১২ জানুয়ারি ২০১৯, শনিবার, ১০:০৮

চালের বাজারে অস্থিরতা ॥ আটার দামও বেড়েছে

নতুন সরকারের শুরুতেই অস্থির হয়ে উঠছে চাল, আটা ও ময়দার বাজার। মান ভেদে চালের দাম ৫০ কেজির বস্তায় বেড়েছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। সে হিসাবে কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৪ টাকা এবং আটা ও ময়দার দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২ টাকা। এদিকে সবজির বাজারে বেশ কয়েকটি সবজির দাম বেড়েছে। বৃদ্ধি পাওয়া ব্রয়লার মুরগী ও ডিমের দাম কমেনি।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা যায়, খুচরা বাজারে ভালো মানের মিনিকেট চালের কেজি ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা, যা নির্বাচনের আগে ছিল ৫০ থেকে ৫২ টাকা। সে হিসাবে কেজিতে বেড়েছে ৪ থেকে ৬ টাকা।

মাঝারি মানের চালের দাম সব থেকে বেশি বেড়েছে । বর্তমানে মাঝারি মানের চাল বিআর-২৮ ও লতা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ৩৮ থেকে ৪২ টাকা। কেজিতে দাম বেড়েছে ৬ টাকা।

কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে মোটা চাল। যা নির্বাচনের আগে ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, মিল মালিকরা কারসাজি করে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তবে মিল মালিকদের একটি পক্ষ দাবি করছেন চালের দাম স্বাভাবিক অবস্থাতেই রয়েছে। তারা সরকারের নির্ধারিত দামেই চাল বিক্রি করছে। আর ব্যবসায়ীদের একপক্ষ বলছেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে দাম কমে স্বাভাবিক হবে।

কারণ বর্তমানে চালের কোনো ঘাটতি নেই। গম আমদানিকারক ও আটা বিপণনকারীদের দাবি, বিশ্ববাজারে গমের দাম বেশ বেড়েছে। সে অনুপাতে দেশে আটার দাম বাড়েনি।

পাইকারি রাইস স্টোরের ব্যবসায়ীরা বলেন, তিন-চারদিন থেকে চালের দাম বেড়েছে। প্রথমে রশিদ, এরপর একে একে সব কোম্পানি চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। নির্বাচনের আগে ৫০ কেজির এক বস্তা মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ২৬০০ থেকে ২৬৫০ টাকা। এখন সেই চাল বিক্রি করছি ২৭৫০ টাকায়। ১৯৫০ টাকা বিক্রি করা বিআর-২৮ চালের বস্তা এখন বিক্রি করছি ২২৫০ টাকায়।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, আটা ও ময়দার দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা করে বেড়েছে। আটা প্রতি দুই কেজির প্যাকেট ৭০ টাকা ও ময়দা ৯২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার খাদ্য অধিদপ্তরে খাদ্যমন্ত্রীর সাথে চাল ব্যবসায়ী সমিতি, আড়তদার ও অটো চাল মিল মালিকদের মতবিনিয়ময় সভায় সদ্য দায়িত্ব নেয়া খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বাজারে অযৌক্তিক কারণে অস্বাভাবিকভাবে চালের দাম বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। দেশ হিসেবে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি অনেক আগে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি চাল ও খাদ্য শস্য মজুদ আছে। তারপরও চালের দাম বাড়বে কেন?

এদিকে রাজধানীর অধিকাংশ কাঁচাবাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় গড়ে প্রতি কেজি সবজিতে ৫ টাকা থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দাম বেড়ে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়।

এছাড়া প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, পটল ৬০-৭০ টাকা, বরবটি ৭০-৮০ টাকা, সিম ৩০ টাকা। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, দেশি গাজর ৬০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, প্রতি পিস বাঁধাকপি আকারভেদে ৪০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ৩৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৪৫ টাকা, মুলা ৩০ টাকা কেজি।

ধনিয়াপাতা এক আটি ১০ টাকা, কাঁচাকলা হালি ৩০ টাকা, লাউ প্রতি পিস আকারভেদে ৬০ থেকে ৫০ টাকা, এছাড়া কচুর ছড়া ৪০ টাকা, লেবু হালি ২৫ টাকা।

এদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি ১৪৫ টাকা, কক মুরগি ২২০ টাকা কেজি, পাকিস্তানি মুরগি ২৪০ টাকা কেজি। গরু ও খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে সরকারের নির্ধারণ করা দামেই।

http://www.dailysangram.com/post/360721