১৭ জানুয়ারি ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:২১

শ্রমিক অসন্তোষে ১২ মামলায় গ্রেপ্তার ৪৪

মজুরি বৈষম্যের অভিযোগে শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ায় চলমান শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় ১২ মামলায় ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং তারা নাশকতার সঙ্গে জড়িত বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান।

গতকাল বিকালে আশুলিয়ার জামগড়া ফ্যান্টাসি কিংডমের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক একটি মহল শ্রমিক আন্দোলনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গার্মেন্ট শিল্পকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। তারা এসব আন্দোলনে ইন্ধন দিয়ে এটিকে আরো বড় এবং ধ্বংসাত্মক পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায়। ইতিমধ্যে তাদের শনাক্ত করেছি এবং অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তবে সাধারণ এবং নিরীহ শ্রমিকরা কোনো হয়রানির শিকার হবে না বলে নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার বলেন, দোষী এবং অপরাধীদেরকেই শুধু আইনের আওতায় আনা হবে। তাই সাধারণ শ্রমিকদের ভীতির কোনো কারণ নেই।

যারা কাজ করতে চান শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিবেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, দেশের বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে হওয়ায় সরকারবিরোধী চক্রের সদস্যরা সাভার-আশুলিয়াকে বেছে নেয়।

এই এলাকায় অসন্তোষ সৃষ্টি হলে তা দ্রুত সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। নাশকতাকারী অনেকের স্বার্থ জড়িত রয়েছে এখানে। তাই তাদের ফাঁদে পা দিয়ে নিষ্পাপ শ্রমিকরা এটাকে লুফে নেয়ায় জামগড়াকেন্দ্রিক আন্দোলন সহজেই দীর্ঘস্থায়ী হয়। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে শুধুমাত্র অপরাধীদেরই গ্রেপ্তার করা হবে। কোনো সাধারণ এবং নিরীহ শ্রমিক হয়রানি এবং ছাঁটাইয়ের শিকার হবে না বলে নিশ্চিত করেন এই কর্মকর্তা। গ্রেপ্তারকৃতদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে সবকিছু বলা যাবে না।

তবে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে নাশকতাকারী এবং ইন্ধনদাতাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। এ ছাড়া শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য শিল্প এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে আশুলিয়া শিল্প পুলিশের পরিচালক সানা শামিনুর রহমান বলেন, একটি গোষ্ঠী শ্রমিকদের আন্দোলনকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু সকলের সম্মিলিত চেষ্টার ফলে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। সরকার একটি কমিটির মাধ্যমে দ্রুত তাদের বেতন কাঠামো ঘোষণা করায় শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও একে স্বাগত জানিয়েছে এবং শ্রমিকরা কাজে ফিরে এসেছে। যে দু’-একটি কারখানায় এখনো সমস্যা আছে তা শিগগিরই ঠিক হয়ে যাবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান, আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ রেজাউল হক প্রমুখ।

http://mzamin.com/article.php?mzamin=155001