৬ জানুয়ারি ২০১৬, বুধবার, ২:৫২

৭ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা

সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর, সাবেক মন্ত্রী, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ ও ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং আগামীকাল ৭ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর জনাব মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আজ ০৬ জানুয়ারী নিম্নোক্ত যুক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেনঃ-

“মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী শুধু বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীরই নন, তিনি একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেমে দ্বীন, ইসলামী চিন্তাবিদ, একজন পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা। সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য এই সংগঠনের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে যে সব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও কাল্পনিক। যার প্রমাণ তার জন্মস্থান পাবনার একজন মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডারসহ ৩ জন বিশিষ্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা। তারা ¯^তঃপ্রণোদিত হয়ে ট্রাইব্যুনালে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন সেখানে তারা স্পষ্টভাবে বলেছেন, মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সাথে তার দূরতম কোন সম্পর্কও নেই। তারপরও মাওলানা নিজামীকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করায় দেশবাসী বিস্মিত, হতবাক ও গভীরভাবে মর্মাহত। মাওলানা নিজামী ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। দেশবাসী এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে মাওলানা নিজামী উচ্চ আদালতে রিভিউ আবেদন করবেন। রিভিউ আবেদনে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে মাওলানা নিজামী অবশ্যই বেকসুর খালাস পাবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। শুরু থেকেই সরকার এই বিচার কার্যক্রমকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চালায়।

২০১৩ সালে তদানীন্তন ¯^রাষ্ট্রমন্ত্রী মিশরে গিয়ে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও আব্দুল কাদের মোল্লার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করে বক্তব্য রাখেন। সরকারের মন্ত্রী ও দলীয় নেতাগণ নিজামী, মুজাহিদ ও সাঈদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে মর্মে দফায় দফায় ঘোষণা দেন। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ গঠিত হওয়ার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণজাগরণ মঞ্চের দাবি বিবেচনায় নিয়ে রায় দেয়ার জন্য বিচারপতিদের প্রতি আহŸান জানান। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের এ ধরনের বক্তব্যে বিচার কার্যক্রমের উপর সরকারের হস্তক্ষেপ স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়।

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার হীন উদ্দেশ্যেই সরকার দেশী-বিদেশী সকল মহল ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার আহবান উপেক্ষা করে পরিকল্পিতভাবে আবদুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে হত্যা করেছে।

মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ঠাণ্ডা মাথায় সরকারের নির্ধারিত ছকে হত্যা করে সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশকে এক ভয়াবহ সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চায়। সরকারের জুলুম, নির্যাতন ও মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আমরা আগামীকাল ৭ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপুর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি।

ঘোষিত কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখা এবং কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজ ও পেশাজীবীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তথা দেশের আপামর জনতার প্রতি আমরা উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।”

বিঃদ্রঃ এ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ী, হাসপাতাল, ঔষধের দোকান, ফায়ার সার্ভিস ও সংবাদপত্রের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।