৫ জানুয়ারি ২০১৯, শনিবার, ১১:৩৫

চাল আটা ও মুরগির দাম বৃদ্ধি

রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে চাল, আটা, মুরগি ও ডিমের দাম। সেই সাথে বেশকিছু নতুন সবিজর দামও বেড়েছে। আমদানি করা পেয়াঁজের দামও কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। চাল ও আটার দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ৩টাকা বেড়েছে। আর সবজির বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেশ কয়েকটি সবজির দাম বেড়েছে। তার মধ্যে মিষ্টি কুমড়া, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ও নতুন আলুর দাম বেশি। বরাবরের মতো মুরগি ও ডিমেও বাড়তি দাম। কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজির দাম অপরিবর্তিত। ফলে শীতে নতুন সবজিতে বাজার ভরপুর থাকলেও অস্বস্তি প্রকাশ করেন সাধারণ ক্রেতারা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে দেখা যায়, নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজিতে। তবে ৫ কেজির বেশি কিনলে কেজিতে মিলছে ২টা কম। মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০ টাকা ও ছোট পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৬০ টাকায়। এক কেজি ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গার ঝাঝটাও বেশি, ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। করলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে এসেছে হরেক রকম শিম। তবে মানিকগঞ্জ থেকে নিয়ে আসা শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। অন্য শিম বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। গত সপ্তাহের ন্যায় প্রকার ও মানভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৪০ টাকা। কাঁচা টমেটোর দাম কমে ২০ টাকা হলেও এখনো দামে বেশি পাকা টমেটো। ৩৫ টাকার নিচে মিলছে না পাকা টমেটো। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা পিস, বাধা কপি ২০ থেকে ২৫ টাকা, কাঁচা কলার হালি ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এর বাইরে কাঁচা পেপে ২০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, শসা ৪০ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শালগমে দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ১৫ থেকে ২০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। লাউ বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মুলা বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজিতে। পালন শাক বিক্রি হচ্ছে ৫-১৫ টাকায় আটি। লাল ও সবুজ শাক বিক্রি হচ্ছে ৫-১০ টাকা আটি। লাউশাক পাওয়া যাচ্ছে ২০-৩০ টাকায়।

এদিকে গত কয়েক দিনে সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। আটা ও ময়দার দামও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চালকলের মালিকদের দাবি, প্রতিবছর আমন মৌসুম এলে চালের দাম কিছুটা বাড়ে। সরকারিভাবে এখন ৩৬ টাকা কেজি দরে মোটা চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। তাঁরা বলছেন, চালের দাম এত দিন কম ছিল। ফলে কৃষকেরা ধানের ভালো দাম পাচ্ছিলেন না। গম আমদানিকারক ও আটা বিপণনকারীদের দাবি, বিশ্ববাজারে গমের দাম বেশ বেড়েছে। সে অনুপাতে দেশে আটার দাম বাড়েনি।

চালের আড়ত মালিকেরা জানান, প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চালের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। মোটা চালের পাইকারি দর উঠেছে কেজিপ্রতি ৩৫ টাকার আশপাশে। অন্যদিকে মাঝারি চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজিপ্রতি ৩৮ থেকে ৪২ টাকায়। এ ছাড়া ভালো মানের সরু মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৫২ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা দোকানে ভালো মানের সরু মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, মাঝারি বিভিন্ন চাল ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা এবং মোটা গুটি ও স্বর্ণা চাল ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। অবশ্য বাজারে এর বাইরে আরও কম দামের মোটা চাল রয়েছে, যা সব বাজারে পাওয়া যায় না। আবার মানও তেমন ভালো না।

এছাড়া পেঁয়াজসহ বেশিরভাগ সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আগের সপ্তাহের মতো পুরাতন দেশি পেঁয়াজের কেজি ২৫-৩০ টাকা এবং নতুন দেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।

কমেনি মুরগি ও ডিমের দাম। ডিম পাইকারি ৯৮ টাকা, খুচরা ১০০ থেকে ১০৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে। ডিম ব্যবসায়ীরা জানান, ডিমের চাহিদার তুলনায় সাপ্লাই কম, উৎপাদনও কিছুটা কমেছে। এক সপ্তাহ আগে এক ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকায়। এখন সেই ডিম ১০০ টাকা ডজন বিক্রি করতে হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগি বিক্রেতা স্বপন মিয়া বলেন, ব্রয়লার মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। তবে ৪/৫ কেজি হলে কেজিতে ৫ টাকা কম নেয়া হচ্ছে। দাম বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চাহিদা বেশি কিন্তু সে তুলনায় সাপ্লাই নেই।

মুরগি কিনতে এসে হতাশ হয়ে ডিম কিনতে গিয়েও বিরক্তি প্রকাশ করেন ক্রেতারা। ১১০ টাকার ব্রয়লারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৩০ টাকা। আর ডিমে ডজনেই ১৫ টাকা বেড়েছে।

http://www.dailysangram.com/post/359731