পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রের বরাত দিয়ে কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা ও মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে যে, গত ৪ঠা নভেম্বর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সব ক'টি রেঞ্জের ডিআইজি ও ৬৪ জেলার পুলিশ সুপারের কাছে “প্রয়োজনে গুলি করতে পিছপা হওয়া যাবে না, এর জন্য কারো অনুমতির প্রয়োজন নেই।” মর্মে একটি বিশেষ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। র্যাবের মহাপরিচালক জনাব বেনজির আহমেদ গত ৪ঠা নভেম্বর রাত ১১.৪৫ টায় বিজি প্রেসের সামনে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিজের ও অন্যের জীবন রক্ষার জন্য যে কোন মুর্হূতে গুলি করতে পারবে এ জন্য কোন নির্দেশনা প্রয়োজন নেই।” ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার জনাব আসাদুজ্জামান মিয়া গত ৪ঠা নভেম্বর ডিএমপির পুলিশ কমিশনার অফিসে উপ-পুলিশ কমিশনার ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারদের সাথে বৈঠককালে বলেন, “তল্লাশী চৌকিতে দায়িত্ব পালনকালে কোন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হলেই গুলি চালাতে পারবেন। এ জন্য কারো পূর্ব অনুমতির প্রয়োজন নেই।” পুলিশ সদর দপ্তরের বিশেষ নির্দেশনা এবং র্যাব ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ ধরনের বক্তব্যে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান আজ ৫ অক্টোবর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “এ ধরনের নির্দেশনার ফলে পুলিশ বাহিনী বেপরোয়া হয়ে যাবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এ বল্গাহীন নির্দেশের ফলে পুলিশদের আর জবাবদিহীতার ভয় থাকবে না। ফলে তাদের দ্বারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্বিচারে গুলি করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে হত্যা করার প্রবল আশংকা দেখা দিয়েছে। এভাবে দেশের পুলিশ বাহিনীকে নিরিহ জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে। যা কোন বিবেচনায়ই কারো জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনবেনা। এ ঘোষণা দেশের আইন, সংবিধান ও মানবাধিকারের পরিপন্থী।
সরকার গত ছয় বছর যাবত দেশের পুলিশ বাহিনীকে দেশের বিরোধী দলগুলোকে দমণ করার কাজে ব্যবহার করার কারণে কার্যত তারা জনগণের প্রতিপক্ষে পরিণত হয়েছে। ফলে এ বাহিনীর ভাবমর্যাদা দেশে-বিদেশে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
তাই দেশের সংবিধান, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে এবং পুলিশ বাহিনীকে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে গত ৪ঠা নভেম্বর পাঠানো বিশেষ নির্দেশনা প্রত্যাহার করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”