১৮ জানুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৯:৩৪

মাওলানা আবদুল খালেক (রাহি.)-এর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য, পঞ্চগড় জেলার সাবেক আমীর ও পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল খালেক রাজধানী ঢাকার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ জানুয়ারি রাত সোয়া ১০টায় ৬৫ বছর বয়সে ইন্তিকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন)। উল্লেখ্য, তিনি গত ১২ ডিসেম্বর এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি স্ত্রী, ২ পুত্র ও ১ কন্যাসহ বহু আত্মীয়-স্বজন রেখে গিয়েছেন।

মাওলানা আবদুল খালেকের জানাযা অনুষ্ঠিত

১৮ জানুয়ারি বিকাল ৩টায় পঞ্চগড় ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ডিগ্রী কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিমের ইমামতিতে মাওলানা আবদুল খালেক-এর প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযাপূর্ব বক্তব্যে মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, মাওলানা আব্দুল খালেক রাহিমাহুল্লাহ আন্দোলন সংগঠনে নিবেদিত ব্যক্তি ছিলেন। আজ তাঁর শূন্যতা সহজে পূরণ হবার নয়। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বন্দি না থাকলে জানাযায় উপস্থিত থাকতেন। ভারপ্রাপ্ত আমীরে জামায়াত ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের নির্দেশে সংগঠনের প্রতিনিধি হিসাবে আমি জানাযায় উপস্থিত হয়েছি। মাওলানা আব্দুল খালেক রাহিমাহুল্লাহ সারাজীবন যে হক্বের দাওয়াত দিয়েছেন, তিনি যে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমৃত্যু লড়াই করেছেন, আজ আমাদের সবাইকে তার রেখে যাওয়া সে কাজ আঞ্জাম দেয়ার শপথ নিতে হবে। আল্লাহ তার সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতুল ফিরদাউসে দাখিল করুন। তাঁরর পরিবার-পরিজনকে এ শোক সইবার শক্তি দান করুন।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও পঞ্চগড় জেলা আমীর প্রভাষক ইকবাল হোসাইন-এর সভাপতিত্বে ও জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক ও কামাত কাজলদিঘী ইউপি চেয়ারম্যান তোফায়েল প্রধান-এর সঞ্চালনায় জানাযা অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, নীলফামারী জেলা আমীর মো: আব্দুর রশিদ, ঠাকুরগাঁও জেলা আমীর মাওলানা আব্দুল হাকীম, দিনাজপুর উত্তর জেলা আমীর আনিসুর রহমান, রংপুর মহানগরী আমীর এটিএম আজম খান, রংপুর জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, গাইবান্ধা জেলা আমীর আবদুল করিম, কুড়িগ্রাম জেলা আমীর মাওলানা আব্দুল মতিন ফারুকী, লালমনিরহাট জেলা আমির অধ্যাপক আতাউর রহমান ও দিনাজপুর দক্ষিণ জেলার নায়েবে আমীর ড. মুহাদ্দিস এনামুল হক।

জানাজা নামাজে আরো বক্তব্য রাখেন পঞ্চগড় শহর আমীর মাওলানা জয়নাল আবেদীন, সদর আমীর শফিউল আলম, আটোয়ারী উপজেলা আমীর মাওলানা ইউনুস, বোদা উপজেলা আমীর মাওলানা আব্দুল বাসেত এবং দেবীগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত আমীর মাওলানা আব্দুল হালিম, অ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলাম ও হাড়িভাসা চেয়ারম্যান সাইয়্যেদ নূর আলম ও পঞ্চগড় জেলা সেক্রেটারি মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন। পঞ্চগড় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও চেম্বার অব কমার্স-এর সভাপতি হান্নান শেখ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমীরুল ইসলাম, জাগপা নেতা, বিনএপির সহ-সভাপতিসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের বড় ছেলে অ্যাডভোকেট সাদিকুল আজিম ও মরহুমের ভায়রা আবুল কালাম আজাদ। বিকাল সাড়ে ৪টায় তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের নিজ বাড়ি দগরবাড়িতে দ্বিতীয় জানাযা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মাওলানা আবদুল হালিম জেলা মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি ও মরহুমের শোকাহত স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে এবং উপস্থিত আত্মীয়-স্বজনদের সাথে মত বিনিময় করেন ও তাদেরকে সবর অবলম্বন করে পথ চলার পরামর্শ দেন।

শোকবাণী

মাওলানা আবদুল খালেকের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ১৮ জানুয়ারি এক শোকবাণী প্রদান করেছেন।

শোকবাণীতে তিনি বলেন, মাওলানা আবদুল খালেকের ইন্তিকালে আমরা ইসলামী আন্দোলনের একজন নিবেদিত প্রাণ রাহবারকে হারালাম এবং পঞ্চগড়বাসী একজন অভিভাবককে হারাল। তিনি দীর্ঘ ২৬ বছর পঞ্চগড় জেলা জামায়াতের আমীর হিসেবে পঞ্চগড় জেলাকে ইসলামী আন্দোলনের দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি পঞ্চগড় সদর উপজেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে সাধারণ মানুষের সেবায় অনন্য ভূমিকা পালন করে গিয়েছেন। তিনি আমৃত্যু সংগঠনের দায়িত্ব পালনে সক্রিয় ছিলেন। আমি তাঁর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি।

শোকবাণীতে তিনি আরো বলেন, তাঁকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ক্ষমা ও রহম করুন এবং তাঁর কবরকে প্রশস্ত করুন। তাঁর গুনাহখাতাগুলোকে ক্ষমা করে দিয়ে নেকিতে পরিণত করুন। কবর থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রত্যেকটি মঞ্জিলকে তাঁর জন্য সহজ, আরামদায়ক ও কল্যাণময় করে দিন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন এবং তাঁর শোকাহত পরিবার-পরিজনদেরকে এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।