ঝিনাইদহ জেলার গান্না সাংগঠনিক থানা শাখা ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি মোঃ জসীম উদ্দিনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করে গত ৩রা মার্চ দিবাগত রাতে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করার নির্মম ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ০৪ মার্চ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “ঝিনাইদহ জেলার গান্না সাংগঠনিক থানা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোঃ জসীম উদ্দিনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করে গত ৩রা মার্চ দিবাগত রাতে নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে হত্যা করার ঘটনার নিন্দা জানানোর কোন ভাষা নেই।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের গান্না সাংগঠনিক থানার সভাপতি মোঃ জসীমউদ্দিন একজন সৎ, মেধাবী ও সম্ভাবনাময় ছাত্র নেতা ছিল। তাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি করে হত্যা করে তার পিতা-মাতা এবং পরিবার-পরিজনদের স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছে। আজ তারা মোঃ জসীম উদ্দীনকে হারিয়ে সকলেই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। তাদের শান্ত্বনা জানানোর কোন ভাষা নেই। আমরাও মোঃ জসীম উদ্দিনের নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীরভাবে শোকাহত। তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছি এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
সরকার জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতা-কর্মীদের বেঁছে বেঁছে আটক করছে এবং বিনা বিচারে গুলি করে হত্যা করছে। উল্লেখ্য যে, গত ২৩ জানুয়ারী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুঠিদুর্গাপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও জামায়াত কর্মী জনাব আবু হুরাইরা মালিথাকে প্রকাশ্য দিবালোকে মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার ১ মাস ৬ দিন পর ২৯ ফেব্রুয়ারী তার লাশ পাওয়া যায়। গত ২রা মার্চ ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর জনাব নূর মোহাম্মদকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করে নিয়ে যাওয়ার পরে আইন-শৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে আটক করার কথা অস্বীকার করছে। তিনি এখন কোথায় কি অবস্থায় আছেন তা আমরা জানিনা। গত ৩রা মার্চ ডিবি পুলিশ জয়পুরহাট সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জয়পুরহাট শহর জামায়াতের আমীর জনাব হাসিবুল আলম লিটনকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে।
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের জুলুম-নির্যাতন এবং গ্রেফতার থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ধরনের মানবতা বিরোধী নৃশংসতার আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
বর্তমান সরকার ঝিনাইদহ জেলাকে এক মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে। এ জেলার সর্বত্রই মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের আটক করে নির্মমভাবে হত্যা করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমি দেশী-বিদেশী সকল মানবাধিকার সংস্থা ও দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
ঝিনাইদহ জেলার গান্না সাংগঠনিক থানা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোঃ জসীম উদ্দিনকে আটক করার পর গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে এ ঘটনার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং জয়পুরহাট সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জয়পুরহাট শহর জামায়াতের আমীর জনাব হাসিবুল আলম লিটনসহ সারা দেশে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের গ্রেফতারকৃত সকল নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”
