৩০ ডিসেম্বর ২০১৫, বুধবার, ২:৫৪

ব্যাপকভাবে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে সরকারী দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করার তীব্র নিন্দা

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে ব্যাপকভাবে ভোট কারচুপি, জালভোট প্রদানসহ নানা ধরনের অনিয়ম ও আইন-শৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রিজাইডিং অফিসার এবং সরকারী কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ব্যাপকভাবে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে সরকারী দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ৩০ ডিসেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পৌরসভার নির্বাচনে গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর ভোটার বিহীন ব্যালট ডাকাতির জাতীয় সংসদ নির্বাচন, উপজেলা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশনের নির্বাচনেরই পূনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন।
পৌরসভা নির্বাচনের তফসীল ঘোষণার পর থেকেই গোটা জাতি আশংকা করে আসছিল যে, বর্তমান সরকারের আমলে ও সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেশে কখনো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা সম্ভব নয়। অবশেষে সে আশংকাই সত্য প্রমাণিত হলো আজ ৩০ ডিসেম্বরের ব্যাপক কারচুপি, জাল ভোট, অনিয়ম আর ব্যালট ডাকাতির নির্বাচনের মাধ্যমে।
নির্বাচনের তফসীল ঘোষণার পর থেকেই সরকার দলীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনী আচরণ বিধি লক্সঘন করে সরকারী দলের প্রার্থীদের পক্ষে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালিয়েছে। সরকারী প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি। উল্টো বিরোধী দলের ও ¯^তন্ত্র প্রার্থীদের গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছে।
সরকারী প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন সরকারী দলের প্রার্থীদের অবৈধভাবে বিজয়ী করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। গত রাত থেকেই বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের সহযোগিতায় সরকারী দলের লোকেরা ব্যালট ডাকাতি করে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়েছে। সরকারী দলের লোকেরা ব্যাপকভাবে জাল ভোট দিয়েছে এবং বিরোধী দলের ও ¯^তন্ত্র প্রার্থীদের এবং তাদের পোলিং এজেন্টদের মারধর করে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। কোন কোন ভোট কেন্দ্র থেকে বিরোধীদলের নেতা-কর্মী ও ¯^তন্ত্র প্রার্থীদের এবং তাদের সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজকে নির্বাচন চলাকালে রাজশাহী পশ্চিম সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুল খালেক, সহকারী সেক্রেটারী জনাব মোঃ ওবায়দুল্লাহ, কুস্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলা জামায়াতের আমীর ও উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান জনাব আফজাল হোসাইনকে এবং গাইবান্ধা পৌরসভা জামায়াতের সেক্রেটারী জনাব ওবায়দুল্লাহকে ভোটকেন্দ্র থেকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজকে নির্বাচন চলাকালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে যুবদলের একজন নেতা নিহত হয়েছে। গাইবান্ধা পৌরসভার একটি ভোটকেন্দ্রে, সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জের ৪টি ভোটকেন্দ্রে, পাবনা জেলার সাঁথিয়া পৌরসভার ১০টি ভোটকেন্দ্রে, নোয়াখালী জেলার বসুরহাটের সকল ভোটকেন্দ্রে, চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ডের সকল ভোটকেন্দ্রে, নরসিংদী জেলার মনোহরদী পৌরসভার সকল ভোটকেন্দ্রে, কুমিল্লা জেলার বরুড়া পৌরসভার লতিফপুর ভোটকেন্দ্রে, চট্টগ্রামের রাউজানের ১৯টি ভোটকেন্দ্রে, চাঁদপুর জেলার মতলব পৌরসভার ভোটকেন্দ্রে, মাদারীপুর জেলার কালকিনি পৌরসভার রাজদি ও কাষ্টঘর ভোটকেন্দ্রে, ফেনী জেলার দাগনভূঁয়া পৌরসভার ৫টি ভোটকেন্দ্রে, যশোর পৌরসভার বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে, ল²ীপুরের রামগঞ্জ, বরিশাল জেলার উজিরপুর, গৌরনদীর পৌরসভার ১টি ভোটকেন্দ্রে, গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দপুর, চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, শরীয়তপুর পৌরসভার সকল ভোটকেন্দ্রে, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে, মানিকগঞ্জ পৌরসভার ১টি ভোটকেন্দ্রে, বগুড়ার ১টি ভোটকেন্দ্রে, রাজবাড়ি জেলার পাংশা পৌরসভার ৫টি ভোটকেন্দ্রে, মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা পৌরসভার ৪টি ভোটকেন্দ্রে, ঝিনেদা জেলার কোটচাঁদপুর পৌরসভার ১টি কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার ও আইন-শৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোট কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়েছে।
আজকে ৩০ ডিসেম্বর যে সব পৌরসভায় নির্বাচনের নামে ব্যাপক ভোট কারচুপি, জালভোট প্রদান ও কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি করা হয়েছে সে সব ভোট কেন্দ্রের নির্বাচন অবিলম্বে বাতিল ঘোষণা করে পুনরায় নির্বাচন দেয়ার জন্য আমি আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহŸান জানাচ্ছি।”