন রেখে পাশের কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন এনে ফটোকপি করে ৪০ মিনিট পর পরীক্ষা শুরু করা হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্র সচিবকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এবারের পরীক্ষায় সারা দেশে ১৪ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩২ জনের অংশ নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু অংশ নেয় ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৮৫৪ জন। ৪ হাজার ৯৭৮ জন অনুপস্থিত ছিল। অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ১ হাজার ৩৯৬, চট্টগ্রামে ৪৭৭, রাজশাহীতে ৭৬২, বরিশালে ৩৯০, সিলেটে ৩১৮, দিনাজপুরে ৫৪১, কুমিল্লায় ৬৩১ এবং যশোর বোর্ডে ৪৬৩ জন। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ঢাকা বোর্ডে ১, বরিশালে ৩ এবং দিনাজপুরে ১ জনসহ সারা দেশে ৫ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথিত প্রশ্ন : পরীক্ষা ঘিরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েল পেপারের খামে কেন্দ্রে পাঠানো হয় প্রশ্ন। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাদে কারও মোবাইল ফোন ব্যবহারের অনুমতি নেই। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ক্যামেরা ও ইন্টারনেট সংযোগবিহীন মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কথা। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা পর ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথিত প্রশ্ন তুলে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘ঝংপ ধষষ নড়ধৎফ য়ঁবংঃরড়হ ড়ঁঃ ২০১৯-?১০০%’ নামের একটি পেজে শনিবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পোস্ট করা হয়। বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে সৃজনশীল প্রশ্নের ৩নং সেটের প্রশ্ন পোস্ট করা হয়। বহুনির্বাচনী প্রশ্নের সঙ্গে আসল প্রশ্নের মিল পাওয়া যায়নি। কিন্তু সৃজনশীল প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া গেছে।

ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস অথবা কোনো ধরনের প্রশ্ন ফেসবুকে পাওয়া যাচ্ছে- এমন খবর আমাদের কাছে নেই। এবারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে কোনোভাবেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া সম্ভব নয়।’

নানা কায়দায় প্রতারণা : রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখাকালে পরীক্ষাকেন্দ্রিক তিন ধরনের জালিয়াতি ও প্রতারণার খবর পাওয়া গেছে। আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি জানান, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর জাল করে তৈরি করা প্রবেশপত্রের মাধ্যমে এক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। উপজেলা পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস অভিযুক্ত ওই পরীক্ষার্থী ও তার অভিভাবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিষয়টি বরিশাল শিক্ষা বোডের্র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও জেলা প্রশাসককে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শনিবার চিঠি দিয়েছেন।

ওই ছাত্রের নাম সুব্রত দাস। টেষ্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ অনলাইনে সুব্রত’র ফরম পূরণ করতে পারেনি। কিন্তু সুব্রত নানা পর্যায়ের স্বাক্ষর জাল করে পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিয়ে আসে। কিশোরগঞ্জ ব্যুরো জানায়, ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গোলাম মেহেদী নামে এক কলেজছাত্রকে আটক করেছে র‌্যাব।

ওই যুবক মহিনন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম কিবরিয়ার ছেলে ও গুরুদয়াল সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার বিএনএম শোভন খানের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল শনিবার বিকাল ৩টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মহিনন্দ উচ্চ বিদ্যালয় এলাকা থেকে তাকে আটক করে।
এদিকে টেস্টে ফেল করা ৫১ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দেয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৮-১২ হাজার টাকা করে নিয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরের প্রজাপতি নামের এক স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই সুযোগ করে দিতে পারেনি। ফলে তারা পরীক্ষাও দিতে পারছে না। এ ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ প্রজাপতি স্কুলের পরিচালক শাকিল আহমেদসহ দু’জনকে আটক করেছে। রাতে পরীক্ষা : গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ধর্মীয় অনুশাসনের কারণে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় জেকেএমবি মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে খ্রিস্টীয় ধর্মের অনুসারী ৫১ জন পরীক্ষার্থী রাতে পরীক্ষা দিয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে।

জেকেএমবি মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ওই কেন্দ্রের সচিব নির্মল সাহা জানান, শনিবার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরা ধর্মীয় অনুশাসনের কারনে লেখাপড়া করে না। সে কারণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টা থেকে তাদের পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার কেন্দ্রে খ্রিস্টীয় ধর্মের অনুসারী ৫১ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি হাইস্কুল কেন্দ্রে শনিবার রাতে ৬৩ জন খ্রিস্টান শিক্ষার্থী বাংলা বিষয়ে পরীক্ষা দেয়। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তাদের পরীক্ষা নেয়া হয়।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/140476